আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
103 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (42 points)
১টা ঘরের কোনো সহস্য মারা গেলে গ্রামের দিকে সাধারণত মৃতের পরিবার রান্না বান্না করেনা৷ এক্ষেত্রে মৃতের পরিবারকে ও মৃতকে দেখতে আসা মানুষজনকে খাওয়াতে, আশেপাশের বাড়ির মানুষরা খাবার দেয়৷ এক্ষেত্রে মৃতের পরিবার নিজেরাই তাদের জন্য রান্না করে খাওয়াতে পারবে কিনা, বা লোক দিয়ে টাকা খরচ করে অন্য জায়গায় খাওয়াতে পারবে কিনা

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)
edited by
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/24324/?show=24324#q24324 নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
ঈসালে সওয়াব
ﺣﺪﺛﻨﺎ ﺇﺳﻤﺎﻋﻴﻞ ﻗﺎﻝ ﺣﺪﺛﻨﻲ ﻣﺎﻟﻚ ﻋﻦ ﻫﺸﺎﻡ ﺑﻦ ﻋﺮﻭﺓ ﻋﻦ ﺃﺑﻴﻪ ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﺃﻥ ﺭﺟﻼ ﻗﺎﻝ ﻟﻠﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺇﻥ ﺃﻣﻲ ﺍﻓﺘﻠﺘﺖ ﻧﻔﺴﻬﺎ ﻭﺃﺭﺍﻫﺎ ﻟﻮ ﺗﻜﻠﻤﺖ ﺗﺼﺪﻗﺖ ﺃﻓﺄﺗﺼﺪﻕ ﻋﻨﻬﺎ ﻗﺎﻝ ﻧﻌﻢ ﺗﺼﺪﻕ ﻋﻨﻬﺎ-
তরজমাঃ হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত, একব্যক্তি নবীজী সাঃ কে এসে বললঃআমার মা হঠাৎ মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছেন,আমি মনে করি যদি তিনি কথা বলতেন,তাহলে তিনি সদকা করতেন,আমি তার পক্ষ্য থেকে কি সদকা করতে পারব? নবীজী সাঃ তদুত্তরে বললেনঃহ্যা পারবে।তুমি তার পক্ষ্য থেকে সদকা কর।(সহীহ বুখারী-২৬০৯)

উক্ত হাদীসে মায়ের পক্ষ্য থেকে সদকা করার কথা নবীজী সাঃ বলছেন। যদি সদকার সওয়াব মায়ের কাছে না পৌছত, নবীজী সাঃ কখনো সদকার করার পরামর্শ দিতেন না।

ইবনে নুজাইম রাহ এপিট-ওপিট আলোচনা করে আরও বলেনঃ-
ﻭﺃﻣﺎ ﻗﻮﻟﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﺍﻟﺴﻼﻡ : } ﻻ ﻳﺼﻮﻡ ﺃﺣﺪ ﻋﻦ ﺃﺣﺪ ، ﻭﻻ ﻳﺼﻠﻲ ﺃﺣﺪ ﻋﻦ ﺃﺣﺪ { ﻓﻬﻮ ﻓﻲ ﺣﻖ ﺍﻟﺨﺮﻭﺝ ﻋﻦ ﺍﻟﻌﻬﺪﺓ ﻻ ﻓﻲ ﺣﻖ ﺍﻟﺜﻮﺍﺏ ﻓﺈﻥ ﻣﻦ ﺻﺎﻡ ﺃﻭ ﺻﻠﻰ ﺃﻭ ﺗﺼﺪﻕ ﻭﺟﻌﻞ ﺛﻮﺍﺑﻪ ﻟﻐﻴﺮﻩ ﻣﻦ ﺍﻷﻣﻮﺍﺕ ﻭﺍﻷﺣﻴﺎﺀ ﺟﺎﺯ ﻭﻳﺼﻞ ﺛﻮﺍﺑﻬﺎ ﺇﻟﻴﻬﻢ ﻋﻨﺪ ﺃﻫﻞ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﻭﺍﻟﺠﻤﺎﻋﺔ ﻛﺬﺍ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﺪﺍﺋﻊ ﻭﺑﻬﺬﺍ ﻋﻠﻢ ﺃﻧﻪ ﻻ ﻓﺮﻕ ﺑﻴﻦ ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﺍﻟﻤﺠﻌﻮﻝ ﻟﻪ ﻣﻴﺘﺎ ﺃﻭ ﺣﻴﺎ
তরজমাঃ নবীজী সাঃ এর ঐ হাদীস "কেউ কারো পক্ষ্য থেকে নামায/রোজা আদায় করতে পারবে না"এর অর্থ হচ্ছে কেউ কারো পক্ষ্য থেকে তার উপর আরোপিত ফরয/ওয়াজিব হুকুম- আহকাম আদায় করতে পারবে। বরং নিজ ফরয/ওয়াজিব নিজেই আদায় করতে হবে। অন্যর ফরয/ওয়াজিব আদায় করে তাকে দায় মুক্ত করানো যাবে না।
তবে নফল ইবাদতের সওয়াব জীবিত/মৃত যে কাউকে দেয়া জায়েয আছে।এবং আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মতে উক্ত সওয়াব প্রেরণকৃত ব্যক্তির কাছে গিয়ে পৌছে।(বাদায়ে সানায়ে)নফল ইবাদতের সওয়াব পৌছতে জীবিত/মৃতর কোন পার্থক্য নেই। (বাহরুর রায়েক,হজ্ব অধ্যায়;৩/৬৩) বিস্তারিত জানুন- https://www.ifatwa.info/3565

যদি দিন তারিখ ঠিক না করে,এবং জরুরী মনে না করে, মেজবানির আয়োজন করা হয়,তাহলে এটার অনুমোদন রয়েছে। কিন্তু যদি প্রচলন অনুযায়ী দিন তারিখ (তথা ৩দিনের সময় বা ৫ দিনের সময় ) ঠিক করে মেজবানির আয়োজন করা হয়,তাহলে সেটা বিদ'আত।করাও বিদ'আত এবং তাতে শরীক হওয়াও বিদ'আতে অংশগ্রহণ করা। যেহেতু আমাদের দেশে প্রচলন অনুযায়ীই এগুলো করা হয়,তাই এগুলো তে শরীক হওয়া যাবে না। যেহেতু মালিক নিজ সন্তুষ্টিতে খাওয়াচ্ছে,তাই কেউ এই প্রকারের মজবানি খেলে,খাবারের মূল্য ফিরিয়ে দিতে হবে না বা সদকাহ করতেও হবে না।

হ্যা, মৃতব্যক্তির বাড়ির খাবার পাঠানোর নিয়ম ইসলামে রয়েছে। মূলত মৃত ব্যক্তির পরিবারের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করতেই এ খাবার পাঠানোর পদ্ধতি শরীয়তে অনুমোদিত।  তবে এরজন্য কোনো দিন তারিখ নির্দিষ্ট নয়। 

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কোনো রসম_ প্রথা বা লোক দেখানো যদি উদ্দেশ্য না থাকে তাহলে মায়্যেতের ওয়ারিশরা স্বেচ্ছায় স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে গরীব দুঃখী ও উপস্থিত মানুষকে খাওয়াতে চাইলে ইসলামে তার অনুমতি রয়েছে। 

উল্লেখ্য যে, মৃত ব্যক্তির ইসালে সাওয়াবের নিয়তে দিন-তারিখ নির্দিষ্ট না করে গরিবদের খাওয়ানো বৈধ। কিন্তু আমাদের দেশে যেভাবে প্রথা বানিয়ে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে খানার আয়োজন করা হয়, ধনী-গরিব সবাইকে আমন্ত্রণ করে এক বিশাল অনুষ্ঠান করা হয়, সামাজিক কারণে অনেকে অর্থবিত্ত না থাকা সত্ত্বেও এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করতে বাধ্য হন- এসব পদ্ধতি সঠিক নয় এবং এগুলো নিঃসন্দেহে গর্হিত বিদআতমূলক কাজের মধ্যে পড়ে।

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...