আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
203 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (91 points)
১. ছেলের অনেক সময় বড় চুল রাখতে দেখা যায়, যা দেখতে কাধ পেরিয়ে যায় প্রায়, খানিকটা মেয়েদের মতো,এভাবে চুল রাখার বিধান কি?ছেলেরা কতোটুক চুল লম্বা করতে পারবে?

২. আমি একটি  মাদরাসার শিক্ষক (জেনারেল বিষয়ের)  নতুন চাকরী হয়েছে, এর ফলে একদিন একজন হেসে হেসে আমাকে বলছে, এখন থাইকা হুজুর ডাকমু তোমারে,   কইয়া হাসতাছে, আমি তার হাসিতে বিরক্তবোধ করলেও, সে হাসছে বিধায় সমাজিকতার হিসাবে তার সাথে একটু আমিয়ো হাসি। তার এসব হাসা হাসি আর আমার হাসার ফলে কি দুজনের কারো ইমানে সমস্যা হবে?বা কুফর হবে?আমার বিষয়টাও বলবেন? ( সে কি নিয়তে হাসছে, ইসলাম বা ধর্ম নিয়ে তামাশা কি না না কি এমনিতেই তা বলতে পারছি না)

৩.কেও যদি ঠোঁট বন্ধ করে মুখের ভিতর জিহবা নাড়িয়ে তার বইকে তালাক দেওয়ার কথা বলে, তবে কি তালাক হবে? বাইরে থেকে কুনো পরিষ্কার শব্দ বের হয় নি? হুহমহুমহুমহুম এরকম শব্দ বের হয়েছে।

৪. কেও যদি সিচুয়েশন বুঝে কাজ করা বুঝাতে হিন্দুয়ানি একটা প্রবাদ" যে দেবতা যে ফুলে খুশি ই ফুল দি পুজা করা লাগে" এই কথা বললে সে কি কাফের হয়ে যাবে?

৫. আমার পরিচিত এক লোক প্রায়ই বলে ," হে আল্লাহ আমারে দেখা দেও না হয় টেকা দেও" এতে কি গুনাহ হবে? এভাবে বলা কি ইমানের জন্য ক্ষতিকর?

৬. ওযু ছাড়া নামাজ পড়া কি কুফরি?  আজকে ফজরের সুন্নত পরে ওযুতে মাথা মাছেহ করেছি কিনা সন্দেহ হলো,তার পর মাথা মাসেহ করে,ফজরের ফরজ পরা শুরু করি, তখন ভাবতেছিলাম সুন্নত লাগবে না আর,এতে কি আমার ইমানে সমস্যা হবে?

৭. ঘরের দরজার উপরে "আল্লাহু আকবার"  লেখা।  এই দরজায় জুনুব অবস্থায়  হাত/পা লাগে, লেখা খানিক উপরে লেখায় সরাসরি লাগে না, এতে কি কুফরী হবে?

৮. কোনো কাজে যদি সন্দেহ হয় কুফরী কি না, তারপর যদি নিজে নিজে কলিমা শাহাদাত, তৈয়িবা এগুলো পাঠ করি এই নিয়তে, যে অমুক কাজ কুফরী হলে এখন ইমান ঠিক করে নিলাম, এতে তো কোনো সমস্যা নেই??

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(০১)
https://ifatwa.info/2013/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে,
পুরুষদের চুল রাখার বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আহকামঃ-

পুরুষের মাথার চুল রাখার ক্ষেত্রে বিধান হল, বাবরি চুল রাখা রাসূল সাঃ এর সুন্নাত। আর মাথা কামিয়ে রাখা সাহাবায়ে কেরাম রাঃ থেকে প্রমাণিত। এটিকেও সুন্নাহ বলা যাবে। তবে সাহাবীদের সুন্নাহ। রাসূল সাঃ থেকে সরাসরি প্রমাণিত সুন্নাহ নয়। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুধু হজ্ব শেষে মাথার  চুল কামিয়েছেন মর্মে হাদীস পাওয়া যায়। এছাড়া আর কখনো চুল কামিয়েছেন মর্মে বর্ণনা না পাওয়া যায় না।
যেহেতু সাহাবায়ে কেরাম রাঃ গণকেও অনুসরণীয় সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাই মাথা কামিয়ে রাখাও সুন্নাহের অন্তর্ভূক্ত।

বাবরি রাখার তিনটি পদ্ধতি
এ বিষয়ে তিন ধরণের বর্ণনা এসেছে। যথা-
ওয়াফরা তথা কানের লতি পর্যন্ত চুল।
লিম্মা তথা গর্দান ও কানের লতির মাঝামাঝি বরাবর বড় রাখা।
জুম্মা তথা ঘাড় পর্যন্ত আলম্বিত চুল।

عَنْ أَنَسٍ، قَالَ: «كَانَ شَعْرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِلَى شَحْمَةِ أُذُنَيْهِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4185)
হযরত আনাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর চুল তাঁর দুই কানের লতি পর্যন্ত লম্বা ছিল।  {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৫}

عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: «كَانَ شَعْرُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَوْقَ الْوَفْرَةِ، وَدُونَالْجُمَّةِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث–
4187)
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর চুল ঘাড়ের উপর এবং কানের নীচ পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৭}

عَنِ الْبَرَاءِ، قَالَ: «مَا رَأَيْتُ مِنْ ذِي لِمَّةٍ أَحْسَنَ فِي حُلَّةٍ حَمْرَاءَ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» زَادَ مُحَمَّدُ بْنُ سُلَيْمَانَ: «لَهُ شَعْرٌ يَضْرِبُ مَنْكِبَيْهِ» (سنن ابى داود، رقم الحديث-4183)
হযরত বারা বিন আজেব রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কোন ব্যক্তিকে কান পর্যন্ত বাবরীধারী, লাল ইয়ামেনী চাদরের আবরণে রাসূল সাঃ থেকে অধিক সুন্দর দেখিনি। রাবী মুহাম্মদ রহঃ অতিরিক্ত বর্ণনা করে বলেন যে, তাঁর চুল ঘাড় পর্যন্ত লম্বা ছিল। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪১৮৩}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ঘাড় পেরিয়ে গেলে মেয়েদের সাথে সাদৃশ্যতা চলে আসে,বিধায় তাহা জায়েজ নেই।
ছেলেরা সর্বোচ্চ ঘাড়ের সীমা পর্যন্ত চুল রাখতে পারবে,এর বেশি হলে অতিরিক্তটুকু কেটে ফেলতে হবে।

হাদীস শরীফে এসেছে 
  حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، حَدَّثَنَا غُنْدَرٌ ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ عِكْرِمَةَ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ : لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمُتَشَبِّهِينَ مِنَ الرِّجَالِ بِالنِّسَاءِ، وَالْمُتَشَبِّهَاتِ مِنَ النِّسَاءِ بِالرِّجَالِ.
تَابَعَهُ عَمْرٌو ، أَخْبَرَنَا شُعْبَةُ

যে সমস্ত পুরুষেরা মহিলাদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে,আর যে সমস্ত মহিলারা পুরুষদের সাদৃশ্যতা অবলম্বন করে,তাদের উপর রাসুল সাঃ লা'নত করেছেন। (বুখারী শরীফ ৫৮৮৫)   

(০২)
তার এসব হাসা হাসি আর আপনার হাসার ফলে দুজনের কারো ঈমানে সমস্যা হবেনা।  বা কুফর হবেনা।

(০৩)
এক্ষেত্রে তালাক হবেনা।

(০৪)
এক্ষেত্রে তার আকীদা বিশুদ্ধ রেখে যদি সে এসব বলে,তাহলে তার ঈমান চলে যাবেনা।
তবে এটি ঈমানের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, তাই এহেন বাক্য কোনোভাবেই মুসলমান বলতে পারেনা। 

(০৫)
এতে গুনাহ হবেনা।
এভাবে বলা ঈমানের জন্য ক্ষতিকর নয়।

(০৬)
এতে আপনার ঈমানে সমস্যা হবেনা।

(০৭)
এতে কুফরি হবেনা।

(০৮)
না,এতে কোনো সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...