আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
94 views
in সালাত(Prayer) by (22 points)
ফজরের জামাতের সাথে নামাজ পরার জন্য সুন্নত নামাজে দোয়া মাসুরা শেষ করে সময় না নিয়ে সাথে সাথে সালাম ফিরালে, এভাবে তারাহুরা করে সালাম ফিরালে নামাজ কি হয়েছে?

অর্থাৎ দোয়া মাসুরা ও সালাম ফিরানোর মাঝে একটুও সময় না নিলে নামাজ কি হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (63,200 points)
edited by

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে যেয়ে যদি দেখা যায়, ফরজ নামাজের ইকামত হচ্ছে কিংবা জামাত শুরু হয়ে গেছে। এমতাবস্থায় সুন্নত নামাজ আদায় শেষ করে জামাতে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা থাকলে সুন্নত আদায় করতে হবে।

কারণ, ফজরের নামাজের সুন্নত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে হাদিস শরিফে এসেছে,

 لم يكن النبي صلى الله عليه وسلم على شيء من النوافل أشد منه تعاهدا على ركعتي الفجر.

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) নামাযে এত গুরুত্ব দিতেন যা অন্য কোনো নফল (বা সুন্নত) নামাযে দিতেন না। (সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৬৩; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৭২৪)

সুন্নতের কোনো কা'যা নেই। তবে ফজরের সুন্নত বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ সুন্নতে না পড়লে সূর্যোদয়ের পর দু রা'কাত নফল নামায পড়ার কথা হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত

عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: من لم يصل ركعتي الفجر فليصلهما بعد ما تطلع الشمس

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি ফজরের সুন্নত পড়তে পারবে না,সে যেন সূর্যোদয়ের পর দু রা'কাত সুন্নত পড়ে নেয়।(সুনানু তিরমিযি-৪২৩)(কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/৩৪৭)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.), হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও হজরত আবু দারদা (রা.)-এর মতো বিশিষ্ট সাহাবিদের থেকে বর্ণিত আছে যে, তারা ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে নিতেন।

যেমন হজরত আবু দারদা (রা.) ফজরের সময় মসজিদে প্রবেশ করে লোকজনকে ফজরের জামাতে কাতারবদ্ধ পেলে মসজিদের এক কোণে (ফজরের) সুন্নত পড়তেন। অতপর মানুষের সঙ্গে জামাতে শরিক হতেন। -শরহু মায়ানিল আসার

সুতরাং ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে যদি জামাতের সঙ্গে দ্বিতীয় রাকাতও পাওয়া যায় তাহলে সুন্নত নামাজ পড়ে নিতে হবে। আর দ্বিতীয় রাকাত পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে সুন্নত পড়বে না; বরং জামাতে শরিক হয়ে যাবে এবং সূর্যোদয়ের পর সুন্নত পড়ে নেবে।

উল্লেখ্য, যে কোনো কোনো ইসলামি স্কলার সুন্নত পড়ার পর ইমামকে তাশাহহুদে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সুন্নত পড়ার কথা বলেছেন।  কিন্তু অধিকাংশ ইসলামি স্কলারের অভিমত তা-ই, যা ওপরে বলা হয়েছে।

তবে জামাত শুরু হওয়ার পর মসজিদে সুন্নত পড়ার কিছু শর্ত রয়েছে। সেগুলো হলো- ১. কাতারের সঙ্গে মিলিত হয়ে সুন্নত নামাজ পড়া যাবে না। মসজিদের বারান্দায় বা কাতার থেকে দূরে মসজিদের এক কোণে বা কোনো খুঁটির আড়ালে সুন্নত পড়বে।২. জামাত থেকে পেছনে পৃথক হয়ে সুন্নত পড়ার মতো জায়গা না থাকলে সুন্নত পড়া যাবে না। এক্ষেত্রে জামাতে শরিক হয়ে যাবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

জ্বী প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে নামাজ সহিহ হয়েছে। কারণ, নামাজের মাঝে ও দুয়ায়ে মাসূরা পড়া সুন্নত। নামাজের সুন্নাতে মুয়াক্কাদা হল এমন কার্যাবলি যা ছাড়লে নামাজ বাতিল হয়না কিন্তু বিনা কারনে ছাড়লে নামাজ মাকরুহ হয়। তবে বিশেষ কারণে কখনো ছাড়া যায়। ফরজ নামাজ হোক, আর সুন্নত বা নফল হোক দুয়ায়ে মাসূরা ছেড়ে দিলে নামাজ হবে। কিন্তু প্রয়োজন ছাড়া ইচ্ছেকৃত ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে। আর এভাবে ছেড়ে দেবার অভ্যাস করা মারাত্মক গোনাহ।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
আপনাদের এখানে  এই প্রথম জানতে পারলাম ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে যদি জামাতের সঙ্গে দ্বিতীয় রাকাতও পাওয়া যায় তাহলে সুন্নত নামাজ পড়ে নিতে হবে। আর দ্বিতীয় রাকাত পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে সুন্নত পড়বে না, এই বিষয়টি না জানা থাকার কারনে ফজরের সুন্নত পড়ে ফজরের জামাতের তাসাহুদে শরিক হলে, সেই নামাজ কি ফাসিদ হয়েছিল ?
by (63,200 points)
কোনো কোনো ইসলামি স্কলার সুন্নত পড়ার পর ইমামকে তাশাহহুদে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সুন্নত পড়ার কথা বলেছেন।  কিন্তু অধিকাংশ ইসলামি স্কলারের অভিমত তা-ই, যা ওপরে বলা হয়েছে। তবে উল্লিখিত ছুরতে নামাজ ফাসেদ হয়নি।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 111 views
...