বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : أُمِرْتُ أَنْ أَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةِ أَعْظُمٍ : الْجَبْهَةِ ، وَأَشَارَ بِيَدِهِ عَلَى أَنْفِهِ ، وَالْيَدَيْنِ ، وَالرِّجْلَيْنِ ، وَأَطْرَافِ الْقَدَمَيْنِ ، وَلَا نَكْفِتَ الثِّيَابَ وَلَا الشَّعْرَ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,আমাকে সাতটি হাড্ডি দ্বারা সিজদা করতে আদেশ প্রদান করা হয়েছে।কপাল,নাক,দুনু হাত,দুনু পা,এবং দুনু পায়ের আশপাশ দ্বারা।এবং এগুলোকে কাপড় বা চুল দ্বারা না মুড়ানোর নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।(সহীহ বোখারী-৮১২,সহীহ মুসলিম-৪৯০)
ইমাম নববী রাহ বলেন,
"قَوْله صَلَّى اللَّه عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : ( سَبْعَة أَعْظُم ) أَيْ : أَعْضَاء ، فَسَمَّى كُلّ عُضْو عَظْمًا , وَإِنْ كَانَ فِيهِ عِظَام كَثِيرَة" انتهى .
সাত হাড্ডি অর্থ সাতটি অঙ্গ দ্বারা সিজদা দেওয়ার কথা ঘোষনা করা হচ্ছে।প্রত্যেক অঙ্গকে একটি হাড্ডি বলা হচ্ছে,যদিও সেই সব অঙ্গে অনেকগুলি হাড্ডি বিদ্যমান রয়েছে।
وَلَوْ سَجَدَ عَلَى الْحَشِيشِ أَوْ التِّبْنِ أَوْ عَلَى الْقُطْنِ أَوْ الطَّنْفَسَةِ أَوْ الثَّلْجِ إنْ اسْتَقَرَّتْ جَبْهَتُهُ وَأَنْفُهُ وَيَجِدُ حَجْمَهُ يَجُوزُ وَإِنْ لَمْ تَسْتَقِرَّ لَا
যদি কেউ ঘাস-পাতার বা ধুলাবালি কিংবা রুই বরফ ইত্যাদির উপর সিজদা দেয়,যদি তার কপাল/নাক শক্ত জায়গায় গিয়ে অটকে যায়,এবং সে ঐ জিনিষের হাড্ডি সমতূল্য মূল অবয়বে গিয়ে আটকে যায়,তাহলে তার নামায বিশুদ্ধ হবে।আর যদি না কপাল বা নাক কোথাও গিয়ে না আটকে,বরং নিচের দিকে যেতেই থাকে,তাহলে তার নামায হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৭০)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
সিজদা হল,মাঠিতে কপাল রাখা।কপাল দ্বারা যখন সিজদা দেয়া হবে,তখন যমিনের শক্ততা অনুভব করা।যদি যমিনের শক্ততা অনুভব করা না যায়,তাহলে সিজদা হবে না।এবং নামাযও হবে না।
কাপড় ইত্যাদির আবরণ ব্যতীত সিজদা করতে হবে।তবে যদি কেউ কাপড় বা পাগড়ী পরিহিত অবস্থায় সিজদা দেয়,এবং শক্ততাকে অনুভব করতে পারে,তাহলে তার নামায হয়ে যাবে।তবে মাকরুহ হবে।
যমিনের শক্ততা অরুভব করা গেলে নামায বিশুদ্ধ হবে। হযরত আনাস রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
حديث أنس رضي الله عنه قال : ( كنا نصلي مع رسول الله صلى الله عليه وسلم في شدة الحر ، فإذا لم يستطع أحدنا أن يمكن جبهته من الأرض يبسط ثوبه فيسجد عليه ) رواه البخاري ومسلم ،
আমরা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সাথে প্রচন্ড গরমের সময় নামায পড়তাম।যখন গরমের কারণে যমিনে সিজদা দেওয়া সম্ভব হত না।তখন আমরা নিজ কাপড় বিছিয়ে,তার উপর সিজদা দিতাম।
ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
وعن ابن عباس رضي الله عنهما قال : ( لقد رأيت رسول الله صلى الله عليه وسلم في يوم مطير وهو يتقي الطين إذا سجد بكساء عليه يجعله دون يديه ) رواه ابن حنبل في مسنده .
আমরা রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বৃষ্টিময় দিনে নামায পড়তে দেখেছি।রাসূলুল্লাহ সাঃ নিজ হাত দ্বারা দ্বারা কাদার উপর চাদর বিয়ে সিজদা করেছেন।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/ বোন!
ফ্লোরে নামায পড়াই উত্তম।শক্ততা অনুভব করা গেলে বিছানায় নামায হবে।অন্যথায় নামাযই বিশুদ্ধ হবে না।
আমাদের দেশের মসজিদ সমূহে ঠান্ডার জন্য যে কার্পেট বিছানো হয়,সেটা যদি বেশ গাঢ়তম না হয়,তাহলে নামায হবে।অন্যথায় নামায হবে না।