আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
128 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (7 points)
সালাম। এক বোনের হয়ে প্রশ্নটি করছি। বিয়ের সময় ও পরে আমি আর আমার স্বামী বেশ মোটা অংকের লোনের মাঝে পড়ে যাই। অনেকভাবে সেই লোন শোধ করার চেষ্টা করেও না পেরে, বেশ অনিচ্ছা সত্ত্ব্বেও আমাকে কাফের এক রাষ্ট্রে স্কলারশিপ নিয়ে আসতে হয়। এখানে দুই বছরের মতো থাকতে পারলে আমাদের মোটামুটি সব লোন পরিশোধ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। কিন্তু এখানে আমার স্বামী আসতে আগ্রহী নন। আবার লোন পরিশোধের চাপে পড়ে আমাকেও ফিরে আসতে বলতে সাহস পাচ্ছেন না। কারণ, দেশে চেষ্টা করেও আমরা এই লোন শোধ করতে পারছি না, সামনেও হয়তো পারবো না। আমি এখানে মোটামুটি ভালো পরিবেশে আছি। নিজের ওপর আস্থা রাখছি হয়তো বিপথগামী হবো না। এখন আমার মাহরামের সাথে থাকাও জরুরি আবার ঋণ পরিশোধও জরুরি। অঙ্কটা বেশ বড়ো। জানি না দেশে ফিরে গেলে কীভাবে কতদিনে এতটাকা শোধ করব। এখন আমার জন্য করণীয় কী? এমতাবস্থায় কি আমার মাহরাম ছাড়া কাফের রাস্ট্রে থাকা জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেন,

وَقَالَ: «أَنَا بَرِيءٌ مِنْ كُلِّ مُسْلِمٍ مُقِيمٍ بَيْنَ أَظْهُرِ الْمُشْرِكِينَ» قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ لِمَ؟ قَالَ: «لَا تَتَرَاءَى نَارَاهُمَا»

যে সকল মুসলিমরা মুশরিকদের মাঝে বসবাস করে, আমার ওপর তাদের কোনো দায়-দায়িত্ব নেই। সাহাবীগণ জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রসূল, এরূপ কেন? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, কেননা তাদের উচিত ছিল অনতিদূরে অবস্থান করা, যাতে একে অপরের আগুন পর্যন্ত দৃষ্টিপাত না হয়।
(আবূ দাঊদ ২৬৪৫, তিরমিযী ১৬০৪,মিশকাত ৩৫৪৭।)

وَرَوَى سَمُرَةُ بْنُ جُنْدَبٍ عَنْ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ لَا تُسَاكِنُوا الْمُشْرِكِينَ وَلَا تُجَامِعُوهُمْ فَمَنْ سَاكَنَهُمْ أَوْ جَامَعَهُمْ فَهُوَ مِثْلُهُمْ

সামুরা ইবনু জুনদাব (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “মুশরিকদের সাথে তোমরা একত্রে বসবাস কর না, তাদের সংসর্গেও যেও না। যে মানুষ তাদের সাথে বসবাস করবে অথবা তাদের সংসর্গে থাকবে সে তাদের অনুরূপ বলে বিবেচিত হবে।”
(তিরমিযী হা/১৬০৫; ছহীহাহ হা/২৩৩০, সনদ হাসান)।

https://ifatwa.info/31718/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-

আবু দাঊদ শরীফে হযরত সামুরা ইব্ন জুনদুব (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন :
ﻣﻦ ﺟﺎﻣﻊ ﺍﻟﻤﺸﺮﻛﻴﻦ ﻭﺳﻜﻦ ﻣﻌﻪ، ﻓﺎﻧﻪ ﻣﺜﻠﻪ –

“যে ব্যক্তি অমুলিমদের সাথে চলাফেরা করবে এবং তাদের সাথে বসবাস করবে, সেও তাদের অনুরূপ হবে”। (আবু দাঊদ, কিতাবুদ্দাহায়া)

★সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
কোনো ব্যক্তি যদি মুসলিম দেশে হন্যে হয়ে খোঁজাখোঁজি করা সত্ত্বেও শিক্ষা অর্জনের কোনো ব্যবস্থা করতে না পারলে, এমন পরিস্থিতিতে যদি কোনো অমুসলিম দেশে শিক্ষার সুযোগ পায়,তাহলে দু’টি শর্তে তার জন্য সেখানে যাওয়া এবং সেখান থেকে শিক্ষার্জন করা জায়েয হবে।যথাঃ-
(এক)সেখানে আমলী জিন্দিগী তথা, ইসলামী বিধি-বিধান পরিপালনে সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকতে হবে।
(দুই)সেখানকার প্রচলিত অশ্লীলতা, বেহায়াপনা-বেলেল্লাপনা থেকে নিজেকে সংযত রাখতে হবে।

সুতরাং প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জরুরী যে,তারা প্রথমে নিজ দেশ বা কোনো ইসলামী দেশে লেখাপড়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টাপ্রচেষ্টা করবে।
নারী-পুরুষ সবার জন্য একই শর্ত।তবে নারীদের জন্য পৃথক কিছু বিষয় লক্ষ্যণীয়। তারা মাহরাম ব্যতীত সফর করতে পারবে না।এবং অনিরাপদ স্থানে একাকী বসবাস করতে পারবে না।

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/3447 

মাহরাম ছাড়া সফর সংক্রান্ত জানুনঃ-

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 

প্রশ্নে উল্লেখিত বোনের জন্য এভাবে মাহরাম পুরুষ ছাড়া কাফের রাষ্ট্রে যাওয়া, থাকা,সেখান থেকে মাহরাম ছাড়া আসা কোনোটাই জায়েজ হবেনা। তিনি সে দেশে  নিজের জন্য নিরাপদ মনে করলেও এটি ঠিক হবেনা। তার স্বামী তার সাথে না থাকলে তার বাবা/ভাই/ছেলে সন্তান বা অন্য কোনো মাহরাম পুরুষ এর সাথে থাকবে। তদুপরি সে যদি মাহরাম পুরুষ ছাড়া সেখানে বৈধ কোনো চাকুরী করে,সেক্ষেত্রে তার ইনকাম হালাল হবে। তার লোন পরিশোধ করাও জায়েজ হবে। তবে মাহরাম পুরুষ ছাড়া যাওয়া ও থাকার গুনাহ হবে।  তবে সাথে নিজের অন্যান্য আত্মীয় স্বজন থাকলে ও এলাকা নিজের জন্য বেশ নিরাপদ মনে করলে এক্ষেত্রে সেখানে পূর্ণ পর্দার সহিত নিরাপদে থাকতে পারলে সেক্ষেত্রে থাকার গুনাহ হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...