পবিত্রতা বিষয়ক জিজ্ঞাসা

Question

আসসালামু আলাইকুম।

আজ থেকে সাত বছর আগে স্কুলে পড়াকালীন সময়ের কথা তখন আমরা যে স্কুলে পড়তাম সেই স্কুলে বাথরুমের ব্যবস্থাটা অতটা ভালো ছিল না কোন কোন বাথরুমের ছিটকানি ভাঙ্গা ছিল এবং কোন কোন বাথরুমে দেখা যেত যে পায়খানা ভেসে উঠতেছে কমোড থেকে, আবার কোন কোন বাথরুমের ভিতর পানি ছিল না । তো এজন্য যখন কেউ বাথরুম করতে যেত তখন সে দরজার হাতল ধরে রাখতো এবং তারপর দাড়িয়ে হাতল ধরে রেখে পেশাব করত বেশিরভাগ সময় দেখা যেত যে সবাই এই ভাবেই পেশাব করতো। এজন্য সবার পবিত্রতা অর্জন করা হতো না।  মানে এক কথায় সেখানে পেশাব করে পবিত্রতা অর্জন করার মতন পরিবেশটা ছিল না। তো তখন আমাদের ইসলাম ধর্মের শিক্ষক একদিন বললেন যে তোমরা সবাই নামাজ কেন পড়ো না তখন সবাই বলল যে  কাপড় নাপাক থাকে  তখন স্যার বলছিল যে কাপড়ের এক পয়সা  পরিমান ধুয়ে ফেললে  কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে। উল্লেখ্য একদিন ইসলাম ধর্মের সেই শিক্ষক ফজরের নামাজ যারা পড়েনি তাদের সবাইকে পিটিয়েছিল এবং ক্লাসে বলতে গেলে প্রায় সবাই  বেতের বাড়ি খেয়েছিল। তো তারপরই স্যার এক পয়সা পরিমাণ ধুয়ে কাঁপড় পবিত্র করার কথা বলছিল। এখন এই পদ্ধতি ব্যবহার করে আমি গত ৭ বছর ধরে যে সকল কাপড়ে নাপাক লেগছে এগুলোকে এভাবে পবিত্র করেছি। এখন আমি ৬-৭ মাস আগে পবিত্রতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পেরেছি এবং একটা হাদিসও পড়েছি  কিছু মাস আগে এবং সেখান থেকে জানতে পেরেছি  যে স্যার যেগুলো  বলেছিল সেগুলো পুরোই ভুল ছিল। এখন এমন কিছু কাপড় এবং জুতা আছে আমার কাছে যেগুলো তো নাপাক লেগে থাকতে পারে এমন আমি আশঙ্কা করতেছি যেহেতু আগে আমি কোথাও নাপাক লাগলে এক পয়সা পরিমাণ ধুয়ে পবিত্রতা অর্জন করতাম তাই আমি আশঙ্কা করতেছি এগুলোতে নাপাক থাকতে পারে।  এখন এগুলোর মধ্যে আমার ব্লেজার, ক্যাটস জুতা,  সু জুতা আছে।  ইসলাম ধর্মের শিক্ষক হয়েও হাদিস বিরোধী কথা বলেছে। ইসলাম ধর্মের শিক্ষক ছিল বিধায় আমি ভেবেছিলাম সত্য কথা বলতেছে।

১) এখন আমি ব্লেজার, ক্যাটস জুতা,  সু জুতা এগুলোকে কি করে পবিত্র করব?  এগুলো তো পানি দিয়ে ধুয়ে  পবিত্র করা সম্ভব না। বর্তমানে এগুলোর মান অনেক ভালো আছে সেই জন্য এগুলোকে আমি ফেলে  দিতে পারবো না, আবার এগুলো আমার পক্ষে কিনা কঠিন।  এখন এক্ষেত্রে আমার করনীয় কি?

২) ইসলাম ধর্মের শিক্ষকের এ ধরনের ভুল কথা বলার দ্বারা আমি ছয়-সাত বছর ধরে এভাবেই জীবন যাপন পরিচালিত  করেছি। অর্থাৎ কোন কাপড় অপবিত্র হয়ে গেলে কাপড়টি  এক পয়সা পরিমাণ ধুয়ে  পবিত্রতা অর্জন করেছি।  এখন সেই সময়ের আদায়কৃত সকল নামাজ কী আমার হয়ে যাবে?

জাযাকাল্লাহু খাইরান।

Answer 1

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
নাজাসতকে ১০টি পদ্ধতিতে পবিত্র করা যায় যথা-
(১)ধৌত করা,যেমন কাপড় ইত্যাদি।
(২)মোছা, যেমন আয়না,তলোয়ার ইত্যাদি।
(৩)টুকা দিয়ে নাজাসত দূর করা,যেমন গাড় বীর্য কে টুকা দিয়ে কাপড় থেকে দূরে সরিয়ে ফেলা,ইত্যাদি।
(৪)ঘর্ষণ, মর্দন, যেমন শরীর বিশিষ্ট নাজাসত যাকে ঘর্ষণ-মর্দন করে দূর করা হলে তা পবিত্র হয়ে যায়,ইত্যাদি।
(৫)শুকিয়ে নাজাসতের আসর দূর হয়ে যাওয়া,যেমন জমিন,গাছ ইত্যাদি শুকিয়ে পবিত্র হয়ে যায়,ইত্যাদি।
(৬)জ্বালানো, যেমন গোবর ইত্যাদি জ্বলে ভস্ম হয়ে ছাই হয়, যা পবিত্র।ইত্যাদি।
(৭)এক অবস্থা থেকে ভিন্নরূপ ধারণ করে পবিত্র হওয়া।যেমনঃ মদ থেকে সিরকায় পরিণত হওয়া যা কিনা পবিত্র।ইত্যাদি।
(৮)দেবাগত,যেমন মানুষ এবং খিনযির ব্যতীত সকল প্রকার প্রাণীর চামড়া কে লবন মাখিয়ে রৌদ্রে রাখলে তা পবিত্র হয়ে যায়,ইত্যাদি।
(৯)যবেহ, প্রাণীকে যবেহ করার মাধ্যমে উক্ত প্রাণীর চামড়া পবিত্র হয়ে যায়।যদি এমন প্রাণীও হয় যার গোস্ত ভক্ষণ করা হারাম,তবে তার চামড়াকে পবিত্র করে দেয়,ইত্যাদি।
(১০)নরখ,তথা যদি কোনো কোঁপে নাজসত পড়ে যায় তাহলে উক্ত কোঁপের মুনাসিব পরিমাণ পানি বাহিরে নিক্ষেপ করলেই উক্ত কোপ পবিত্র হয়ে যায়।ইত্যাদি।
এই মোট দশ ভাবে কোনো অপবিত্র জিনিষকে পবিত্র করা যায়।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-
https://www.ifatwa.info/118

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
আপনার ঐ জিনিষগুলোকে এখন তিনবার ধৌত করে পবিত্র করে নিবেন।

(২)
অতীতের নামাযগুলোকে ধীরে ধীরে কাযা করে নিবেন।

Comments

 আসসালামু আলাইকুম।। হুজুর পানি দিয়ে ব্লেজার,  ক্যাটস জুতা,  সু জুতা পানি দিয়ে ধুলে তো নষ্ট হয়ে যাবে? আর বর্তমানে এগুলো আমার পক্ষে বর্তমানে  কিনা সম্ভব না। আর স্যার বিভ্রান্ত করেছে তাহলে এটা পুরোটা তো স্যারের দোষ। স্যারের দোষের জন্য আমি কেন শাস্তি পাবো।

---

 ব্লেজার,  ক্যাটস জুতা,  সু জুতা পানি দিয়ে ধুলে তো নষ্ট হয়ে যাবে. সেজন্য আপনি সেগুলোকে পানি দ্বারা মুছে পবিত্র করবেন। স্যার ভুল করলে আপনি কেন দ্বীনি জ্ঞান অর্জন করেননি, সেজন্য আপনাকে শাস্তি দেয়া হবে। জাযাকাল্লাহ।