আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
375 views
in ওয়াসওয়াসা by (26 points)
১. আমি অবিবাহিত ছেলে। এক আলেমের মুখে একদিন তালাক সংশ্লিষ্ট কথা শুনেছিলাম। তিনি বলেছিলেন এক ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে "ধা" শব্দ বলত বার বার। নোয়াখালীর ভাষায় "ধা" অর্থ "ভাগ" বা "ভেগে যা" বা "চলে যা" এমন ধরনের হবে হয়তো যতটা আলেমের কথা শুনে বুঝেছিলাম। হঠাৎ একদিন সেই কথা আমার মনে পড়ে। আমি সেই চিন্তাটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু সেইদিনই হঠাৎ আমার মাথায় তালাক সংশ্লিষ্ট চিন্তা ভাবনা মাথায় আসতে থাকে। আমি বসে কাজ করার সময় হঠাৎ কোনো কারণে মুখ থেকে "ধা" এই ধরনের শব্দ উচ্চারিত হয়। তখন আমার ভয় কাজ করতে শুরু করে। আমি আসলেই কি "ধা" শব্দ উচ্চারণ করেছি নাকি সেটা বোঝার জন্য আবার ইচ্ছা করে "ধা" ধরনের শব্দ উচ্চারণ করি। সে সময় আমার মাথায় তালাকের ওয়াসওয়াসা ছিল। আমি প্রথমে যখন "ধা" শব্দটি উচ্চারণ করেছিলাম তখন ইচ্ছা করে করিনি হয়তো। এমনিতেই কোনো কারণে হয়ে গেছে। কিন্তু পড়ে ইচ্ছা করে করি এটা বোঝার জন্য যে আমি কি আসলেই "ধা" শব্দটিই বলেছি কি না। আমি "ধা" শব্দটি কাউকে উদ্দেশ্য করে বলিনি এবং তালাকের কোনো নিয়তও ছিল না। উপরিউক্ত কাজের জন্য কি বিয়ের পর স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হতে পারে?

এবং এই ধরনের "ধা" শব্দ কিংবা "তালাক" শব্দ যদি কেউ বিয়ের পূর্বে সচেতন ভাবে হবু স্ত্রীকে লক্ষ্য করে বলে তাহলে কি বিয়ের পর তালাক পতিত হবে?

এই ধরনের প্রশ্ন লেখার সময়ও আমার মারাত্মক ওয়াসওয়াসার সৃষ্টি হয়। যেমন আমি যখন এই প্রশ্নের শেষে লিখেছি যে, "উপরিউক্ত কাজের জন্য কি বিয়ের পর স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হতে পারে?" এই বাক্যটি লেখার সময় আমি প্রথমে ভুলে "কি" শব্দটি বাদ দিয়ে এভাবে লিখেছিলাম লিখেছিলাম "উপরিউক্ত কাজের জন্য বিয়ের পর স্ত্রীর উপর তালাক পতিত হতে পারে?"- এর জন্যও মনে তালাকের ওয়াসওয়াসার সৃষ্টি হয়। তালাকের প্রশ্ন লেখার সময় বা প্রশ্ন মুখে বলার সময় ওয়াসওয়াসা আসলে কি তালাক পতিত হয় বিয়ের পর?

এই ধরনের প্রশ্ন ও উত্তর পড়ার সময় বা পড়ার পর যদি মুখ দিয়ে সম্মতিসূচক বাক্য যেমনঃ আচ্ছা, হ্যাঁ, ঠিকআছে, ওকে ইত্যাদি উচ্চারণ করা হয়। তাহলে কি বিয়ের পরে তালাক পতিত হয়?

২. কারোর সাথে তালাক সংশ্লিষ্ট কথা বলার সময় মুখে তালাক শব্দের উচ্চারণ করার ফলে সে সময় মনে তালাকের ওয়াসওয়াসা আসলে কি তালাক পতিত হয়?

৩. মুখে যদি বলা হয় "আমি তালাককে ঘৃণা করি কিন্তু তালাকের বিধিবিধান বিশ্বাস করি"। এর কারণে কি ঈমানের ক্ষতি হয়? এই কথা বলার সময়ও যদি মনের মধ্যে তালাকের চিন্তা আসে তাহলে কি বিয়ের পর তালাক পতিত হয়?

৪. কেউ মুখ দিয়ে যেকোনো কথা বলার বলার সময় মনে তালাকের চিন্তা আসলো অথবা কেউ সচেতন ভাবে মনে তালাকের ব্যাপারে চিন্তা করলো কিন্তু সেই কথা মুখে বললো না। এর ফলে কি বিয়ের পর তালাক পতিত হয়? বিয়ের আগে যদি মাথায় শর্তযুক্ত তালাকের চিন্তা মাথায় আসে কিন্তু মুখে না বলে তাহলে কি বিয়ের পর তালাক পতিত হয়?

৫. আমি বিশেষ করে ঈমান, তালাক ও মানুষের হক সম্পর্কিত ওয়াসওয়াসার ভুক্তভুগি। এছাড়াও আরো বিভিন্ন ওয়াসওয়াসা মনে মধ্যে জাগ্রত হয় প্রতিনিয়ত। এগুলো আমার মধ্যে অতি মাত্রার বিরক্ত সৃষ্টি করে। কি আমল করলে করলে কিংবা কিভাবে রুকাইয়া, ঝাড়ফুঁক ইত্যাদ করলে উপকৃত হবো একটু বলবেন?

৬. আমাকে আমার এক পরিচিত জন বিকাশে কিছু টাকা দেয় তার বিল পরিশোধ করার জন্য। সে আমার বিকাশে টাকা দেওয়ার পর বিকাশ থেকে আমাকে কিছু টাকা ক্যাশব্যাক দেওয়া হয় এবং বিল পরিশোধের পর কিছু রিওয়ার্ড পয়েন্টও বিকাশ থেকে দেওয়া হয় আমার বিকাশে। আমি কি সেই ক্যাশব্যাকের টাকা এবং রিওয়ার্ড পয়েন্ট নিজে খরচ করতে পারবো নিজের কাজে?

৭. আমি একজনকে আমার একটি জিনিস ব্যবহার করতে দিয়েছি। পরে একদিন সে আমাকে বললো যে আমার জিনিসটি সে রেখে দিয়ে নতুন একটি আমাকে কিনে দিবে। আমি ভেবেচিন্তে তাকে ম্যাসেজের মাধ্যমে তার কথায় সম্মতি জানাবো ভেবে ম্যাসেজ লিখে ম্যাসেজ সেন্ড না করেই আবার ম্যাসেজ কেটে দিই। অর্থাৎ আমি তার কথায় রাজি হতে গিয়েও পরে আর রাজি হয়নি। সেও জানে না যে, আমি রাজি হয়েছি কি না। আমি যে জিনিসটি তাকে দিয়েছিলাম সেই জিনিসটি কি এখন তার কাছ থেকে নিতে পারবো? সেই জিনিসটির মালিকানা কি আমার আছে? যেহেতু আমি একবার মন থেকে তার কথায় রাজি হতে চেয়েছিলাম কিন্তু পরে আবার মত পাল্টে ফেলি। তাকে আমি কিছুই জানায় নি। আমি ভেবেছিলাম আমি তার থেকে নতুন একটা কিনে নিই। পরে ভাবলাম, না থাক আমারটা আমারই থাক নতুন লাগবে না। ভেবেছিলাম তাকে দিয়ে দেব পরে মত পাল্টে ফেলি। এর কারণে কি সমস্যা হবে? সেটা কি আমি নিয়ে নিতে পারবো?

৮. রাগ কি শয়তানের পক্ষ থেকে আসে?

৯. কেউ কোনো উপায়ে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জন করলো। যেমন বই পড়ে, ভিডিও দেখে ইত্যাদি। কিন্তু সেই বই ও ভিডিও কোর্স হারাম টাকাই কেনা। এখন যদি সে তার সেই জ্ঞান ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে কোনো কাজ করে অর্থ সম্পদ উপার্জন করে, তাহলে কি সেই উপার্জন হারাম হয়ে যাবে?

১০. "আমানতুবিল্লাহি ওয়া রুসুলিহি" অর্থ কি? - এখানে "রুসুলিহি" শব্দটিকে কি "রসুলিহি" বলা যাবে?

1 Answer

0 votes
by (566,790 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
প্রশ্নের বিবরণ মতে কোনো সমস্যা হবেনা 

তালাকের প্রশ্ন লেখার সময় বা প্রশ্ন মুখে বলার সময় ওয়াসওয়াসা আসলে বিয়ের পর তালাক পতিত হয়না।

(০২)
কাহারো সাথে তালাক সংশ্লিষ্ট কথা বলার সময় মুখে তালাক শব্দের উচ্চারণ করার ফলে সে সময় মনে তালাকের ওয়াসওয়াসা আসলে তালাক পতিত হয়না।

(০৩)
তালাক এটি খুবই জঘন্য একটি শব্দ। নিকৃষ্ট হালাল বলা হয়েছে হাদীসে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا كَثِيرُ بْنُ عُبَيْدٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ خَالِدٍ، عَنْ مُعَرِّفِ بْنِ وَاصِلٍ، عَنْ مُحَارِبِ بْنِ دِثَارٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَبْغَضُ الْحَلاَلِ إِلَى اللَّهِ تَعَالَى الطَّلاَقُ " .

কাসীর  ইবন  উবায়দ .......... ইবন  উমার  (রাঃ)  নবী  করীম  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  হতে  বর্ণনা  করেছেন যে,  আল্লাহ্  তা‘আলার  নিকট  নিকৃষ্টতম  হালাল বস্তু  হল  তালাক।

(আবূ দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩।) 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মুখে যদি বলা হয় "আমি তালাককে ঘৃণা করি কিন্তু তালাকের বিধিবিধান বিশ্বাস করি"। এর কারণে ঈমানের ক্ষতি হয়না।

এই কথা বলার সময়ও যদি মনের মধ্যে তালাকের চিন্তা আসে, তাহলে বিয়ের পর তালাক পতিত হয়না।

(০৪)
কেউ মুখ দিয়ে যেকোনো কথা বলার বলার সময় মনে তালাকের চিন্তা আসলো অথবা কেউ সচেতন ভাবে মনে তালাকের ব্যাপারে চিন্তা করলো কিন্তু সেই কথা মুখে বললো না। 

এর ফলে  বিয়ের পর তালাক পতিত হয়না। 

বিয়ের আগে যদি মাথায় শর্তযুক্ত তালাকের চিন্তা মাথায় আসে কিন্তু মুখে না বলে তাহলে বিয়ের পর তালাক পতিত হয়না।

(০৫)
আপনি নিম্নোক্ত লিংকে দেয়া ওয়াসওয়াসা থেকে মুক্তির আমল গুলি নিয়িমিত করবেন।
,

(০৬)
হ্যাঁ, আপনি সেই ক্যাশব্যাকের টাকা এবং রিওয়ার্ড পয়েন্ট নিজে খরচ করতে পারবেন নিজের কাজে।

(০৭)
আপনি যে জিনিসটি তাকে দিয়েছিলেন, সেই জিনিসটি এখন তার কাছ থেকে নিতে পারবেন।

আপনি যেসব ভেবেছেন,এর দরুন কোনো সমস্যা হবেনা।
আপনি নিয়ে নিতে পারবেন।

(০৮)
হ্যাঁ। 

(০৯)
এখন যদি সে তার সেই জ্ঞান ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে কোনো হালাল কাজ করে অর্থ সম্পদ উপার্জন করে, তাহলে সেই উপার্জন হারাম হয়ে যাবেনা।

(১০)
"আমানতুবিল্লাহি ওয়া রুসুলিহি" অর্থঃ- 
আমি আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি ঈমান আনলাম।

- এখানে "রুসুলিহি" শব্দটিকে "রসুলিহি" বলা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
৫ নং উত্তরের লিংক টাতে কিছুই দেখায় না।
by (566,790 points)
এখন চেক করুন। দেখতে পারবেন,ইনশাআল্লাহ। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 129 views
...