আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
229 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (3 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
শেয়ার বিজনেস সম্পর্কে জানতে চাই। শেয়ার বিজনেস কি হালাল? শেয়ার মার্কেটে টাকা ইনভেস্ট করে শেয়ার কিনে (ব্যাংকের শেয়ার বা অন্যান্য) যখন শেয়ার এর মূল্য বৃদ্ধি পায়, তখন শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে উপার্জনকৃত অর্থের ব্যপারে দ্বীন কি বলে?

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 
সুনানে আবু দাউদে হযরত জায়েদ বিন ছাবীত রা. থেকে বর্ণিত আছে- 
فان رسول الله صل الله عليه و سلم نهى أن تباع السلع حيث تبتاع حتى يحوزها التجار إلى رحالهم 

‘যে জিনিস যেখানে ক্রয় করা হয়, সে জিনিসকে কবজা না করা পর্যন্ত ক্রেতার জন্য সেখানেই তা বিক্রি করে দেওয়াকে রাসুলুল্লাহ ﷺ নিষেধ করেছেন’। [সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৩৩৫৬; মুস্তাদরাকে হাকীম- ২/৪০]

ইমাম বাইহাকী রহ. হযরত হাকীম বিন হাযাম রা. থেকে বর্ণনা করেছেন- 

قلت يا رسول الله، انى ابتاع هذه البيوع فما يحل لى منها ؟ و ما يحرم على؟ قال يا ابن اخى لا تبيعن شيئا حتى تقبضه 

‘তিনি বলেন- আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর কাছে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি এই এই জিনিসের ক্রয়-বিক্রয় করি। আমার জন্য এর মধ্যে কি হালাল এবং কি হারাম? রাসুলুল্লাহ ﷺ জবাবে বললেন- ‘হে ভাতিজা! কোনো কিছুই কবজা না করা পর্যন্ত তা বিক্রি করো না’। [সুনানে বাইহাকী- ৫/৩১৩, হাদস ১০৬৮৫]

আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেছেন- 
من اشترى طعاما فلا يبعه حتى يستوفيه 

‘যে ব্যক্তি কোনো খাদ্য ক্রয় করে, সে যেন তা ‘কবজা’ না করা পর্যন্ত বিক্রি করে না দেয়’। [সহীহ মুসলীম, হাদীস ৩৭০১; সহীহ বুখারী, হাদীস ২০০৩]


হযতর হাকীম বিন হাযাম রা. বর্ণনা করেন-

 قلت يا رسول الله ، ان الرجل ليسألني فيريد منى البيع و ليس عندى ما يطلب، افأبيع منه ، ثم ابتاعه من سوق ؟ قال لا تبع ما ليس عندك 

‘আমি একবার জিজ্ঞেস করলাম- ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার কাছে মানুষ এসে কোনো কিছু কিনতে চায়। কিন্তু সে সময় যদি আমার কাছে কাঙ্খিত জিনিসটি না থাকে, তাহলে আমি কি তার কাছে জিনিসটি প্রথমে বিক্রি করে দিয়ে পরে তা বাজার থেকে কিনে তাকে দিয়ে দিতে পারবো? রাসুলুল্লাহ ﷺ জবাবে বললেন- ‘যা তোমার কাছে নেই, তা বিক্রি করো না’। [নাসায়ী, তিরমিযী, আবু দাউদঃ জামিউল উসূল- ১/৪৫৭]

তিরমিযীতে আছে, ‘হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রা. থেকে বর্নিত রাসুলুল্লাহ ﷺ এরশাদ করেন- 

لا يحل سلف و بيع و لا شرطان فى بيع و لا ربح ما لم يضمن 

ঋন ও বিক্রয় (কে একত্রিত করা), একই বিক্রিতে দুটি শর্ত লাগানো এবং যে জিনিস এখনো জামীনে (তথা মালিকানা ঝুঁকিতে) আসেনি -তার মুনাফা নেওয়া হালাল নয়’। [সুনাতে তিরমিযী, হাদিস ১২৩৪] ইমাম তিরমিযী রহ. বলেন, হাদীসটি হাসান সহীহ।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
নিম্নোক্ত শর্তে শেয়ার কেনার তথা শেয়ার বিজনেস করা (শেয়ার মার্কেটে টাকা ইনভেস্ট করে শেয়ার ক্রয়) এর
অনুমতি দেওয়া হয়েছে:

 (1) কোম্পানী বেআইনী জিনিসের সাথে জড়িত হওয়া উচিত নয়, যেমন এটি সুদ-ভিত্তিক ব্যাংক, বীমা কোম্পানি, ওয়াইন কোম্পানি ইত্যাদি না হওয়া উচিত।

 (2) কোম্পানির সমস্ত সম্পদ এবং সম্পত্তি নগদে হওয়া উচিত নয় তবে এটির কিছু হিমায়িত সম্পদ থাকা উচিত যেমন বিল্ডিং, জমি এবং কোম্পানী বিদ্যমান রয়েছে এবং এই জিনিসগুলি অবশ্যই জানা আছে।  অন্যথায়, পার্থক্য সহ বিক্রয় সুদ হবে।

 (3) যদি, কোম্পানির সদস্য হওয়ার পরে, এটি জানা যায় যে কোম্পানিটি কোন ধরণের সুদের লেনদেনের সাথে জড়িত, তাহলে কেউ তার মিটিংয়ে এর বিরুদ্ধে আপত্তি উত্থাপন করবে।

 (4) যখন মুনাফা ভাগ করা হয়, তখন প্রাপ্ত লাভের অংশ সুদের লেনদেনের মাধ্যমে সওয়াব পাওয়ার উদ্দেশ্য ছাড়াই দরিদ্রদের দিতে হবে।

 (5) শেয়ার লেনদেনের উদ্দেশ্য ব্যবসায় অংশীদারিত্ব অর্জন করা উচিত, এটি কেবলমাত্র লাভ এবং ক্ষতির সমান করে লাভ অর্জন করা উচিত নয় যেখানে শেয়ারের দখল বা দখলকে বোঝানো হয় না, যেহেতু এটি একটি জুয়া খেলা।  (সত্তা) যা হারাম।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
শেয়ার বিজনেস এ উপরোক্ত শর্তগুলো সঠিকভাবে পাওয়াও কঠিন। তা’ই বর্তমানে আমাদের দেশের শেয়ার বিজনেস এর বিকল্প কোন ব্যবসায় জড়ানোই অধিক নিরাপদ এবং এবং তা থেকে বিরত থাকা অপরিহার্য৷

(ইসলাম আওর জাদীদ মায়িশাত: ওয়া তিজারাত-১০৩-১১৪; ইসলামী ব্যাংকারী কী বুনিয়াদে-২১৬-২২১৷)

হালাল ও হারামের দৃষ্টিতে শেয়ার বিজনেস বর্তমানে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ । তাই এ থেকে বিরত থাকা উচিৎ৷

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...