আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
159 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (63 points)
১. অনেক সময় বিভিন্ন কাজ করে, বা বিভিন্ন কথা বলে আমরা মজা করে আলহামদুলিল্লাহ বলি। এর মাঝে কখনো হালাল কাজ ও থাকে কখনো হারাম কাজ ও থাকে, আমরা চাইনা এমন কাজ ও থাকে। যেমনঃ কেও বললো," আজকে মাশাল্লাহ অনেক জ্যাম" /" তোমার তো আলহামদুলিল্লাহ নামাজ কালাম পরা লাগে না"(যে নামাজ পরে না তাকে নিয়ে মজা করে.) ইত্যাদি।
তবে তখন এই শব্দ গুলো মজা করে বললেও আমাদের সুন্নত এর প্রতি ঠাট্টা বা এই শব্দ গুলোকে অপমান করার নিয়ত থাকে না। এর ফলে কি মনুষের কুফর হয়ে যাবে?

২. আমাদের এলাকায়,"আল্লাহ দিলে..." শব্দ টা ও এইভাবে খুব ব্যবহার হয়। মানে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে, হালাল হারাম ইচ্চে অনিচ্ছায়,  ১ নং প্রশ্নের মতো,  এই শব্দের প্রতি খারাপ নিয়ত না রেখে,অভ্যাস বা এমনিতেই এই শব্দ ব্যবহার করলে কি ইমানে সমস্যা হবে? (যেমনঃ আল্লাহ দিলে তোমার তো আর চিন্তা নাই ইত্যাদি)
৩. আজকে আমার পরিবারের এক সদস্য  (মেয়ে সদস্য)  বলছে "  দুইদিন শহরে ঘুরে মন মতো কোনো কাপড় পেলাম না, কিন্তু আজকে দেখি আমার মোবাইলে অনলাইন মার্কেটের হিড়িক পরে গেছে আলহামদুলিল্লাহ " এর ফলে কি তার ইমানে সমস্যা হবে?

৪. অনেক আগে আমার এক বন্ধু বলেছিলো, তাকে তার এক বন্ধু বলেছে, " তর বাবা যে এতো নামাজ পরে, রাতে উঠে তাহজুত পরে, তর বাবা বেহেস্তে না গেলে যে একটা হো* মারা খাইবো" এটা সে ঝুব হেসে বলে। আমরাও এরা শুনে হাসি, এর এই কথা বলার ভঙ্গি,আর শব্দচয়নে হাসি চলে আস, পরবর্তী তে এই ঘটনা আমি আমার পরিচিত কয়েকজনকে হেসে হেসে বলেছি যে অমুককে তমুক এভাবে বলেছে।

এইগুলোর ফলে কি আৃার ইমানে সমস্যা হবে?আমি কনফিউড আমি বিয়ের পরে এগুলো বলেছিলাম কি না" কি করবো?

৫. আমার স্টুডেন্ট কে, পরীক্ষায় দেখাদেখি না করার কথা বলায় সে বলে স্যার আপনি কি করেন না নি সত্য বলেন তো, তখন আমার হাসি চলে আসে আর তাকে বলি" তুমি এগুলো করবা না"
আমরা তো জানি এভাবে দেখাদেখি নাজায়েজ,  কিন্তু হেসে এটা বলায় কি আমার ইমানে সমস্যা হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


মহান আল্লাহকে নিয়ে, রাসুলুল্লাহ সাঃ কে নিয়ে, শরীয়তের কোনো জরুরি বিধান নিয়ে হাসি ঠাট্রা করলে ঈমান চলে যায়।
  
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

 قُلْ أَبِاللهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُوْلِهِ كُنْتُمْ تَسْتَهْزِئُوْنَ، لاَ تَعْتَذِرُوْا قَدْ كَفَرْتُمْ بَعْدَ إِيْمَانِكُمْ 

‘আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে তাঁর হুকুম-আহকামের সাথে এবং তাঁর রাসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে? ছলনা কর না, ঈমান আনার পর তোমরা যে কাফির হয়ে গেছ’ (তওবা ৬৫-৬৬)। 

 فَنَذَرُ الَّذِيْنَ لاَ يَرْجُوْنَ لِقَاءَنَا فِيْ طُغْيَانِهِمْ يَعْمَهُوْنَ 

‘সুতরাং যারা আমার সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে না, আমি তাদেরকে তাদের দুষ্টামীতে ব্যতিব্যস্ত করে রাখি’ (ইউনুস ১১)। 

এ ধরনের লোকদের সাথে উঠাবসা, চলাফেরা ত্যাগ করতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা উক্ত আচরণ পরিত্যাগ না করে। 

وَقَدْ نَزَّلَ عَلَيْكُمْ فِي الْكِتَابِ أَنْ إِذَا سَمِعْتُمْ آيَاتِ اللهِ يُكْفَرُ بِهَا وَيُسْتَهْزَأُ بِهَا فَلاَ تَقْعُدُوْا مَعَهُمْ حَتَّى يَخُوْضُوْا فِيْ حَدِيْثٍ غَيْرِهِ إِنَّكُمْ إِذًا مِثْلُهُمْ إِنَّ اللهَ جَامِعُ الْمُنَافِقِيْنَ وَالْكَافِرِيْنَ فِيْ جَهَنَّمَ جَمِيْعًا-
‘আর কুরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারী করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহর আয়াত সমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রূপ করতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গ পরিবর্তন করে। অন্যথা তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ মুনাফিক ও কাফিরদেরকে জাহান্নামে একই জায়গায় সমবেত করবেন’ (নিসা ১৪০)। 

আরো জানুনঃ- 


https://ifatwa.info/9609/ ফতোয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, 
হারাম কাজে যদি উপহাস,ঠাট্রা করে বিসমিল্লাহ বলে,তাহলে এটি স্পষ্ট কুফরী।
যদি উপহাস বা ঠাট্রার নিয়ত না থাকে,তাহলে কাফের হবেনা,তবে গুনাহগার হবে।

قال الطحطاوي في حاشيته على "مراقي الفلاح"، ص5: "والإتيان بالبسملة عمل يصدر من المكلف، فلا بد أن يتصف بحكم, فتارة يكون فرضا كما عند الذبح... وتارة يكون واجبا، على القول بأنها آية من الفاتحة, وإن كان خلاف المذهب؛ لأن الأخبار الواردة فيها مع المواظبة تفيد الوجوب، وتارة يكون سنة كما في الوضوء, وأول كل أمر ذي بال، ومنه الأكل والجماع ونحوهما, وتارة يكون مباحا كما هي بين الفاتحة والسورة على الراجح, وفي ابتداء المشي والقعود مثلا؛ لأنها إنما تطلب لما فيه شرف، صونا عن اقتران اسمه تعالى بالمحقرات وتيسيرا على العبادة, فإن أتي بها في محقرات الأمور كلبس النعال على وجه التعظيم والتبرك فهو حسن. 
وتارة يكون الإتيان بها حراما، كما عند الزنا ووطء الحائض وشرب الخمر وأكل مغصوب أو مسروق قبل الاستحلال أو أداء الضمان.
والصحيح: أنه إن استحل ذلك عند فعل المعصية، كفر، وإلا؛ لا. وتلزمه التوبة، إلا إذا كان على وجه الاستخفاف، فيكفر أيضا...
واعلم أن المستحل لا يكفر إلا إذا كان المحرم حراما لعينه، وثبتت حرمته بدليل قطعي، وإلا، فلا. صرح به في الدرر عن الفتاوي في آخر كتاب الحظر" انتهى.

সারমর্মঃ যদি হারাম কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা হালাল মনে করে,তাহলে সে কাফের হয়ে যাবে।
অন্যথায় কাফের হবেনা,তবে তওবা করা জরুরি হবে।
ঠাট্রা বিদ্রুপের নিয়তে বিসমিল্লাহ বললে কাফের হবে।  

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে এর ফলে মানুষের কুফর হয়ে যাবেনা
ঈমান চলে যাবেনা।

(০২)
এই শব্দের প্রতি ঠাট্রা বা অন্য কোনো খারাপ নিয়ত না রেখে,অভ্যাস বা এমনিতেই এই শব্দ ব্যবহার করলে ইমানে সমস্যা হবেনা।

(০৩)
এর ফলে তার ঈমানের সমস্যা হবেনা।

(০৪)
এতে তার ঈমান চলে যাবেনা।
তবে এহেন কথা বলায় তাকে তওবা করতে হবে।

আপনি বিবাহের পরে এরকম কথা বলে থাকলে আপনার ঈমান যাবেনা।
তবে আপনাকেও তওবা করতে হবে।

(০৫)
হেসে এটা বলায় আপনার ঈমানে সমস্যা হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...