আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
226 views
in পবিত্রতা (Purity) by (4 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হুজুর,

১. আপনার সাথে এই ব্যাপারে কথা বলেছিলাম। আমি আগে মোবাইলে নাপাকি (আসলেই কি নাপাকি লেগেছিল কি না আমি নিশ্চিত নয়) লাগলে তা হাতে পানি নিয়ে মুছে বইয়ের ভিতরে ঢুকিয়ে দিতাম। এক্ষেত্রে আমি বেশ কয়েকটি বইয়ের ভিতরে রেখেছি। এখন আমার টেবিলের সব বই নাপাক মনে হচ্ছে৷ এক্ষেত্রে করণীয় কি?

২. আমি ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত অবস্থায় আরো কিছু বই নাপাক হিসেবে গন্য করে আলাদা রেখেছি। সেগুলো কেনই বা আলাদা করেছি তা ভুলে গেছি। এক্ষেত্রে সেই বইগুলো কি করবো? আমার ধারণা যে আমার হাতে হয়তো ভেসিনের পানির ছিটা লেগেছিল আর সেই হাত দিয়েই বই স্পর্শ করেছি। এটাই যে কারণ তা আমি নিশ্চিত নয়।

২.১ঃঃ আমার অনিশ্চয়তার কারণে আপনি যদি পাক ফতোয়া দেন এবং তা যদি সত্যিই নাপাক থাকে তাহলে কি সেই স্থান থেকে নাপাকি ছড়াবে?

৩. যেই স্থান থেকে মযী বের হয় টিস্যু দিয়ে মোছার পর সেই ছিদ্রে হাত লাগলে হাত কি নাপাক হবে?

৪. কাপড়ের জুতায় নাপাকি লাগলে তা পাক করার হুকুম কি? লোফার টাইপের জুতা। Loto কিংবা Apex এর।

৫. কতটুকু বড় পুকুর হলে সেখানে নাপাক কাপড় ধুয়া যাবে? সেক্ষেত্রে সেখানে ১ বার ধৌত করলেই কি হবে?

৬. যেহেতু আমার মযী নির্গত হয় তাই মাঝে মাঝে হাফপ্যান্ট এ লাগে, সেক্ষেত্রে আমার উরু কিংবা লিংগের চারপাশেও তো লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে কি উলংগ হয়ে গোসল করবো?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْعَلَاءِ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شَوْكَرِ بْنِ رَافِعٍ الطُّوسِيُّ ، نَا أَبُو إِسْحَاقَ الضَّرِيرُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ زَكَرِيَّا ، نَا ثَابِتُ بْنُ حَمَّادٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ ، قَالَ : أَتَى عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَأَنَا عَلَى بِئْرٍ أَدْلُو مَاءً فِي رِكْوَةٍ لِي ، فَقَالَ : يَا عَمَّارُ ، مَا تَصْنَعُ ؟ قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، بِأَبِي وَأُمِّي ، أَغْسِلُ ثَوْبِي مِنْ نُخَامَةٍ أَصَابَتْهُ . فَقَالَ " يَا عَمَّارُ ، إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ : مِنَ الْغَائِطِ ، وَالْبَوْلِ ، وَالْقَيْءِ ، وَالدَّمِ ، وَالْمَنِيِّ ، يَا عَمَّارُ ، مَا نُخَامَتُكَ وَدُمُوعُ عَيْنَيْكَ وَالْمَاءُ الَّذِي فِي رِكْوَتِكَ إِلَّا سَوَاءٌ "

আহমাদ ইবনে আলী ইবনুল 'আলা (রহঃ) ... আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন, তখন আমি একটি কূপ থেকে বালতি দিয়ে পানি তুলে আমার একটি পানির পাত্রে ভর্তি করছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আম্মার! তুমি কি করছো? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কোরবান হোক। আমি আমার পরিধেয় বস্ত্রে লেগে যাওয়া শ্লেষ্মা পরিষ্কার করছি। তিনি বলেনঃ হে আম্মার! পাঁচটি জিনিস থেকে কাপড় ধৌত করা প্রয়োজনঃ বিষ্ঠা, পেশাব, বমি, রক্ত ও বীর্য। হে আম্মার! তোমার নাকের শ্লেষ্মা, তোমার উভয় চোখের অশ্রু এবং তোমার এই পানির পাত্রের পানি একই সমান (পাক-নাপাকীর হুকুমের ক্ষেত্রে)।
(সুনানে দারা কুতনি ৪৫০)


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
(০১)
এক্ষেত্রে সবগুলিকে পাক হিসেবে ধরবেন।

(০২)
আপনি সেই বই গুলিকে পাক হিসেবে ধরবেন।

(২.১)
যদি সত্যি নাপাকি থাকে,সেক্ষেত্রে সেটি সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত হলে নাপাক ধরে নিবেন,আর নিশ্চিত না হলে সেক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা আপনাকে মাফ করবেন।

(০৩)
সেই স্থান শুকিয়ে গিয়ে থাকলে হাত নাপাক হবেনা।
হাত নাপাক হলে হাতে তো মযী লাগতে হবে,সেক্ষেত্রে হাতের দিকে নজর দিলে আপনি বিষয়টি বুঝতে পারবেন।

(০৪)
এক্ষেত্রে সেই জুতা পাক করতে হবে।
এধরনের জুতা পাক করার নিয়ম আর তোশক পাক করার নিয়ম একই।

তোশক পাক করার নিয়মঃ-
https://ifatwa.info/3358/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ
যদি তোষকে বীর্য লেগে যায় তাহলে ইসলামের বিধান হল, যদি তা শুধু উপরের আবরণে লেগে থাকে এবং ভিতরে প্রবেশ না করে, তাহলে তা ঘষে তুলে ফেললে বা অন্য কোনভাবে দূর করে দেয়া দ্বারা পাক হয়ে যাবে। অথবা তিন বার তার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত করে দেয়ার দ্বারাও পাক হয়ে যাবে। কিন্তু যদি তোশক নাপাকি ভেতরে খুব ভালোভাবে চুষে নেয়, তা হলে তা তিন বার ধৌত করতে হবে। এবং প্রতিবার ধৌত করার পর শুকাতে হবে। শুকানোর অর্থ হচ্ছে তার উপর হাত রাখলে যেন ভিজে না যায়। বা তার ওপর কিছু রাখলে তা ভিজবে না।
(শামি ১/৩৩২)
,
যদি লেপ তোষকে পেশাব লাগে আর তা নিংড়ানো না যায় তবে তিনবার ভালো করে পানি প্রবাহিত করে ধৌত করতে হবে। আর প্রত্যেকবার পানি প্রবাহিত করার পর এমনভাবে রেখে দিবে যাতে সমস্ত পানি ঝরে যায়। এভাবে মোট তিনবার পানি প্রবাহের দ্বারা ধৌত করলে তা পাক হয়ে হবে।
(হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা নং ১৬১)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি যদি সরাসরি ট্যাপে বা সরাসরি প্রবাহিত পানিতে সেই জুতা ধৌত করেন,সেক্ষেত্রে নাপাকি চলে যাওয়ার উপর প্রবল ধারনা হলেই আপনার জুতা পাক হয়ে যাবে।
পানি বারবার ঝরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।

(০৫)
চারদিকে দশ হাত বাই দশ হাত হলে সেটি বড় পুকুর।
সেই পুকুরে নাপাক কাপড় ধোয়া যাবে।

একবার ধোয়ার পর নাপাকি চলে যাওয়ার উপর যদি আপনার প্রবল ধারনা হয়,সেক্ষেত্রে সেটি পাক হয়ে যাবে।

(০৬)
এভাবে গোসল করতে পারেন।
তবে শরীয়তে এভাবে বিবস্ত্র হয়ে গোসল করা হতে অনুৎসাহিত করা হয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...