আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
137 views
in পবিত্রতা (Purity) by (4 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহ।
আমি একটা দেশি বিড়াল পালি। বিড়ালটাকে আমি বাইরে কান্না করতে দেখে নিয়ে এসেছিলাম,অনেক ছোট ছিল তখন।
সময়মতো খাবার দেই আর মাঝেমধ্যে গোসলও করাই। তবে এতে আমার কোনো অপচয় হয় না। সময়েরও না,অর্থেরও না। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে,
১. আমি শুনেছিলাম "বিড়াল সবসময় পবিত্র প্রাণী "।  এটা কি সঠিক?

২. বিড়াল কোনো খাবারে মুখ দিলে, তার বিধান কি?

৩. বিড়াল কোনো পানিতে মুখ দিলে,তার বিধান কি?

৪. শুনেছি " বাইরের বিড়াল যদি জায়নামাজের ওপর দিয়ে হেঁটে যায় তাহলে বিড়ালের হাঁটার যায়গায় নামাজ পড়া যায় না। নামাজ পড়তে হলে ঐ জায়গাটুকু ভাজ করে ঢেকে রেখে পড়তে হয়"।  এটা কি সঠিক?

৫. আমার বিড়াল বাইরে যায়। প্রয়োজন সারতে বা এমনিতেও। তো ও প্রায়ই ময়লা আবর্জনার পাশে, বাড়ির পেছনের বাগানের দিকে(এখানে সবাই ময়লা ফেলে,টয়লেটও আছে,বন্যার সময় পানিতে সব ময়লা এক হয়ে যায়। তবে এই জায়গা দিয়ে সবসময় মানুষও চলাচল করে,শুকনার সময়ও,কাঁদা বৃষ্টিতেও) যায়। বিড়ালটা মাঝেমধ্যে শুকনা ধুলা ময়লা, আবর্জনার মধ্যেও বসে,গড়াগড়ি দেয়। কিন্তু ওর গায়ে আমি কখনও কোনো নাপাকি দেখিনি,গন্ধও পাই নি(মুখ থেকে মাছের গন্ধ আসে,যা বাসায় রান্না করে দিলে ও খায়)। তো আমার বিড়ালকে কোলে নিলে কি কাপড় নাপাক হয়ে যাবে? ওযু অবস্থায় কোলে নিলে কি অযু ভাঙবে? ও যেখানে ঘুমায় সে জায়গা কি নাপাক হয়?

সম্ভব হলে রেফারেন্স দিয়েন। আমার এক আত্মীয় এসব বিষয়ে সুত্রসহ জানতে চান। উনিও "বেহেস্তি জেওর" বইয়ের রেফারেন্স দিয়ে অনেক কিছু বলেছেন।

1 Answer

0 votes
by (564,330 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَن دَاوُد بن صَالح بن دِينَار التمار عَنْ أُمِّهِ أَنَّ مَوْلَاتَهَا أَرْسَلَتْهَا بِهَرِيسَةٍ إِلَى عَائِشَةَ قَالَتْ: فَوَجَدْتُهَا تُصَلِّي فَأَشَارَتْ إِلَيَّ أَنْ ضَعِيهَا فَجَاءَتْ هِرَّةٌ فَأَكَلَتْ مِنْهَا فَلَمَّا انْصَرَفَتْ عَائِشَةُ مِنْ صَلَاتِهَا أَكَلَتْ مِنْ حَيْثُ أَكَلَتِ الْهِرَّةُ فَقَالَتْ إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّهَا لَيست بِنَجس إِنَّمَا هِيَ من الطوافين عَلَيْكُم» . وَقَدْ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يتَوَضَّأ بفضلها. رَوَاهُ أَبُو دَاوُد

দাউদ ইবনু সা-লিহ ইবনু দীনার (রহঃ) থেকে তার মাতার সূত্রে বর্ণিত। তার (মায়ের) মুক্তিদানকারিণী মুনীব একবার তার মাকে কিছু ‘হারীসাহ্’ নিয়ে ‘আয়িশাহ্ (রাঃ)-এর নিকট পাঠালেন। তার মা বলেন, আমি গিয়ে তাকে সালাতরত পেলাম। তিনি তখন আমাকে (হাত দিয়ে) ইশারা করলেন, ‘তা রেখে দাও’। তখন একটি বিড়াল এলো এবং তা হতে কিছু খেল। এরপর ‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সালাত শেষ করে বিড়ালের খাওয়া স্থান থেকেই খেলেন এবং বললেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিড়াল নাপাক নয়। ওটা তোমাদের আশেপাশে ঘন ঘন বিচরণকারী জীব। তিনি [‘আয়িশাহ্ (রাঃ)] আরো বলেন, আমি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বিড়ালের উচ্ছিষ্ট (পানি) দিয়ে উযূ  করতে দেখেছি।
(সহীহ : আবূ দাঊদ ৭৬.মিশকাত ৪৮৩)

عَنْ كَبْشَةَ بِنْتِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ- وَكَانَتْ تَحْتَ ابْنِ أَبِي قَتَادَةَ - أَنَّ أَبَا قَتَادَةَ، دَخَلَ فَسَكَبَتْ لَهُ وَضُوءًا، فَجَاءَتْ هِرَّةٌ فَشَرِبَتْ مِنْهُ، فَأَصْغَى لَهَا الإِنَاءَ حَتَّى شَرِبَتْ، قَالَتْ كَبْشَةُ: فَرَآنِي أَنْظُرُ إِلَيْهِ، فَقَالَ: أَتَعْجَبِينَ يَا ابْنَةَ أَخِي؟ فَقُلْتُ: نَعَمْ . فَقَالَ: إِنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّهَا لَيْسَتْ بِنَجَسٍ إِنَّهَا مِنَ الطَّوَّافِينَ عَلَيْكُمْ وَالطَّوَّافَاتِ "

কাবশাহ বিনতু কা‘ব ইবনু মালিক (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি ছিলেন আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ)-এর পুত্রবধূ। তিনি বলেন, একদা আবূ ক্বাতাদাহ (বাহির থেকে) আসলে আমি তার জন্য অযুর পানি দিলাম। এমন সময় একটি বিড়াল এসে তা থেকে পানি পান করতে লাগল। আবূ ক্বাতাদাহ বিড়ালের জন্য পাত্রটি কাত করে ধরলেন। ফলে বিড়ালটি তৃপ্তি সহকারে পান করল। কাবশাহ বলেন, আবূ ক্বাতাদাহ দেখলেন, আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি। তিনি বললেন, হে ভাতিজী! তুমি কি আশ্চর্যবোধ করছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিড়াল নাপাক নয়। এরা সর্বদা তোমাদের কাছে ঘুরাফেরাকারী প্রাণী।

(আবু দাউদ ৭৫.তিরমিযী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ বিড়ালের উচ্ছিষ্ট সম্পর্কে, হাঃ ৯২), নাসায়ী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ বিড়ালের উচ্ছিষ্ট, হাঃ ৬৮), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, হাঃ ৩৬৭), আহমাদ (৫/২৯৬, ৩০৩, ৩০৯), মালিক (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, হাঃ ১৩)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
বিড়াল নাপাক নয়। এরা সর্বদা ঘুরাফেরাকারী প্রাণী।

(তবে বিড়াল যদি ইদুর বা নাপাকি খেয়ে আসে,সেক্ষেত্রে তার মুখ দেয়া স্থান নাপাক হবে।
তার শরীরে নাপাকি লাগলে তার শরীরের উক্ত স্থান নাপাক হবে।)

(০২)
সেই খাবার নাপাক হবেনা। পাকই থাকবে।
উক্ত খাবার খাওয়া যাবে। এক্ষেত্রে রুচি না হলে না খেলেও সমস্যা নেই।

(তবে বিড়াল যদি ইদুর বা নাপাকি খেয়ে আসে,সেক্ষেত্রে তার মুখ দেয়া খাবার,পানি নাপাক হবে।)

(০৩)
বিড়াল কোনো পানিতে মুখ দিলে সেটি পাকই থাকবে।

ভালো পানি থাকলে বিড়ালের ঝুটা পানি ব্যবহার করা মাকরূহ। তবে বিড়ালের ঝুটা-পানি ছাড়া অন্য ভালো পানি না থাকলে পবিত্রতার জন্য ঐ পানি ব্যবহার করা যাবে। কারণ বিড়ালের ঝুটা নাপাক নয়। 
(ফাতহুল কাদীর ১/৯৭; শরহুল মুনয়া পৃ. ১৬৮; আলবাহরুর রায়েক ১/১৩১)

(০৪)
এটি ঢালাওভাবে বলা সহীহ নয়।
,
তবে এক্ষেত্রে ঐ জায়নামাজে যদি নাপাকির কোনো চিন্হ বা গন্ধ পাওয়া যায়,সেক্ষেত্রে উক্ত জায়নামাজের উপর নামাজ পড়া যাবেনা।

হ্যাঁ যদি ঐ জায়নামাজে নাপাকির কোনো চিন্হ বা গন্ধ পাওয়া না যায়,সেক্ষেত্রে উক্ত জায়নামাজের উপর নামাজ পড়া যাবে।

(০৫)
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার বিড়ালকে কোলে নিলে কাপড় নাপাক হয়ে যাবেনা।
ওযু অবস্থায় কোলে নিলে অযু ভাঙবেনা।
উক্ত বিড়াল যেখানে ঘুমায় সে জায়গা নাপাক হয়না।

তবে যদি কোনো সময়ে তার শরীরে নাপাকি থাকে,আর কোলে নেয়ার কারনে আপনার কাপড়ে নাপাকির চিন্হ বা গন্ধ পাওয়া যায়,সেক্ষেত্রে আপনার কাপড় নাপাক হয়ে যাবে।

উক্ত বিড়াল যেখানে ঘুমায়,সেখানেরও একই বিধান।
যদি কোনো সময়ে বিড়ালের শরীরে নাপাকি থাকে,আর উক্ত জায়গার শোয়ার কারনে সেই জায়গায় নাপাকির চিন্হ বা গন্ধ পাওয়া যায়,সেক্ষেত্রে উক্ত জায়গা নাপাক হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...