بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
১. আজান শুনে শয়তান
পালাতে থাকে। শয়তানের সেই ভয়ার্ত পলায়ন অনেক সময় কতিপয় কুকুর দেখতে পায়,
আবার কখনো দেখতে পায় না। যখন শয়তানের সেই
ভীত সন্ত্রস্ত পলায়ন দেখে কুকুর অনেক সময় ঘেউ ঘেউ করে আবার অনেক সময় কাঁদতে থাকে। অতএব
শয়তানের পলায়ন দেখে কুকুর কাঁদতে বা ঘেউ ঘেউ করতে পারে। সুতরাং এ বিষয়টি নিয়ে অহেতুক
চিন্তিত হবার কিছু নেই।
عَنْ أَبِي
هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ
الشَّيْطَانَ إِذَا سَمِعَ النِّدَاءَ بِالصَّلَاةِ أَحَالَ لَهُ ضُرَاطٌ حَتَّى
لَا يَسْمَعَ صَوْتَهُ. فَإِذَا سَكَتَ رَجَعَ فَوَسْوَسَ فَإِذَا سَمِعَ
الْإِقَامَةَ ذَهَبَ حَتَّى لَا يَسْمَعَ صَوْتَهُ فَإِذَا سَكَتَ رَجَعَ
فَوَسْوَسَ»
হযরত আবু হুরায়রা
রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
শয়তান যখন নামাযের আযান শুনতে পায় তখন
বাতকর্ম করতে করতে পলায়ন করে যেন আযানের শব্দ তার কানে পৌঁছতে না পারে। মুয়াজ্জিন যখন
আযান শেষ করে তখন সে ফিরে এসে (নামাযীর মনে) সংশয়-সন্দেহ সৃষ্টি করতে থাকে। সে পুনরায়
যখন ইকামত শুনতে পায় আবার পলায়ন করে যেন এর শব্দ তার কানে না যেতে পারে। যখন ইকামত
শেষ হয় তখন সে ফিরে এসে (নামাযীদের মনে) সংশয় সন্দেহ সৃষ্টি করতে থাকে। [সহীহ মুসলিম,
হাদীস নং-৩৮৯]
হযরত জাবির (রাঃ)
হতে বর্ণিত, তিনি
বলেন, আমি
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি ,
তিনি বলেন,
"যখন তোমরা রাত্রে কুকুরের
চিৎকার এবং গাধার ডাক শুনতে পাবে তখন আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত শয়তান হতে পানাহ্ চাইবে।
কেননা, ওরা
এমন কিছু দেখতে পায় যা তোমরা দেখতে পাওনা। " -( মিশকাত শরীফ,
পৃষ্ঠা-৩৭৩)।
২. স্বপ্নে মৃত
ব্যক্তিকে দেখতে পাওয়া অস্বাভাবিক নয়। এক্ষণে যদি কেউ স্বপ্নে এরূপ মৃত ব্যক্তিকে ভাল
অবস্থায় দেখে বা মৃত ব্যক্তিকে ভাল কোন সংবাদ বা উপদেশ দিতে শুনে,
তবে আল্লাহর শুকরিয়া করবে। রাসূল (সা:)
বলেন, যখন
তোমরা কেউ ভালো স্বপ্ন দেখবে, তখন আলহামদুলিল্লাহ পড়বে এবং সে নিজের প্রিয় লোকদের কাছে তা
বলতে পারে (বুখারী হা/৬৯৮৫)।
আর যদি মৃত ব্যক্তিকে
খারাপ অবস্থায় দেখা যায় বা সে খারাপ সংবাদ প্রদান করে তাহ’লে বুঝতে হবে যে,
এই স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে। এক্ষেত্রে
রাসূল (সা:) এর নির্দেশনা হ’ল, বাম দিকে তিনবার থুক মেরে ‘আ‘ঊযুবিল্লা-হি মিনাশ শায়ত্বা-নির
রজীম’ বলবে এবং পার্শ্ব পরিবর্তন করবে (মুসলিম হা/২২৬২,
মিশকাত হা/৪৬১৩)। অন্য বর্ণনায় এসেছে দাঁড়িয়ে
(দু’রাক‘আত) ছালাত আদায় করবে এবং কাউকে বলবে না। কারণ এই স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করে
না (মুসলিম হা/২২৬১-৬৩; বুখারী
হা/৭০৪৪; মিশকাত
হা/৪৬১২)।
জাবির (রাঃ) থেকে
বর্ণিত, রাসূল
(ছাঃ) জুম‘আর খুৎবাদানরত অবস্থায় জনৈক ব্যক্তি এসে বলল,
হে আল্লাহর রাসূল! আমি স্বপ্নে দেখলাম
যে, আমার
ঘাড়ে আঘাত করার ফলে আমার মাথা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে গেল। তারপর আমি তা ধরে এনে পুনরায়
আমার ঘাড়ে স্থাপন করলাম। রাসূল (ছাঃ) হেসে উঠে বললেন,
ঘুমের মধ্যে তোমাদের কারো সাথে শয়তান খেলা
করলে সে যেন তা লোকের কাছে না বলে (মুসলিম হা/২২৬৮; ইবনু মাজাহ হা/৩৯১২; মিশকাত হা/৪৬১৬)।
সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত
ছুরতে প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার বাবাকে আমল বাড়িয়ে দিতে হবে,দ্বীনদার লোকদের সাথে উঠাবসা করতে হবে,
পবিত্র হালতে থাকতে হবে,
অহংকার থেকে বেঁচে থাকতে হবে। বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত,
যিকির আযকার,ফরজ সহ নফল নামাজ পড়তে হবে। দান ছদকাহ করতে হবে। স্বপ্নের
কথা কাউকে বলা যাবেনা। পাশাপাশি উক্ত মাইয়্যিতের নামে ছওয়াব পৌছানোর নিয়তে দান সদকাহ,
কুরআন তিলাওয়াত,
যিকির আযকার ইত্যাদি করতে পারেন।