আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
113 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (20 points)
edited by
১) আমি আগে অনেক গান শুনতাম তবে এখন গান শোনা জায়েজ নয় জানার পর থেকে তা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করি।  তবে আগে এমন কিছু গান শুনতাম  তা অনেক সময় নিজে মাঝে মাঝে গাইতাম কিছু গানের অর্থ হয়ত দেখা যেতো তা আল্লাহর সাথে কাওকে সমতুল্য করার কিছু লাইন থাকত বা কোনো ব্যাক্তির পূজা করার লাইন থাকতো যেমন" এমনি করে পূজো করি অন্য কাউকে " বা " আমি আমার ভাগ্য বদলে দিবো" নাউজুবিল্লাহ।  মনে হচ্ছে হয়তো সেসব গানের লাইনগুলো আমিও গেয়েছি  তবে তখন আমি একদমি বুঝতে পারি নি যে এরকম বলার ফলে ইমান চলে যেতে পারে।  বুঝার পর থেকে সেসকল গান ত্যাগ করেছি। সেসকল শিরকি বা কুফরি লাইনগুলো  উচ্চারনের ফলে কি আমি ইসলাম বহির্ভূত হয়ে গিয়েছি? আমার কি আবার ইমান আনতে হবে?
২)  উক্ত (১) নং প্রশ্নটি করার ফলে কি আমার ইমান চলে গিয়েছে?

৩)হারাম কোনো কাজ করলে কি ইমান নষ্ট হয়ে যাবে? যদি কেউ জানে যে কাজটি হারাম তবে সে তা থেকে নিজেকে সরাতে পারছে না তাহলে কি তাকে পুনরায় ইমান আনতে হবে?

৪) বই খাতা নিচে পরে গেলে বা পা লাগলে অথবা গুরুজনদের গায়ে পা লাগলে  হাত দিয়ে সালাম করলে মানে আমরা যেমন করে থাকি এটি কি করা ঠিক? গুনাহ হয় এমন করলে? হলে কি ধরনের গুনাহ হয়?

৫) যদি কারো নাম শুনে মনে হয় যে সে মুসলিম এবং তাকে যদি আমি মুসলিম বলি এবং মনে করি যে সে মুসলিম তবে কি আমার ইমানে কোনো সমস্যা হবে? যদিও আমি জানি না সে কোন ধর্মের তবে নাম শুনে মনে হয়েছে সে মুসলিম নামটি ছিলো ( জুলফিয়া)।

৬) নামাজের সিজদার সময় প্রায়ই বিভিন্ন মানুষের মুখ ভেসে ওঠে এবং আমার মনে হয় আমি কি তার উউদ্দেশ্য  সিজদা দিয়ে ফেলছি নাহ তো নাউযুবিল্লাহ।  এরকম আরও  নানান ধরনের সন্দেহ আসে এতে কি ইমানের কোনে সমস্যা হবে?

৭) কুরআন শরিফ  পড়ার পর তা না সরিয়ে সামনে রেখেরই হাত তুলে দোয়া করা কি ঠিক? করে থাকলে কি ইমান চলে যাবে? কুরআনের কাছে কিছু চাওয়া হয়ে যাবে?
৮) ইমান নিয়ে কিছুদিন যাবত অতিরিক্ত ওয়াসওয়াসা হচ্ছে দেখা  যাচ্ছে আমি কারো সাথে কথা বললেও মনে হচ্ছে আমি তার সাথে আল্লাহর শরিক  করে ফেলছি নাতো নাউজুবিল্লাহ। এরকম মনে হওয়ার ফলে কি ইমান চলে যাবে?
৯) উক্ত প্রশ্নগুলো করার ফলে কি আমার ইমান চলে গিয়েছে?

১০) কালিমা শাহাদাত পাঠের সময় হা উচ্চারনে ভুল হলে কি ইমান আনা হবে না? নাকি ইমান আনা হয়ে যাবে?
১১) কেউ কালিমা শাহাদাত পাঠের আরবি পড়ায় ভুল করলে তবে অর্থ সঠিকভাবে উচ্চারণ করলে কি ইমান নবায়ন হয়ে যাবে?
১২) ইমান নবায়নের জন্য গোসল না করেই  মনে মনে নিয়ত করে কালিমা পাঠ করলেই কি ইমান নবায়ন হয়ে যাবে নাকি গোসল জরুরি?

১৩)  আয়নার সামনে দাড়িয়ে নামাজ পড়লে কি নামাজ হবে না? নাকি গুনাহ হবে?

১৪)  অনেক সময় আমি আয়নার সামনে দাড়িয়ে নামাজ পড়ি তখন মনে সন্দেহ হয় আমি আমার নিজেকেই সিজদা দিচ্ছি না তো নাউজুবিল্লাহ। এরুপ সন্দেহের ফলে কি ইমান চলে যাবে?

১৫) ইমান নবায়নের ক্ষেত্রে মনে মনে নিয়ত করলেই হবে? নাকি মুখে স্বশব্দে উচ্চারন করা জরুরি?

১৬) আকাশের দিকে তাকিয়ে দোয়া করা সুন্নত  এটি জানার পর থেকে আমি বেশিরভাগ সময় আকাশের দিকে তাকিয়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম বা শুকরিয়া আহায় করতাম তবে ইমান চলে যাওয়ার বিষয়গুলি জানার পর থেকেই আমার মনে ওয়াসওয়াসা আসে আমি আকাশের কাছে কিছু চেয়ে ফেলছি না তো নাউজুবিল্লাহ।  এরুপ ভাবনা মনে আসলে তবে তার জন্য তওবা করলে কি ইমান চলে যাবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


(১-২)
শিরক খুবই মারাত্মক।  
আল্লাহ তাআলা নবীকে সতর্ক করে বলেছেন-
وَ لَقَدْ اُوْحِیَ اِلَیْكَ وَ اِلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكَ  لَىِٕنْ اَشْرَكْتَ لَیَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ.

নিশ্চয় আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি এই ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, যদি আপনি শিরক করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং নিশ্চিত আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। -সূরা যুমার (৩৯) : ৬৫

অন্যত্র আল্লাহ আরো বলেছেন-
اِنَّهٗ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَیْهِ الْجَنَّةَ وَ مَاْوٰىهُ النَّارُ.
আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। -সূরা মায়েদা (৫) : ৭২

আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন-
اِنَّ اللهَ لَا یَغْفِرُ اَنْ یُّشْرَكَ بِهٖ وَ یَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِكَ لِمَنْ یَّشَآءُ وَ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدِ افْتَرٰۤی اِثْمًا عَظِیْمًا.

নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে এক মহাপাপ করে। -সূরা নিসা (৪) : ৪৮

একজন মানুষ যত ভালো কাজই করুক কিন্তু সে যদি শিরক করে আল্লাহ তাআলার কাছে তার কোনো কিছুরই মূল্য নেই। এজন্য কিয়ামতের দিবসে মুশরিকরা যত ভালো কাজই নিয়ে আসুক আল্লাহ তাআলা সেগুলোকে ধুলিকণা-রূপ করে দিবেন। 

আল্লাহ তায়ালা বলেন-
وَ قَدِمْنَاۤ اِلٰی مَا عَمِلُوْا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنٰهُ هَبَآءً مَّنْثُوْرًا.

তারা (দুনিয়ায়) যা-কিছু আমল করেছে, আমি তার ফায়সালা করতে আসব এবং সেগুলোকে শূন্যে বিক্ষিপ্ত ধুলোবালি (-এর মত মূল্যহীন) করে দেব।  -সূরা ফুরকান (২৫) : ২৩
,

★নিজ আকিদাকে বিশুদ্ধ রেখে যদি কেউ কখনো শিরকী বাক্যকে অনিচ্ছায় ভুল বশত (মুখ ফসকে) বলে,তাহলে সেটা শিরক হবে না।
তবে তওবা ইস্তেগফার করতে হবে।
আগামীতে কথা বলার সময় সর্বদায় সর্বোচ্চ থেকে কথা বলতে হবে,যাতে আর এহেন বাক্য যবান থেকে বের না হয়। 

আরো জানুনঃ 
,
ফাতাওয়ায়ে তাতারখানীয়াতে আছে

"وما كان خطأ من الألفاظ، لاتوجب الكفر، فقائله مؤمن علی حاله، و لايؤمر بتجديد النكاح، و لكن يؤمر بالإستغفار و الرجوع عن ذلك". ( كتاب أحكام المرتدين، الفصل الأول، ٧/ ٢٨٤، ط: زكريا) 
সারমর্মঃ  ভুলক্রমে কুফরী বাক্য বলে ফেললে কাফের হয়ে যায়না।

★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার ঈমান নষ্ট হয়নি।
তবে তওবা ইস্তেগফার করতে হবে।    

(০৩)
শুধু হারাম কোনো কাজ করলেই কাহারো ঈমান নষ্ট হয়ে যায়না।

(০৪)
কুরআন হাদীস,আল্লাহর নাম,রাসুলুল্লাহ সাঃ এর সম্বলিত বই খাতা না হলে এতে গুনাহ হয়না।
তবে এতে আদবের খেলাফ হয়।

(০৫)
এতে আপনার ঈমানে সমস্যা হবেনা।

(০৬)
এতে আপনার ঈমানে সমস্যা হবেনা।
তবে আপনি এসবকে পাত্তা দিবেননা,এহেন চিন্তা দ্রুত মাথা থেকে সরাতে হবে।
মাথায় আসতেই দেয়া যাবেনা।

বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাইতে হবে।

(০৭)
হ্যাঁ, এটির দরুন কোনো সমস্যা হবেনা।
এতে কুরআনের কাছে কিছু চাওয়া হয়না।

(০৮)
এরকম মনে হওয়ার ফলে ঈমান চলে যাবেনা।

(০৯) উক্ত প্রশ্নগুলো করার ফলে আপনার ঈমান চলে যায়নি।

(১০) কালিমা শাহাদাত পাঠের সময় হা উচ্চারনে ভুল হলে ঈমান আনা হবে।  পুনরায় উচ্চারণ করলে ভালো হবে।

(১১) কেউ কালিমা শাহাদাত পাঠের আরবি পড়ায় ভুল করলে তবে অর্থ সঠিকভাবে উচ্চারণ করলে ঈমান নবায়ন হয়ে যাবে।

(১২) ইমান নবায়নের জন্য গোসল না করেই  মনে মনে নিয়ত করে মুখে কালিমা পাঠ করলেই ইমান নবায়ন হয়ে যাবে।

(১৩)  আয়নার সামনে দাড়িয়ে নামাজ পড়লে নামাজ হবে। এতে গুনাহ হবেনা।

(১৪)  
এরুপ সন্দেহের ফলে ঈমান চলে যাবেনা।

(১৫) 
ঈমান নবায়নের ক্ষেত্রে মনে মনে নিয়ত করলেই হবে। নাকি মুখে স্বশব্দে উচ্চারন করা জরুরি।

তবে কালেমায়ে শাহাদাত মুখে স্বশব্দে উচ্চারন করতেই হবে।

(১৬) 
এরুপ ভাবনা মনে আসলে তবে তার জন্য তওবা করলে ঈমান চলে যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...