بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে যেয়ে যদি
দেখা যায়, ফরজ নামাজের ইকামত হচ্ছে কিংবা জামাত শুরু হয়ে গেছে। এমতাবস্থায়
সুন্নত নামাজ আদায় শেষ করে জামাতে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা থাকলে সুন্নত আদায় করতে হবে।
কারণ, ফজরের নামাজের সুন্নত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে হাদিস
শরিফে এসেছে,
لم يكن النبي صلى الله عليه وسلم على شيء من النوافل
أشد منه تعاهدا على ركعتي الفجر.
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
ফজরের দুই রাকাত (সুন্নত) নামাযে এত গুরুত্ব দিতেন যা অন্য কোনো নফল (বা সুন্নত) নামাযে
দিতেন না। (সহীহ বুখারী, হাদীস ১১৬৩; সহীহ
মুসলিম, হাদীস ৭২৪)
সুন্নতের কোনো কা'যা নেই। তবে ফজরের
সুন্নত বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তাই এ সুন্নতে না পড়লে সূর্যোদয়ের পর দু রা'কাত নফল নামায পড়ার কথা হাদীসে বর্ণিত রয়েছে।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم:
من لم يصل ركعتي الفجر فليصلهما بعد ما تطلع الشمس
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি ফজরের সুন্নত
পড়তে পারবে না,সে যেন সূর্যোদয়ের পর দু রা'কাত সুন্নত পড়ে নেয়।(সুনানু তিরমিযি-৪২৩)(কিতাবুল-ফাতাওয়া-২/৩৪৭)
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.), হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও হজরত আবু দারদা (রা.)-এর
মতো বিশিষ্ট সাহাবিদের থেকে বর্ণিত আছে যে,
তারা ফজরের জামাত শুরু
হয়ে গেলেও সুন্নত পড়ে নিতেন।
যেমন হজরত আবু দারদা (রা.) ফজরের সময়
মসজিদে প্রবেশ করে লোকজনকে ফজরের জামাতে কাতারবদ্ধ পেলে মসজিদের এক কোণে (ফজরের) সুন্নত
পড়তেন। অতপর মানুষের সঙ্গে জামাতে শরিক হতেন। -শরহু মায়ানিল আসার
সুতরাং ফজরের জামাত শুরু হয়ে গেলেও
সুন্নত পড়ে যদি জামাতের সঙ্গে দ্বিতীয় রাকাতও পাওয়া যায় তাহলে সুন্নত নামাজ পড়ে
নিতে হবে। আর দ্বিতীয় রাকাত পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে সুন্নত পড়বে না; বরং জামাতে শরিক হয়ে যাবে এবং সূর্যোদয়ের পর সুন্নত পড়ে নেবে।
উল্লেখ্য, যে কোনো কোনো ইসলামি স্কলার সুন্নত পড়ার পর ইমামকে তাশাহহুদে
পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও সুন্নত পড়ার কথা বলেছেন। কিন্তু অধিকাংশ ইসলামি স্কলারের অভিমত তা-ই, যা ওপরে বলা হয়েছে।
তবে জামাত শুরু হওয়ার পর মসজিদে সুন্নত
পড়ার কিছু শর্ত রয়েছে। সেগুলো হলো- ১.
কাতারের সঙ্গে মিলিত হয়ে
সুন্নত নামাজ পড়া যাবে না। মসজিদের বারান্দায় বা কাতার থেকে দূরে মসজিদের এক কোণে
বা কোনো খুঁটির আড়ালে সুন্নত পড়বে।২. জামাত থেকে পেছনে পৃথক হয়ে সুন্নত পড়ার মতো
জায়গা না থাকলে সুন্নত পড়া যাবে না। এক্ষেত্রে জামাতে শরিক হয়ে যাবে।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
জ্বী প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে নামাজ সহিহ হয়েছে। কারণ, নামাজের মাঝে ও দুয়ায়ে মাসূরা পড়া সুন্নত।
নামাজের সুন্নাতে মুয়াক্কাদা হল এমন কার্যাবলি যা ছাড়লে নামাজ বাতিল হয়না কিন্তু
বিনা কারনে ছাড়লে নামাজ মাকরুহ হয়। তবে বিশেষ কারণে কখনো ছাড়া যায়। ফরজ নামাজ হোক, আর সুন্নত বা নফল হোক দুয়ায়ে মাসূরা ছেড়ে
দিলে নামাজ হবে। কিন্তু প্রয়োজন ছাড়া ইচ্ছেকৃত ছেড়ে দিলে গোনাহ হবে। আর এভাবে ছেড়ে
দেবার অভ্যাস করা মারাত্মক গোনাহ।