ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
যে উন্মাদনার চিত্র কেয়ামতের দিনে হাশরের ময়দানে দেখা যাবে বলে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে,তাহা হলোঃ
আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে সূরা হজ্জে বলেন,
یٰۤاَیُّہَا النَّاسُ اتَّقُوۡا رَبَّکُمۡ ۚ اِنَّ زَلۡزَلَۃَ السَّاعَۃِ شَیۡءٌ عَظِیۡمٌ ﴿۱﴾
یَوۡمَ تَرَوۡنَہَا تَذۡہَلُ کُلُّ مُرۡضِعَۃٍ عَمَّاۤ اَرۡضَعَتۡ وَ تَضَعُ کُلُّ ذَاتِ حَمۡلٍ حَمۡلَہَا وَ تَرَی النَّاسَ سُکٰرٰی وَ مَا ہُمۡ بِسُکٰرٰی وَ لٰکِنَّ عَذَابَ اللّٰہِ شَدِیۡدٌ ﴿۲﴾
‘হে মানুষ! ভয় কর তোমাদের প্রভুকে। কেয়ামতের ঝাঁকুনি এক ভয়ঙ্কর ব্যাপার। সেদিন তোমরা তা দেখবে। প্রত্যেক স্তন্যদাত্রী ভুলে যাবে তার শিশুর কথা এবং প্রত্যেক গর্ভবতী গর্ভপাত করে ফেলবে। মানুষকে দেখবে তুমি মাতাল, অথচ তারা মাতাল নয়। আল্লাহর শাস্তি বড় কঠিন। (হাজ্জ/আয়াত ১.২)।
হাশরের ময়দানের অবস্থা সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনের সূরা আবাসায় বলেন, সেদিন পালিয়ে যাবে মানুষ ভাই, মাতা, পিতা স্ত্রী এবং সন্তানদের থেকে। সেদিন তাদের প্রত্যেকের হবে এমন গুরুতর অবস্থা যা তাকে সম্পূর্ণরূপে ব্যস্ত রাখবে। (আবাসা/আয়াত ৩৪-৩৭)।
এটা হাশর দিনের অবস্থা। দুনিয়াতে যেসব রক্তের সম্পর্ক, আত্মীয়তার সম্পর্কের কারণে অন্যের জন্য জীবন বিসর্জন দিতেও পরোয়া করে না। হাশরের ময়দান হবে এর ব্যতিক্রম। সেদিন সবাই নিজ চিন্তায় ডুবে থাকবে। কেউ কারও খবর নিতে পারবে না। আপনজনকে দেখলে মুখ লুকিয়ে নেবে।
আল্লাহতায়ালা সূরা বাকারায় বলেন,
وَ اتَّقُوۡا یَوۡمًا لَّا تَجۡزِیۡ نَفۡسٌ عَنۡ نَّفۡسٍ شَیۡئًا وَّ لَا یُقۡبَلُ مِنۡہَا شَفَاعَۃٌ وَّ لَا یُؤۡخَذُ مِنۡہَا عَدۡلٌ وَّ لَا ہُمۡ یُنۡصَرُوۡنَ ﴿۴۸﴾
‘তোমরা সেদিনকে ভয় কর যেদিন কেউ কারও কোনো উপকারে আসবে না, কারও কোনো সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না। কারও থেকে কোনো বিনিময় গ্রহণ করা হবে না এবং তারা কোনো সাহায্য পাবে না। (বাকারা/আয়াত ৪৮)।
আল্লাহতায়ালা পবিত্র কালামে সূরা শু’আরায় বলেন, ‘সেদিন ধনসম্পদ, সন্তানসন্ততি কোনো কাজে আসবে না। সেদিন ভাগ্যবান হবে কেবল সে, যে আল্লাহর কাছে আসবে বিশুদ্ধ আত্মা নিয়ে।’ (শু’আরায়/আয়াত ৮৮-৮৯)।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
মূলত হাশরের ময়দানে ধনসম্পদ, সন্তানসন্ততি কেউ কারো কাজে আসবেনা।
সবাই সবাইকে ভুলে যাবে।
আসল বিচার সেদিন হবে।
এটি শুধু মুসলমানদের কেনো? সমস্ত মানুষেরই হবে।
সুতরাং এটির দ্বারা প্রশ্ন করা সুযোগ নেই।
করোনাভাইরাসের মহামারী শুরুর পর কেয়ামতের করুণ চিত্র দুনিয়াতেই জীবন্ত হয়ে উঠেছিলো। যে অবস্থা, যে দৃশ্য, কিয়ামতে দেখা দিবে,তাহা আমরা অনেকটা সে সময়ে আমাদের দেশেই দেখেছি।
যাহা বর্ণনার উপেক্ষা রাখেনা।
এমনকি পিতার লাশ ডাস্টবিনে ফেলার কথাও দেশের শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা গুলোতে এসেছিলো।
সুতরাং এই বিষয় নিয়ে কাহারোই সন্দেহের অবকাশ নেই।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে প্রশ্নের উল্লেখিত ব্যাক্তির ঈমান নষ্ট হয়ে যাবেনা। তাকে নতুন করে কালেমা পড়তে ও বিবাহ পড়াতে হবেনা।
তবে তাকে এমন বেয়াদবি মূলক উক্তির কারনে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে।
কেননা এখানে সে ইসলামের কোনো জরুরি বিধান নিয়ে ঠাট্রা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেনি।
,
(০২)
এখানে ঐ স্বামী স্ত্রীর কোন গুনাহ হবেনা।
(উল্লেখ্য, স্ত্রীর উপর তার শশুর শাশুড়ির খেদমত কোনোভাবেই আবশ্যক নয়।
এটি আমাদের দেশের মেয়েরা শশুর শাশুড়ির উপর দয়া ও অনুগ্রহ হিসেবে করে থাকেন।)
(০৩)
ঘন দাড়ি যাদের তারা যদি দাড়ি খিলান না করে,এক্ষেত্রে দাঁড়ির গোড়ায় গোড়ায় যদি পানি পৌছার ব্যাপারে সে নিশ্চিত হয়,তাহলে তার অযু হবে।
আর যদি তার দাঁড়ির গোড়ায় গোড়ায় পানি পৌছে,সেক্ষেত্রে তার অযু হবেনা।
★কেউ যদি ঘন দাড়ির কারনে বলেঃ ঘন দাড়ির কারনে ওযু করা যায় না।
তাহলে তার ইমান নষ্ট হবেনা।
কেননা সে এখানে দাড়িকে নিয়ে ঠাট্রা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেনি।