بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
১-২. বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল দু’জন আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক
বিবেকবান দুই জন মুসলিম স্বাক্ষের সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষে পাত্র/পাত্রি
তা কবুল করবে। আর সাক্ষীগণ উভয়ের
কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। আর শরয়ী এ শর্তাবলী পরিপূর্ণভাবে টেলিফোনে পাওয়া সম্ভব নয়।
তাই টেলিফোন বা মোবাইলে বিবাহ করা জায়েজ নয়। {ফাতওয়ায় উসমানী-২/৩০৪,৩০৫}
মোবাইলে বা টেলিফোনে
বিবাহ করার পদ্ধতি হল-উভয় পক্ষ থেকে এক পক্ষ অপরপক্ষ যেখানে থাকে সেখানের কোন ব্যক্তিকে
উকীল বানাবে অর্থাৎ
ছেলে পক্ষ থেকে মেয়ের নিকটে অথবা মেয়ে পক্ষ থেকে ছেলের নিকটে উকীল বানাবে।
তারপর সে উকীল দু’জন সাক্ষীর সামনে বিবাহ করিয়ে দিবে। তাহলে বিবাহ
শুদ্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া সরাসরি মোবাইলে বা টেলিফোনে প্রস্তাব ও কবুল করার দ্বারা বিবাহ
সহীহ হবে না।
৩. হানাফি মাযহাব
মতে যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি
যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের
সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।
তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে,
তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে,
যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান
বিনষ্ট হয়, তাহলে
পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে,
তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।
রাসুল সাঃ কুফু
মিলাইতে বলেছেনঃ
وَعَنْ
أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ
لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ
بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»
আবূ হুরায়রাহ্
(রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত)
চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ,
অথবা বংশ-মর্যাদা,
অথবা রূপ-সৌন্দর্য,
অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে
সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে
প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)! (সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)
কুফু সম্পর্কে
বিস্তারিত জানুনঃ https://www.ifatwa.info/4541/
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/4801/
৪-৫. নিজ পরিবার থেকে সাক্ষী
থাকা জরুরী নয়। বিবাহ শুদ্ধ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ (যাদের
উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়) এমন দুইজন স্বাধীন পুরুষ সাক্ষী বা একজন স্বাধীন পুরুষ
ও দুইজন নারী সাক্ষী হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল বলার উভয় বক্তব্য নিজ কানে উপস্থিত থেকে শুনতে
পায়। (আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮)
(উল্লেখ্য
যে মাতাপিতা সন্তুষ্টি ও অনুমতি নিয়ে সবাইকে
অগ্রসর হতে হবে।এবং মাতাপিতার সন্তুষ্টিই দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের উত্তম মাধ্যম। মাতাপিতাকে কষ্ট দিয়ে জীবনে সূখী
হওয়া যাবে না। তাছাড়া বৈধ ও ভালো কাজে মাতাপিতার নির্দেশ মান্য করাও ওয়াজিব।
সুতরাং আমরা পরামর্শ
স্বরুপ বলবো যদিও উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিতে পরিবারকে
উপেক্ষা করে আপনাদের বিবাহ হয়ে যাবে,তারপরেও এভাবে অভিভাবককে না জানিয়ে গোপনে ,অথবা
তাদের মতামতকে উপেক্ষা করে বিয়ে করা কখনো উচিৎ
হবে না। কেননা মাতাপিতা সব সময় সন্তানের কল্যাণ চায়। তাই মাতাপিতার পরামর্শ ও আদেশ
মান্য করাই সবার জন্য কল্যাণকর।)
আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/5321/