আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
229 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (16 points)
আসসালামু আলাইকুম,
এক ব্যাক্তি অপর একজনের থেকে বাড়ি নির্মাণ করবে মর্মে এক লক্ষ টাকা ঋন চায়। যিনি ঋণ দিবেন তিনি যে ব্যাক্তি ঋণ নিবে তার মায়ের অনুমতি চায়। যদি উক্ত ব্যাক্তির মা তার ছেলেকে ঋণ দিতে সায় বা মত দেন, তাহলে ঐ ব্যাক্তি ঋণ প্রদান করবেন। ঋণ গ্রহিতার মা সায় দিলে ঋণ দাতা ঐ ব্যাক্তিকে এক লক্ষ প্রদান করেন। তবে, কবে ঋণ পরিশোধ করা হবে এরকম কোন চুক্তি হয় নি। যেহেতু ঋণ গ্রহিতার মা মত দিয়েছে, সেহেতু ঋণদাতা ওরকম শক্ত চুক্তিকে গুরুত্বও দেন নি।

ঋণ এনে বাড়ি নির্মাণ করা হয় বটে অনেক বছর হয়ে গেলেও ঋণ পরিশোধ করার ব্যাপারে ঋণ গ্রহিতা কোন উদ্যোগ গ্রহণ করে নি। ঋণদাতা কয়েকবার ঋণগ্রহিতাকে এবং তার মাকে ঋণের বিষয়ে চাপ দেন। এ বিষয়ে কোন ধরনের সুরাহা হচ্ছিলো না দেখে, ঋণ গ্রহিতার মা (যিনি তার ছেলেকে ঋণ দিতে সায় বা মত দিয়েছিলেন) উক্ত এক লক্ষ টাকার সমমূল্যের জমি নিজের থেকে ঋণ দাতাকে তার সম্মতিতেই কয়েক বছর আগে দিয়ে দেন।
কিন্তু বর্তমানে ঋণ গ্রহিতার মা ঋণদাতাকে তার জমি ফিরিয়ে দিতে বলছেন, এবং ঋণ দাতাকে ঋণ গ্রহিতার কাছ থেকে তার দেয়া ঋণের টাকা নিতে বলছেন।

এখন প্রশ্ন হলোঃ ইসলামী শরিয়তের আলোকে ঋণ গ্রহিতার মা তার ছেলের ঋণের বিনিময়ে ঋনদাতাকে সম্পদ দিয়ে তা আবার ফিরিয়ে নেয়ার দাবী করতে পারেন কিনা?
আর যদি দাবী করেন, ঋণদাতা তা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য কিনা?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাবঃ- 
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো কাহারো সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যাতিত ব্যবহার করা জায়েজ হবেনা। 

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَ لَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا ﴿۲۹﴾ 
হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের সম্পত্তি অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না; কিন্তু তোমরা পরস্পর রাযী হয়ে ব্যবসা করা বৈধ এবং নিজেদেরকে হত্যা করো না; নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু।
(সুরা নিসা ২৯)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
عَنْ أَبِىْ حُرَّةَ الرَّقَّاشِىِّ عَنْ عَمِّه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «أَلَا لَا تَظْلِمُوا أَلَا لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ». رَوَاهُ الْبَيْهَقِىُّ فِىْ شُعَبِ الْإِيْمَانِ وَالدَّارَقُطْنِىِّ فِى الْمُجْتَبٰى

আবূ হুররাহ্ আর্ রক্কাশী (রহঃ) তাঁর চাচা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! কারো ওপর জুলুম করবে না। সাবধান! কারো মাল তার মনোতুষ্টি ছাড়া কারো জন্য হালাল নয়।
আহমাদ ২০৬৯৫, শু‘আবুল ঈমান ৫১০৫, ইরওয়া ১৪৫৯, সহীহ আল জামি‘ ৭৬৬২।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে, 
ঋণদাতা কয়েকবার ঋণগ্রহিতাকে এবং তার মাকে ঋণের বিষয়ে চাপ দেন। এ বিষয়ে কোন ধরনের সুরাহা হচ্ছিলো না দেখে, ঋণ গ্রহিতার মা (যিনি তার ছেলেকে ঋণ দিতে সায় বা মত দিয়েছিলেন) উক্ত এক লক্ষ টাকার সমমূল্যের জমি নিজের থেকে ঋণ দাতাকে তার সম্মতিতেই কয়েক বছর আগে দিয়ে দেন।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এক্ষেত্রে ঋণগ্রহিতার মা কি হিসেবে উক্ত জমি ঋন দাতাকে দিয়েছিলো?

ঋন পরিশোধ বাবদ দিয়েছিলো?
নাকি বন্ধক বা ঋন পরিশোধ পর্যন্ত ব্যবহারের জন্য দিয়েছিলো?

যদি বন্ধক বা ঋন পরিশোধ পর্যন্ত ব্যবহারের জন্য দিয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে এখন উক্ত জমি ফেরত দিয়ে ঋণের টাকা নিতে হবে।

আর যদি ঋণগ্রহিতার মা ঋন পরিশোধ বাবদ উক্ত জমু দিয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে এই জমির পূর্ণ মালিকানা এখন ঋণদাতার।

এখানে ঋণগ্রহিতার কথা বলার কোনো সুযোগ নেই।
তারা যদি দাবী করে,সেক্ষেত্রে ঋণদাতা তা ফিরিয়ে দিতে বাধ্য নয়।

★হ্যাঁ যদি ঋণদাতা নিজ থেকেই সন্তুষ্টি চিত্তে তা ফিরিয়ে দিয়ে টাকা নিতে চায়,তাহলে সেটি ইহসান আর দয়া দেখানো হবে।
এটি আবশ্যক নয়। এটি একান্তই তার ব্যাক্তিগত সিদ্ধান্তের উপর ডিপেন্ড করে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...