জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
মহিলাদের হায়েজের একটি স্বাভাবিক অভ্যাস আছে । অর্থাৎ হায়েজের রক্ত আসা শুরু হবার পর কতদিন পর তা বন্ধ হয়? যদি দশদিনের মাঝে বন্ধ হয়, যেমন ৭ দিন, ৮দিন, ৫দিন ইত্যাদি।
তাহলে যেদিন যে সময়ে বন্ধ হবে, সেদিন গোসল সেরে নামায পড়তে হবে। সাদা স্রাব আসা জরুরী নয়। বরং লাল রক্ত বন্ধ হলেই হায়েজ শেষ হয়ে গেছে বলে ধর্তব্য হবে।
আর যদি নির্দিষ্ট না থাকে, বরং দিন কমবেশি হয়, তাহলেও রক্ত বন্ধ হবার পর গোসল করে নামায পড়া আবশ্যক।
আর এক্ষেত্রে যে নামাযের সময় বন্ধ হল, যদি সেই সময় গোসল করে সেই নামাযের তাকবীর বাঁধার মত সময়ও বাকি থাকে, তাহলে উক্ত নামাযটি আদায় করা আবশ্যক হয়ে যায়। আর যদি গোসল করে তাকবীর বাঁধার মত সময় না পাওয়া যায়, তাহলে সেই নামায আদায় করা আবশ্যক নয়।
উদাহরণতঃ
যোহরের নামাযের সময় শেষ হয় সাড়ে তিনটায়। এখন আপনার হায়েজের রক্ত বন্ধ হল নির্ধারিত দিনের তিনটা সময়ে। এখন এ সময়ে যদি আপনার নিকটে পানি থাকে, তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবেই গোসল করে ফরজ পড়তে পারবন। তাই এ নামায আপনার উপর আবশ্যক হবে। আর যদি পানি না থাকে, তাহলে তায়াম্মুম করে হলেও নামাযটি আদায় করতে হবে।
কিন্তু আপনার হায়েজ বন্ধ হল তিনটা বেজে ২৫ মিনিটে। তাহলে এ পাচ মিনিটে আপনার জন্য গোসল করে নামায দাড়ানো সম্ভব নয়। তাই এদিনের যোহরের নামায আপনার উপর আবশ্যক হবে না। বরং আসরের নামায থেকে নামায পড়া আবশ্যক হবে।
আর যদি দিন নির্ধারিত না হয়, বরং দশদিন অতিক্রান্ত হয়ে যায়, অর্থাৎ দশদিনের মাঝে রক্ত বন্ধ হয় না, বরং তা দশদিনের পরও জারি থাকে, তাহলে দশদিন অতিক্রম হবার পর থেকে রক্ত ঝরলেও গোসল করে নামায আদায় করতে হবে।কারণ হায়েজের সর্বোচ্চ সময়সীমা হল ১০ দিন। এরপর রক্ত আসলে তা হায়েজের রক্ত বলে ধর্তব্য হবে না। বরং তা ইস্তিহাজা তথা অসুস্থ্যতার রক্ত বলে ধর্তব্য হবে।
(ফাতওয়ায়ে শামী-১/৪৮৯-৪৯১
আল বাহরুর রায়েক-১/৩৫৩-৩৫৫
ফাতহুল কাদীর-১/১৭৩-১৭৪)
আরো জানতে হলে পড়ুন- বেহেশতী জেওর, বা মাওলানা হেমায়েত উদ্দীন সংকলিত “ফিক্বহুন নিসা”।
فى رد المحتار- وَإِنْ) انْقَطَعَ لِدُونِ أَقَلِّهِ تَتَوَضَّأُ وَتُصَلِّي فِي آخِرِ الْوَقْتِ، وَإِنْ (لِأَقَلِّهِ) فَإِنْ لِدُونِ عَادَتِهَا لَمْ يَحِلَّ، وَتَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي وَتَصُومُ احْتِيَاطًا؛ وَإِنْ لِعَادَتِهَا، فَإِنْ كِتَابِيَّةً حَلَّ فِي الْحَالِ وَإِلَّا (لَا) يَحِلُّ (حَتَّى تَغْتَسِلَ) أَوْ تَتَيَمَّمَ بِشَرْطِهِ (أَوْ يَمْضِيَ عَلَيْهَا زَمَنٌ يَسَعُ الْغُسْلَ) وَلُبْسَ الثِّيَابِ (وَالتَّحْرِيمَةَ) يَعْنِي مِنْ آخِرِ وَقْتِ الصَّلَاةِ لِتَعْلِيلِهِمْ بِوُجُوبِهَا فِي ذِمَّتِهَا، (رد المحتار ، كتاب الطهارة، باب الحيض-1/489-491
যার সারমর্ম হলো তার অভ্যাসের দিনের আগেই যদি রক্ত বন্ধ হয়,তাহলে সে শেষ ওয়াক্তে নামাজ পড়বে,,,,
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে দুপর বেলা যদি হায়েজের রক্ত আসা শেষ হয়,তখন থেকেই হায়েজ শেষ হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে।
সেক্ষেত্রে গোসল করে নামাজ পড়ার সময় থাকলে দুপুরের নামাজও আবশ্যক হবে।
যদি রাতে হায়েজ শেষ হয়,তাহলে গোসল করে ইশার নামাজ আদায় করবে।
,
যখন রক্ত আসা শেষ তখনই হায়েজ শেষ,পুরো দিনকে হায়েজ বলার সুযোগ নেই।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ إِنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الدَّمِ - فَقَالَتْ عَائِشَةُ رَأَيْتُ مِرْكَنَهَا مَلآنَ دَمًا - فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " امْكُثِي قَدْرَ مَا كَانَتْ تَحْبِسُكِ حِيضَتُكِ ثُمَّ اغْتَسِلِي "
কুতায়বা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উম্মে হাবিবা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রক্ত সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন, তখন আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আমি তার গামলাটি রক্তে পরিপূর্ণ দেখেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ যতদিন তোমার হায়য তোমাকে বিরত রাখে, ততদিন তুমি বিরত থাক। তারপর তুমি গোসল করবে।
(নাসায়ী ৩৫৩,মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৬৬৫)