بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
১. বিখ্যাত তাবেয়ি
ইমাম জুহরি (রহ.)-কে জনৈক ব্যক্তির (গোসলের হুকুম) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়,
যার গোসল করার সময় গা বেয়ে পানির ছিটা
পাত্রে পড়েছিল। উত্তরে তিনি বলেছিলেন, এতে ক্ষতির কিছু নেই। তবে গোসলের পূর্বে শরীর এবং কাপড়
থেকে বাহ্যিক নাপাকি দূর না করে গোসল করলে যদি নাপাক স্থান থেকে পানি ছিটে বালতির পানিতে
পড়ে তবে ওই পানি নাপাক হয়ে যাবে। (মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক,
হাদিস : ৩১১;
-ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/২৩)
সুতরাং ওজুর ব্যাহৃত পানি অপবিত্র নয়। যদি আপনি নিশ্চিত
হোন যে বালতিতে শুধুু অজুর পানিই আছে কোন নাপাক পানি নেই,
তাহলে শুধু উক্ত বালতির পানি ফেলে দিলেই
হবে। তবে সতর্কতা মূলক কেউ চাইলে তিন বার ধুয়ে নিতে পারে।
খ. হাদিসের স্পষ্ট বর্ণনার কারণে ব্যবহৃত পানি পবিত্র।
তবে হাদিসের ভাষ্য মতে, এই
পানি দ্বারা অজু হবে না। (বুখারি : ৫২৪৪)। ব্যবহৃত পানি বলা হয় এমন পানিকে,
যা অপবিত্রতা দূর করা বা সওয়াব অর্জনের
জন্য অজু ও গোসলে ব্যবহৃত হয়েছে। ব্যবহারকারীর শরীর থেকে আলাদা হওয়ার পর সেই পানি ব্যবহৃত
পানি বলে গণ্য হবে।
সুতরাং জেনেশুনে উক্ত পানি দ্বারা অজু করা জায়েয
নেই। তবে যদি কোন ব্যক্তি ভুলক্রমে উক্ত পানি দিয়ে অজু করে নেয় তাহলে যখন সে জানতে
পারবে যে তা অজুর পানি তখন তার জন্য আবশ্যক হবে উক্ত অজু দ্বারা পঠিত নামাজ কাযা করা।
২. জ্বী সেই ভাইয়ের
কথা সঠিক।' ব্যাংক
থেকে সুদের টাকা তুলে সোয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিতে হবে। সাধারণত হারাম টাকা তার
মালিককে ফেরত দিতে হয়। কিন্তু ব্যাংকের ক্ষেত্রে যেহেতু নির্দিষ্ট সুদদাতা বের করা
অসম্ভব, তাই
সওয়াবের নিয়ত না করে কোনো জাকাত খাওয়ার উপযুক্ত মিসকিনকে তা দান করে দিতে হবে। (আহসানুল
ফাতাওয়া : ৭/১৬, ফাতাওয়ায়ে
ফকীহুল মিল্লাত : ১০/১২৬)
কোনো অবস্থাতেই
সেই টাকা মসজিদ, মাদরাসা
বা কোনো জনকল্যাণমূলক কাজ (যেমন রাস্তাঘাট নির্মাণ, পাবলিক টয়লেট নির্মাণ) ইত্যাদিতে খরচ করা যাবে না। (ইমদাদুল
মুফতিন, পৃ.
৫৮৬, ফাতাওয়ায়ে
ফকীহুল মিল্লাত : ১০/১৩১)
৩. জান্নাতে রাসুল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে ঈসা আলাইহিস সালাম এর মা মরিয়ম আ:,
ফেরআউনের স্ত্রী আসিয় এবং মুসা আলাইহিস
সালাম এর বোন কুলসুম এর সাথে বিবাহ হওয়ার ব্যাপারে একাধিক হাদিস বর্ণিত আছে। কিন্তু
বর্ণিত হাদিসগুলো সনদগতভাবে যঈফ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো এজাতীয় ঘটনাসমূহ আক্বীদার কোন
গুরুত্বপূর্ন অংশ নয়। “এগুলি না জানলে ইমান থাকবে না বা ইমান পূর্ণ হবে না” বিষয়টি
এমন নয়। বিধায় এজাতীয় বিষয় নিয়ে খুব বেশী গবেষণা করা মোটেও উচিত হবে না।
তাই ইবনে কাসীর
রাহ. ‘আল বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ’ গ্রন্থে এ বিষয়ে কয়েকটি হাদিস বর্ণনা করার পর মন্তব্য
করেন এভাবে:
” وكل من هذه الأحاديث في أسانيدها
نظر ” انتهى
“এ হাদিসগুলোর প্রত্যেকটির মধ্যেই সমস্যা আছে।”
তবে জান্নাতবাসী
নারীদের মধ্যে আসিয়া শ্রেষ্ঠ নারীর একজন। আবদুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল
(সা.) জমিনে চারটি রেখা টেনে বলেন,
তোমরা কি জানো এটা কী? সাহাবারা
বলেন, আল্লাহ ও তার রাসুল জানেন। রাসুল (সা.) বলেন, জান্নাতবাসীর
মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ নারী হলেন— খাদিজা বিনতে
খুওয়াইলিদ, ফাতেমা বিনতে মুহাম্মদ, মারিয়াম বিনতে ইমরান ও ফেরাউনের
স্ত্রী আসিয়া বিনতে মুজাহিম।’ (মুসনাদে আহমাদ,
হাদিস : ২৯০৩)