আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
574 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (63 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমার বয়স ৩০। ১০/১১ বছর বয়স থেকেই আমার স্বপ্নদোষ হওয়া শুরু হয়। ওই বয়স থেকেই না বুঝেই একাকী হস্তমৈথুন শুরু করি। কিন্তু এর জন্য অনুশুচনা হয়, এবং মনে করতাম এটা কেবল আমি করি, আর আমি পৃথিবীর নিকৃষ্টতম মানুষ। পরে বন্ধুদের মাধ্যমে জানতে পারি এটা অনেকেই করে কিন্তু এটা নিন্দনীয় এবং গুনাহের কাজ।

তাই এটা ছেড়ে দিতে চাইতাম, কিন্তু পরিবেশের কারনে পারতামনা। স্কুল কলেজে মেয়েদের সাথে পড়ালেখার দরুন খুবি আকর্ষন অনুভব করতাম আর এর শেষ হত হস্তমৈথুনের মাধ্যমে। বাবা মা দুজনই চাকরী করতেন। যার জন্য একাকী থাকতাম, ফলে এটা বেশী অনুভুত হত মনে করি আমি।
এই একাকী থাকা আর তীব্র আকর্ষনের ফলে, বাসায় আগত দূরসম্পর্কের আত্মীয়, বয়সে বেশ বড়ই হবে আমার থেকে, তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে যাই। আমার বয়স তখন ১৬/১৭ আর সে ২৬। সে বছর তিনেক ছিল আমাদের সাথে।
শুরু থেকেই খারাপ লাগত। বাদ দিতে চাইতাম। কিন্তু দিন শেষে মনের উপর শরীর প্রাধান্য বিস্তার করত।

এটা বাসায় জানা জানি হয় এবং বন্ধ হয়, কিন্তু হস্তমৈথুন বন্ধ হয় না। নামাজ, যিকির, সাওম পড়ালেখায় মনোযোগ এসবের মাধ্যমে ব্যস্ত রেখে আল্লাহর ভয় মাথায় রেখে অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারলেও একদম বন্ধ করতে পারি নি। আর ভার্সিটি তে মেয়েদের এড়িয়ে চললেও তীব্র আকর্ষনবোধ করতাম। লজ্জার মাথা খেয়ে আম্মুকে বিয়ের কথা বললে পরে তীব্র তিরষ্কার এর মুখে পড়ি।

এর মধ্যে বিদেশের উচ্চ শিক্ষার প্রস্তুতি চলে আর আমার বয়স ২৮। আমিও যথেষ্ঠ দ্বীনদারি মানার চেষ্ঠা করি। আর দোয়া করি আল্লাহর কাছে দ্বীনদার স্ত্রীর জন্য। এর মধ্যে একজনকে আমার পছন্দ হয় তার দ্বীনদারি দেখেই, কিন্তু যেহেতু আমার কিছু করা হয় না, আর বাসায় এর আগে বলে বকা খাই, তাই বাসায় বলি না।
আলহামদুলিল্লাহ, কিছুদিন পরে বিদেশে উচ্চশিক্ষা হয়। ভালো স্কলারশিপ, ভাল টাকা পাওয়া যাবে চাকরীর মতই।

এই ভরসায় পরে মেয়ের সাথে কথা বলি, মেয়ে তার ফেমেলির সাথে যোগাযোগ করে দেয়। আমি মেয়ের বাবা আর বড় ভাইয়ের সাথে কথা বলি একা যেয়ে। নিজের এবং ফেমেলির ব্যাপারে। উনারা আমার ফেমিলিকে নিয়ে আসতে বলেন।

পরে আমি আমার বাসায় জানালে , তারা আবার আমার উপর মানষিক অত্যাচার শুরু করেন, যা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার কথাও ভাবি, কিন্তু আখিরাতের কথা ভেবে পিছপা হই। না দেওয়ার একটাই কারন, খরচ বেড়ে যাবে। ইনকাম শুরু না হতেই খরচ। আমি পাশ করে চাকরী নিয়ে বছর খানেক কিছু টাকা জমাব, বাড়ী গাড়ি করে সেটেল নিজে হব, ফেমিলিকে করব তারপরে ভাববেন উনারা। সেই সময় আমার বয়স হয়ে যাবে ৩৬+। কিন্তু উনারা বলছেন এটা খুব একটা বেশি বয়স না।
পরে আমি বিদেশ চলে যাই। কিন্তু মেয়ের বাবা ভাই এর সাথে যোগাযোগ রাখি যে, আমি ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই আসব আমার ফেমিলিকে মেনেজ করে। উনারা এতে আস্বস্ত হোন না, হওয়ার কথাও না। আমি আমার নিজের কথা ভেবেই বিয়ে করে আসতে চেয়েছিলাম। বিদেশের উলংগপনা তে আমার টিকে থাকা খুবই মুশকিল হয়ে যায়, বারাবার বিপথে চলে যাচ্ছিলাম, আল্লাহ হেফাযত করে নিয়ে আসেন। এর মধ্যে ওই মেয়ের সাথেও অল্প বিস্তর কথা হত। না বলে থাকতে পারতাম না।
আবার ঠিক না সেটাও বুঝতাম। ওদিকে বাইরে খারাপ পরিবেশ, আবার নিজেকে সামলাতে না পারা আমি, আমার খুবই কষ্টে দিন পাত হতে থাকে। সারাদিন গাধার মত খাটতাম, সারা রাত কাজ এ ব্যস্ত রাখতে চাইতাম আর কাদতাম।

১ বছর পরে আমি দেশে আসি। এসে আবার বিয়ের জন্য চাপ দেই। কিন্তু বাবা মা মানবেই না। পরে একাই বিয়ে করে ফেলি ওই মেয়েকে। যেহেতু বাবা ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ রেখেছিলাম তাই কিছুটা সহজ হয় কাজটা। কিন্তু তারাও সহজে মানতে চাননি।
এর পরেই করোনা পরিস্থিতিতে আমার যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এবং ১ বছর যাবত এখনো দেশে। দেশে চাকরী খুজেও পাচ্ছি না। আমার বাবা মা কিছুটা মেনে নিয়েছে। আমার সাথে কথা বলে, আমার বউ এর সাথে খুব একটা ভাল ব্যবহার করে না। আর আমার শ্বশুর বাড়ীর কারো সাথেই কথা বলে না।
এখন উনাদের সেই মানষিক অত্যাচারে ভুগছি আবার। উনারা বেশ হাদীস ক্বোরআন জানেন। তাই ওই সব বলে মানষিক ভাবে আঘাত করছেন। এরকম বলেন যেঃ
১. বাবা মার মনে কষ্ট দিয়ে কেউ শান্তি পেতে পারে না। এই জন্য আজ আমার এই অবস্থা।
২. বাবা মার অমতের বিয়ে বাতিল
৩. বাবা মার মনে কষ্ট দিয়েছি তাই আমার বিদেশ যাওয়া বন্ধ, দেশেও চাকরী হচ্ছে না। ইত্যাদি ইত্যাদি.........

দুক্ষিত এত বড় প্রশ্ন আর বর্ননার জন্য। আমার মনে হল, সব এভাবে না বললে ঠিক বুঝাতে পারতাম না আমার প্রশ্ন আর সমস্যা। আর আমি বিয়েটা করেছি শুধুমাত্র আমার আখিরাতের কথা ভেবে, আর পাপ থেকে বাচতে। দুনিয়ার কথা ভাবলে বাবা মার কথা মানলেই হত, উনারা আমেরিকা, ইংল্যান্ড প্রবাসি মেয়ে বিয়ে দিবেন বলে নিয়্যত করে ছিলেন। আমি ৩৫+ হলে পরে দিবেন।
আমি কি আসলেই খুব বড় পাপ করেছি? আমার কি দুনিয়া আর আখিরাত সব শেষ? তাই যদি হয়, তাইলে এর সমাধান কি? উনাদের মন খুশি হবে কি করে, এই বউকে ছেড়ে দিলে? কারন হাতে পায়ে ধরে মাফ চেয়েছি বিয়ের পরে, তাতে উনাদের মন খুব একটা গলেছে বলে মনে হয় নি

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
পূর্বে অনেক ফাতাওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,মাতাপিতার সম্মতি ব্যতীত কখনো কোনো মুসলমান যুবক যুবতীর জন্য কোর্ট মেরেজ করা সমীচীন হবে না,মঙ্গলজনক হবে না।মাতাপিতাকে না জানিয়ে বালিগ ছেলে মেয়ের বিবাহ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।উনেক উলামায়ে কেরাম অভিভাবকহীন বিয়েকে বাতিল বলে মনে করেন।হানাফি মাযহাব মতে কু'ফু হিসেবে ছেলেটি মেয়ের সমকক্ষ বা বেশী মর্যাদার অধীকারী হলেই কেবল বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে।নতুবা মেয়ের অভিভাবকের অনুমতির উপর বিয়ে মওকুফ থাকবে।জানুন-৯৯৪, কুফু সম্পর্কে জানতে ৭৮০
চার মাযহাবের অবস্থান দলীল সহ বিস্তারিত জানুন-১৫২৪


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
হাদীসে বিয়ের জন্য দ্বীনদ্বার মহিলাকে খুজতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।যেমন,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : ( تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا ، وَلِحَسَبِهَا ، وَلِجَمَالِهَا ، وَلِدِينِهَا ، فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ) 
চারটি জিনিস দেখে মহিলাকে সাধারণত বিয়ে করা হয়,(১)সম্পদ(২)বংশ(৩)সুন্দর্য্য (৪)দ্বীনদারী।
কিন্তু তুমি দ্বীনদারীত্বকে অগ্রাধিকার দাও।
{যদি তা না করো তবে তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে(تَرِبَتْ يَدَاكَ এর অনেক ব্যাখার একটি ব্যাখা)}(সহীহ বুখারী-৪৮০২সহীহ মুসলিম-১৪৬৬)এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-১৮

আপনি বিয়ে করেছেন।সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।এ সিদ্ধান্তের জন্য আপনার কোনো গোনাহ হবে না।আপনার উপর কোনো বদ দু'আ পতিত হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...