আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
113 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (11 points)
জরুরি ভিত্তিতে উত্তর প্রত্যাশী।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের পরীক্ষা ছিল সামনে। স্বামী যদি হাস্যরসের ভঙ্গিমায় বলে, তুমি দেখো পরীক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করবা। তখন স্ত্রী বলে, আমি যদি রেজাল্ট খারাপ করি, আপনার পরীক্ষায় ডিসটার্ব করবো, এটা মজার ছলে বলে। তখন স্বামী বলে যে, তুমি যদি আমার পরীক্ষায় ডিসটার্ব কর তাহলে ডিভোর্স।

এরপর পরীক্ষার সময় স্ত্রীর পরীক্ষাগুলো খারাপ হয় নি, ভালো হয়েছে। তবে কোনো এক ঘটনায় স্ত্রীর মন খারাপ ছিল। কারণটা স্বামী জানতে চান। স্বামীকে বলতে গেলে তিনি রেগে যান কোনো কারণে এবং তাতে মাথা গরম হওয়ার সেদিনের পড়ায় একটু বিঘ্ন ঘটে। তিনি বলেন যে, তুমি কি চাইতেছ লাস্ট পরীক্ষায় আমার সাথে ঝামেলা করে ডিভোর্স এর ওটা এনসিওর করতে। (যেমনটা মজা করে বলেছিল স্বামী যে, ডিস্টার্ব করলে ডিভোর্স, তিনি নিজেও জানতে পারেন, মজা করে বলে ফেললেও হয়ে যায়, তাই জানান দিলেন স্ত্রীকে)

প্রশ্ন হলো, স্ত্রী তো ইচ্ছে করে গিয়ে ডিস্টার্ব করে নি। মন খারাপের কারণ ব্যাখ্যা করতে গেলে স্বামী রেগে গেছে। যেহেতু স্ত্রী বলেছিল আমার এক্সাম খারাপ হলে আপনাকে ডিস্টার্ব করবো। তখন স্বামী বলে পরীক্ষায় ডিস্টার্ব করলে ডিভোর্স। এখানে স্ত্রীর এক্সাম খারাপও হয় নি, যার কারণে সে ডিস্টার্ব করতে যাবে। আদতেও করতো না কখনো। স্বামীর খারাপ চাইবে না। তাহলে কী এখানে ডিভোর্স পতিত হয়েছে? এবং কী করণীয়?–

এখানে তো পূর্ণাঙ্গ শর্ত পাওয়া যায়নাই।

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


তালাক এটি খুবই মারাত্মক একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,   
তালাককে শর্তের সাথে সংযুক্ত করলে শর্ত পাওয়া গেলেই বক্তব্য অনুপাতে তালাক পতিত হয়ে যাবে।

ألفاظ الشرط إن … ومتی ومتی ما ففي ہٰذہٖ الألفاظ إذا وجد الشرط انحلت الیمین وانتہت؛ لأنہا لا تقتضي العموم والتکرار، فبوجود الفعل مرۃ تم الشرط وانحلت الیمین فلا یتحقق الحنث بعدہ۔ (الفتاویٰ الہندیۃ ۱؍۴۱۵) 
সারমর্মঃ
শর্তের কিছু বাক্য আছে,যখন শর্ত পাওয়া যাবে,কসম ভেঙ্গে যাবে এবং শেষ হয়ে যাবে।
সেই শর্ত অনুপাতে হুকুম ফিরে আসবেনা।
কেননা এটি বারংবার কে চায়না।  

وشرط الحنث في قولہ إن خرجت مثلاً فأنت طالق أو إن ضربت عبدک فعبدي حر لمرید الخروج والضرب فعلیہ فورًا؛ لأن قصدہ المنع عن ذٰلک الفعل عرفًا ومدار الأیمان علیہ، وہٰذہ تسمی یمین الفور۔ (درمختار، الأیمان / باب الیمین في الدخول والخروج والسکنیٰ، مطلب في یمین الفور ۵؍۵۵۳-۵۵۴ زکریا، ۳؍۷۶۱-۷۶۲ دار الفکر بیروت، وکذا في البحر الرائق / باب الیمین في الدخول ۴؍۳۱۵ کوئٹہ)
সারমর্মঃ
কেহ যদি বলে তুমি যদি বের হও,,তাহলে তুমি তালাক, অথবা তুমি যদি তোমার গোলামকে প্রহার করো,তাহলে আমার গোলাম আযাদ,তাহলে এটির বিধান তাৎক্ষনিক হবে।
কেননা তার উদ্দেশ্য ছিলো ঐ কাজ থেকে সেই সময়েই বিরত রাখা,( সারাজীবন এর জন্য নয়)।

আরো জানুনঃ- 

প্রশ্নে উল্লেখ রয়েছে,
স্বামী বলেছে যে, তুমি যদি আমার পরীক্ষায় ডিস্টার্ব কর, তাহলে ডিভোর্স।

এরপর উল্লেখ রয়েছে, 
কোনো এক ঘটনায় স্ত্রীর মন খারাপ ছিল। কারণটা স্বামী জানতে চান। স্বামীকে বলতে গেলে তিনি রেগে যান কোনো কারণে এবং তাতে মাথা গরম হওয়ার সেদিনের পড়ায় একটু বিঘ্নতা ঘটে। 

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,   
এক্ষেত্রে পরীক্ষার ডিস্টার্ব বলতে পরীক্ষার আগের পড়াশোনায় ডিস্টার্ব বুঝানো হয়েছে,সেই হিসেবে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী নিজে গিয়ে স্বামীকে ডিস্টার্ব করেনি। 
বরং স্বামী নিজেই এগিয়ে এসে স্ত্রীর মন খারাপের কারন জিজ্ঞাসা করে,আর স্ত্রীর উত্তরের প্রেক্ষিতে স্বামী রেগে যায়,এটিকে স্ত্রী ডিস্টার্ব করেছে,বলা হবেনা।
আর স্ত্রীর এমন নিয়তও নেই।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে শর্ত পাওয়া যায়নি,তাই তালাক হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...