আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
255 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমাদের কলেজে একটা তহবিল আছে, যেটার অর্থ দিয়ে প্রতিমাসে একটা এতিম বাচ্চার খরচ , কিছু গরিব মানুষকে সাহায্য করা হয়, মাঝে মাছে এতিম খানায় টাকা দেওয়া হয়,রমযানে ইফতার সামগ্রী ও দেওয়া হয়,তো আমার ব্যাচে একজন হিন্দু আছে যে এটাতে টাকা দিয়েছিলো কিন্তু তখন ও জানতো না তহবিল টার নাম ইসলামি কল্যান তহবিল, তবে খাত গুলো জানতো কম বেশি, আমাদের আর একটা খাত আছে হোস্টেলের নামায ঘরের জন্য ও টাকা দেওয়ার আগে আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলো কিসের টাকা নিচ্ছি নামায ঘরের কিনা আমি বললাম না, তখন ও তহবিলের জন্য টাকা দিলো। কিন্তু আজ সিনিয়র আপু বললেন হিন্দুদের থেকে টাকা নেওয়া যাবে না। কিন্তু আমাার প্রশ্ন হিন্দু কেউ যদি স্বেচ্ছায় সব জেনে টাকা দেয় তাহলে কি তার সাহয্য নেওয়া যাবে না? এক্ষেত্রে শরিয়তে কোন বাধা আছে কিনা? (তহবিলের টাকা দিয়ে এতিমখানা , মাদরাসা, ইফতার সামগ্রি দেওয়া হয় তবে এর সাথে এম্নি যেকোন দুস্থ, অসহায় কেও সাহায্য করা হয়)

1 Answer

0 votes
by (574,080 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান মতে কাফেরদের থেকে হাদিয়া গ্রহণ করতেও কোন আপত্তি নেই। 

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছু কিছু কাফেরের কাছ থেকে হাদিয়া গ্রহণ করেছেন। আবু হুমাইদ আল-সাঈদি বলেন: আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে তাবুক যুদ্ধ করেছি। 'আয়লা'-র বাদশা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে একটি সাদা রঙের খচ্চর উপহার দিয়েছেন এবং তাকে একটি চাদর দিয়েছেন।[সহিহ বুখারী (২৯৯০)]

আল-আব্বাস বিন আব্দুল মোত্তালিব হুনাইনের দিন সম্পর্কে বলেন: রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একটি সাদা রঙের খচ্চরের উপর ছিলেন; যে খচ্চরটি ফারওয়া বিন নুফাছা আল-জুযামি তাঁকে হাদিয়া দিয়েছিলেন।[সহিহ মুসলিম (১৭৭৫)]

আলী বিন আবু তালেব (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে 'দুমাত' (একটি স্থান) এর 'উকাইদির' (রাজা) একটি রেশমী কাপড় হাদিয়া দিয়েছেন। তখন তিনি সেটা আলী (রাঃ) কে দিয়ে বললেন: "এটাকে কেটে খিমার (নারীর অবগুণ্ঠন) বানিয়ে ফাতেমাদেরকে দাও।"[সহিহ বুখারী (২৪৭২) ও সহিহ মুসলিম (২০৭১)]

ইমাম নববী বলেন:
"এ হাদিসে কাফেরের হাদিয়া গ্রহণ করা বৈধ হওয়ার পক্ষে দলিল রয়েছে।"[শারহু মুসলিম (১৪/৫০) ]

আনাস বিন মালেক (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে: এক ইহুদী মহিলা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একটি বিষযুক্ত ভেড়া নিয়ে আসে এবং তিনি সে ভেড়া থেকে খেয়েছেন।[সহিহ বুখারী (২৪৭৪) ও সহিহ মুসলিম (২১৯০)]

শরীয়তের বিধান মতে অমুসলিম যদি নিজ ইচ্ছায় মসজিদের কাজে টাকা দান করে,তাহলে ভবিষ্যতে তার পক্ষ থেকে কোনো ফেতনার আশংকা না থাকলে সেই দান নেওয়া জায়েয  আছে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৩/২৪৮,কিফায়াতুল মুফতি ৭/৭৭.ফাতাওয়ায়ে রশিদিয়্যাহ ৫৩৭)


قال اللّٰہ تعالیٰ: {لاَ تَتَّخِذُوْا الْیَہُوْدَ وَالنَّصَاریٰ اَوْلِیَآئَ، بَعْضُہُمْ اَوْلِیَآئُ بَعْضٍ، وَمَنْ یَّتَوَلَّہُمْ مِنْکُمْ فَاِنَّہٗ مِنْہُمْ} فنہي في ہٰذہ الآیۃ من موالاۃ الکفار وإکرامہم … ونہیٰ عن الاستعانۃ بہم في أمور المسلمین، لما فیہ من العز وعلو الید، وکذٰلک کتب عمر إلی أبي موسیٰ الأشعري رضي اللّٰہ عنہ ینہاہ أن یستعین بأحد من أہل الشرک في کتابتہ۔ (أحکام القرآن، البراء ۃ / مطلب في تمیز الطبقات ۳؍۹۹ دار الکتاب العربي بیروت)
যার সারমর্ম হলো কিছু উলামায়ে কেরামগন দ্বীনি বিষয়ে  কাফেরদের থেকে  সাহায্য নেওয়া থেকে নিষেধ করেছেন।
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
ইসলামে যখন কাফেরদের থেকে হাদিয়া গ্রহন জায়েজ আছে,মসজিদ মাদ্রাসার কাজে কাফেরদের থেকে তাদের ইচ্ছায় দেওয়া দান গ্রহন জায়েজ আছে,সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত "এতিমখানা , মাদরাসা, ইফতার সামগ্রি, যেকোন দুস্থ, অসহায়দের সাহায্য এর জন্য তাদের টাকা নেওয়া জায়েয আছে। 
,
তবে জোড় করে নেওয়া যাবেনা,সম্মতিতেই নিতে হবে।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...