بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
কুরআনে কারীমে
সুদের প্রতি যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সুদ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলা বলেন,
১নং আয়াত :
اَلَّذِیْنَ یَاْكُلُوْنَ
الرِّبٰوا لَا یَقُوْمُوْنَ اِلَّا كَمَا یَقُوْمُ الَّذِیْ یَتَخَبَّطُهُ الشَّیْطٰنُ
مِنَ الْمَسِّ ذٰلِكَ بِاَنَّهُمْ قَالُوْۤا اِنَّمَا الْبَیْعُ مِثْلُ الرِّبٰوا
ۘ وَ اَحَلَّ اللهُ الْبَیْعَ وَ حَرَّمَ الرِّبٰوا فَمَنْ جَآءَهٗ مَوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّهٖ
فَانْتَهٰی فَلَهٗ مَا سَلَفَ وَ
اَمْرُهٗۤ اِلَی اللهِ وَ مَنْ عَادَ
فَاُولٰٓىِٕكَ اَصْحٰبُ النَّارِ هُمْ فِیْهَا خٰلِدُوْنَ.
যারা সুদ খায় তারা
(কিয়ামতের দিন) সেই ব্যক্তির মতো দাঁড়াবে, যাকে শয়তান স্পর্শ দ্বারা পাগল করে। এটা এজন্য যে,
তারা বলে,
ক্রয়-বিক্রয় তো সুদের মতোই। অথচ আল্লাহ
ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল করেছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। যার নিকট তার প্রতিপালকের উপদেশ
এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, তবে
অতীতে যা হয়েছে তা তারই। আর তার ব্যাপার আল্লাহর এখতিয়ারে। আর যারা পুনরায় করবে তারাই
জাহান্নামের অধিবাসী হবে। সেখানে তারা হবে চিরস্থায়ী। -সূরা বাকারা (২) : ২৭৫
২নং আয়াত :
یَمْحَقُ
اللهُ الرِّبٰوا وَ یُرْبِی الصَّدَقٰتِ
وَ اللهُ لَا یُحِبُّ كُلَّ كَفَّارٍ اَثِیْمٍ.
আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন
করেন এবং দানকে বর্ধিত করেন। আল্লাহ কোনো অকৃতজ্ঞ পাপীকে ভালোবাসেন না। -সূরা বাকারা
(২) : ২৭৬
৩য় ও ৪র্থ আয়াত
:
یٰۤاَیُّهَا
الَّذِیْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ وَ ذَرُوْا مَا بَقِیَ مِنَ الرِّبٰۤوا اِنْ
كُنْتُمْ مُّؤْمِنِیْنَ فَاِنْ لَّمْ تَفْعَلُوْا فَاْذَنُوْا بِحَرْبٍ مِّنَ
اللهِ وَ رَسُوْلِهٖ وَ اِنْ تُبْتُمْ
فَلَكُمْ رُءُوْسُ اَمْوَالِكُمْ لَا
تَظْلِمُوْنَ وَ لَا تُظْلَمُوْنَ.
হে মুমিনগণ! তোমরা
আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা মুমিন হও।যদি তোমরা না ছাড় তবে আল্লাহ ও তাঁর
রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও। আর যদি তোমরা তাওবা কর তবে তোমাদের মূলধন
তোমাদেরই। এতে তোমরা (কারও প্রতি) জুলুম করবে না এবং তোমাদের প্রতিও জুলুম করা হবে
না। -সূরা বাকারা (২) : ২৭৮-২৭৯
৫ম আয়াত :
یٰۤاَیُّهَا
الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا لَا تَاْكُلُوا الرِّبٰۤوا اَضْعَافًا مُّضٰعَفَةً وَّ اتَّقُوا اللهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ.
হে মুমিনগণ! তোমরা
চক্রবৃদ্ধিহারে সুদ খেয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। -সূরা আলে ইমরান (৩) : ১৩০
(১)
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
اجْتَنِبُوا
السّبْعَ المُوبِقَاتِ، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللّهِ وَمَا هُنّ؟ قَالَ: الشِّرْكُ
بِاللّهِ... وَأَكْلُ الرِّبَا، وَأَكْلُ مَالِ اليَتِيمِ...
তোমরা সাতটি ধ্বংসাত্মক
কাজ থেকে বিরত থাক। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সেই সাতটি ধ্বংসাত্মক কাজ কী?
তিনি বললেন-
১. আল্লাহর সাথে
শরীক স্থাপন করা, ২.
জাদু করা, ৩.
অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করা, যা আল্লাহ নিষেধ করেছেন। ৪. সুদ খাওয়া,
৫. এতিমের সম্পদ আত্মসাৎ করা,
৬. জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে
পালিয়ে যাওয়া। ৭. সতী-সাধ্বী সরলমনা-উদাসীনা মুমিন নারীদের বিরুদ্ধে অপকর্মের মিথ্যা
অপবাদ দেওয়া। -সহীহ বুখারী, হাদীস
২৭৬৬, ৬৮৫৭;
সহীহ মুসলিম,
হাদীস ৮৯;
সুনানে আবু দাউদ,
হাদীস ২৮৭৪;
সুনানে নাসাঈ,
হাদীস ৩৬৭১
(২)হযরত
সামুরা ইবনে জুনদুব রা. থেকে বর্ণিত একটি দীর্ঘ হাদীসে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম-এর একটি স্বপ্নের কথা বর্ণিত হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে-
‘আমি
দেখলাম আজ রাতে আমার কাছে দু’জন মানুষ আসল এবং তারা আমাকে একটি পবিত্র ভূখ-ে নিয়ে গেল।
আমরা চলতে চলতে একটি রক্তের নদীর কিনারে গিয়ে উপস্থিত হলাম। সেই নদীতে একজন পুরুষ দাঁড়িয়ে
আছে। আর নদীর কিনারে দাঁড়িয়ে আছে আরেকজন পুরুষ। তার সামনে রয়েছে পাথর। যখন নদীর লোকটি
কিনারে উঠতে চায় তখন কিনারে থাকা লোকটি তার মুখে পাথর নিক্ষেপ করে। পাথরের আঘাতে লোকটি
যেখানে ছিল সেখানে ফিরে যায়। এরপর সে আবারও নদীর কিনারে উঠতে চায়,
এভাবে সে যখনই কিনারে উঠতে চায় তখনই তাকে
পাথর মেরে যেখানে ছিল সেখানে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
আমি আমার সাথে
থাকা লোকদেরকে জিজ্ঞেস করলাম, রক্তের নদীতে অবস্থিত লোকটি, যার মুখের উপর পাথর মেরে আপন জায়গায় ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে,
সে লোকটি কে?
তখন তাদের একজন আমাকে বললেন,
এ লোকটি সুদখোর।’ -সহীহ বুখারী,
হাদীস ১৩৮৬,
২০৮৫
(৩)একটি হাদীসে
বর্ণিত হয়েছে-
لَعَنَ
رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ آكِلَ الرِّبَا، وَمُؤكِلَهُ،
وَشَاهِدَيْهِ، وَكَاتِبَهُ.
যে সুদ খায়,
যে সুদ খাওয়ায়,
যে সাক্ষী থাকে এবং যে ব্যক্তি সুদের হিসাব-নিকাশ
বা সুদের চুক্তিপত্র ইত্যাদি লিখে দেয় সকলের প্রতি রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম লা‘নত করেছেন। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ৬৬০; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৩৩৩; জামে তিরমিযী, হাদীস ১২০৬
প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন/ভাই!
প্রশ্নে উল্লেখিত
ছুরতে উক্ত কথা বলার দ্বারা যদিও ইমান ভঙ্গ হবে না কিন্তু এজাতীয় কথা বলা থেকে বিরত
থাকায় শ্রেয়। কারণ, আপনার
উদ্দেশ্য কুরআন অবমাননা করা ছিল না। বরং আপনার বাবার হারাম উপার্জনকে ঘৃণা করাই ছিল
আপনার মাকসাদ। আপনার উচিত হেকমত ও ভালবাসা দিয়ে ধীরে ধীরে তাকে বুঝানোর চেষ্টা করবেন।
আল্লাহ তায়ালার নিকট তার জন্য অধিকহারে দোয়া করবেন। আরো জানুন: https://www.ifatwa.info/398