আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
464 views
in পবিত্রতা (Purity) by (11 points)
দ্বীনের অর্ধেক সময়ে অথবা রাতে স্বল্প সময়ের জন্য সামান্যতম হায়েজ দেখা দিলে কি পুরো দিনটিকে হায়েজ এর দিন ধরতে হবে যেখানে আমি নিশ্চিত আর ওই দিনের মধ্যে হায়েজ হওয়ার সম্ভাবনা নেই এবং ঐদিন ই হায়েযের শেষ দিন। দুপুর ‌এর আগে এমন হলে কি ফরজ গোসল করে দুপুরের জোহরের নামাজ পড়তে হবে, এশার আগে হলে এশার জন্য ফরজ গোসল করে এশার নামাজ পড়তে হবে?

নারীদের পবিত্রতা নিয়ে উদাসীন থাকলে সে জাহান্নামী, এমনটা শুনেছি, তাই এই নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাই।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

মহিলাদের হায়েজের একটি স্বাভাবিক অভ্যাস আছে । অর্থাৎ হায়েজের রক্ত আসা শুরু হবার পর কতদিন পর তা বন্ধ হয়? যদি দশদিনের মাঝে বন্ধ হয়, যেমন ৭ দিন, ৮দিন, ৫দিন ইত্যাদি।

তাহলে যেদিন যে সময়ে বন্ধ হবে, সেদিন গোসল সেরে নামায পড়তে হবে। সাদা স্রাব আসা জরুরী নয়। বরং লাল রক্ত বন্ধ হলেই হায়েজ শেষ হয়ে গেছে বলে ধর্তব্য হবে।

আর যদি নির্দিষ্ট না থাকে, বরং দিন কমবেশি হয়, তাহলেও রক্ত বন্ধ হবার পর গোসল করে নামায পড়া আবশ্যক।

আর এক্ষেত্রে যে নামাযের সময় বন্ধ হল, যদি সেই সময় গোসল করে সেই নামাযের তাকবীর বাঁধার মত সময়ও বাকি থাকে, তাহলে উক্ত নামাযটি আদায় করা আবশ্যক হয়ে যায়। আর যদি গোসল করে তাকবীর বাঁধার মত সময় না পাওয়া যায়, তাহলে সেই নামায আদায় করা আবশ্যক নয়।

উদাহরণতঃ
যোহরের নামাযের সময় শেষ হয় সাড়ে তিনটায়। এখন আপনার হায়েজের রক্ত বন্ধ হল নির্ধারিত দিনের তিনটা সময়ে। এখন এ সময়ে যদি আপনার নিকটে পানি থাকে, তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবেই গোসল করে ফরজ পড়তে পারবন। তাই এ নামায আপনার উপর আবশ্যক হবে। আর যদি পানি না থাকে, তাহলে তায়াম্মুম করে হলেও নামাযটি আদায় করতে হবে।

কিন্তু আপনার হায়েজ বন্ধ হল তিনটা বেজে ২৫ মিনিটে। তাহলে এ পাচ মিনিটে আপনার জন্য গোসল করে নামায দাড়ানো সম্ভব নয়। তাই এদিনের যোহরের নামায আপনার উপর আবশ্যক হবে না। বরং আসরের নামায থেকে নামায পড়া আবশ্যক হবে।

আর যদি দিন নির্ধারিত না হয়, বরং দশদিন অতিক্রান্ত হয়ে যায়, অর্থাৎ দশদিনের মাঝে রক্ত বন্ধ হয় না, বরং তা দশদিনের পরও জারি থাকে, তাহলে দশদিন অতিক্রম হবার পর থেকে রক্ত ঝরলেও গোসল করে নামায আদায় করতে হবে।কারণ হায়েজের সর্বোচ্চ সময়সীমা হল ১০ দিন। এরপর রক্ত আসলে তা হায়েজের রক্ত বলে ধর্তব্য হবে না। বরং তা ইস্তিহাজা তথা অসুস্থ্যতার রক্ত বলে ধর্তব্য হবে।
(ফাতওয়ায়ে শামী-১/৪৮৯-৪৯১
আল বাহরুর রায়েক-১/৩৫৩-৩৫৫
ফাতহুল কাদীর-১/১৭৩-১৭৪)

আরো জানতে হলে পড়ুন- বেহেশতী জেওর, বা মাওলানা হেমায়েত উদ্দীন সংকলিত “ফিক্বহুন নিসা”।

فى رد المحتار- وَإِنْ) انْقَطَعَ لِدُونِ أَقَلِّهِ تَتَوَضَّأُ وَتُصَلِّي فِي آخِرِ الْوَقْتِ، وَإِنْ (لِأَقَلِّهِ) فَإِنْ لِدُونِ عَادَتِهَا لَمْ يَحِلَّ، وَتَغْتَسِلُ وَتُصَلِّي وَتَصُومُ احْتِيَاطًا؛ وَإِنْ لِعَادَتِهَا، فَإِنْ كِتَابِيَّةً حَلَّ فِي الْحَالِ وَإِلَّا (لَا) يَحِلُّ (حَتَّى تَغْتَسِلَ) أَوْ تَتَيَمَّمَ بِشَرْطِهِ (أَوْ يَمْضِيَ عَلَيْهَا زَمَنٌ يَسَعُ الْغُسْلَ) وَلُبْسَ الثِّيَابِ (وَالتَّحْرِيمَةَ) يَعْنِي مِنْ آخِرِ وَقْتِ الصَّلَاةِ لِتَعْلِيلِهِمْ بِوُجُوبِهَا فِي ذِمَّتِهَا، (رد المحتار ، كتاب الطهارة، باب الحيض-1/489-491
যার সারমর্ম হলো তার অভ্যাসের দিনের আগেই যদি রক্ত বন্ধ হয়,তাহলে সে শেষ ওয়াক্তে নামাজ পড়বে,,,,  
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে দুপর বেলা যদি হায়েজের রক্ত আসা শেষ হয়,তখন থেকেই হায়েজ শেষ হয়েছে বলে ধর্তব্য হবে।
সেক্ষেত্রে গোসল করে নামাজ পড়ার সময় থাকলে দুপুরের নামাজও আবশ্যক হবে। 
যদি রাতে হায়েজ শেষ হয়,তাহলে গোসল করে ইশার নামাজ আদায় করবে।
,
যখন রক্ত আসা শেষ তখনই হায়েজ শেষ,পুরো দিনকে হায়েজ বলার সুযোগ নেই।   

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ، قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنْ يَزِيدَ بْنِ أَبِي حَبِيبٍ، عَنْ جَعْفَرِ بْنِ رَبِيعَةَ، عَنْ عِرَاكِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ إِنَّ أُمَّ حَبِيبَةَ سَأَلَتْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الدَّمِ - فَقَالَتْ عَائِشَةُ رَأَيْتُ مِرْكَنَهَا مَلآنَ دَمًا - فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " امْكُثِي قَدْرَ مَا كَانَتْ تَحْبِسُكِ حِيضَتُكِ ثُمَّ اغْتَسِلِي "

কুতায়বা (রহঃ) ... আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উম্মে হাবিবা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রক্ত সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন, তখন আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আমি তার গামলাটি রক্তে পরিপূর্ণ দেখেছি। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ যতদিন তোমার হায়য তোমাকে বিরত রাখে, ততদিন তুমি বিরত থাক। তারপর তুমি গোসল করবে।
(নাসায়ী ৩৫৩,মুসলিম (ইসলামিক সেন্টার) হাঃ ৬৬৫)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...