স্বলাতে ওয়াসওয়াসা

Question

আসসালামুআলাইকুম।
১)  ইদানীং আমার স্বালাত নিয়ে খুবই সমস্যা হচ্ছে। যেমন ধরুন যোহরের ফরজ সালাত আদায় করছি। তখন ঠিকই নিয়ত করেছি কিন্তু স্বালাত শুরু করার পর ভুলে যাই আমি কি আসলেই ফরজ সালাতের নিয়ত করেছি নাকি সুন্নতের? আসলে আমি কি বলেছি।
অনেক সময় স্বালাত ছেড়ে দিয়ে পুনরায় সালাত শুরু করি। আবার অনেক সময় মনে খটকা নিয়েই সালাত চালিয়ে যাই।
এক্ষেত্রে আমার কি করা উচিত?
২) আবার মাঝে মাঝে সালাতের শেষের দিকে বা শেষ রাকাতে গিয়ে সব ভুলে যাই এতক্ষন কি কি পড়েছি? কত রাকাত পড়েছি এগুলা। আমার শুধু এতটুকু মনে থাকে যে এর আগে আমি অনেকটা সালাত আদায় করেছি।
এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি? উল্লেখ্য যে আমি স্বালাতে মনযোগ ধরে রাখার অনেক চেষ্টা করি তবুও এমন হয়ে যায়।

Answer 1

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ-

ভুমিকা

وَاعْلَمْ أَنَّ النِّيَّةَ لَا تَتَأَدَّى بِاللِّسَانِ؛ لِأَنَّهَا إرَادَةٌ وَالْإِرَادَةُ عَمَلُ الْقَلْبِ لَا عَمَلُ اللِّسَانِ؛ لِأَنَّ عَمَلَ اللِّسَانِ يُسَمَّى كَلَامًا لَا إرَادَةً إلَّا أَنَّ الذِّكْرَ بِاللِّسَانِ مَعَ عَمَلِ الْقَلْبِ سُنَّةٌ فَالْأَوْلَى أَنْ يَشْغَلَ قَلْبَهُ بِالنِّيَّةِ وَلِسَانَهُ بِالذِّكْرِ

প্রকাশ থাকে যে,নিয়ত জবান দ্বারা আদায় হয় না।কেননা নিয়ত হল, ইরাদা বা ইচ্ছার নাম।আর ইরাদা বা ইচ্ছা অন্তরের বিষয়।সেটা জবানের বিষয় না।কেননা জবান দ্বারা যা উচ্ছারিত হয়,সেটাকে 'কালাম' বলা হয়,ইরাদা বলা হয় না।হ্যা অন্তরের ইচ্ছার সাথে জবান দ্বারা উচ্ছারণ করা সুন্নাত।সুতরাং উত্তম হল,অন্তরে কাজের নিয়ত রাখা এবং সাথে সাথে জবান দ্বারা সেই নিয়তকে উচ্ছারণ করা।(আল জাওহারাতুন-নাইয়্যিরাহ-১/৪৮)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

অর্থ সহ আরবী তে মুখস্থ থাকলে ভালো।আরবীতেই বলবেন।তবে অর্থ জানা না থাকলে, মনের কথাকে বাংলাতেই জবান দ্বারা উচ্ছারণ করে নিয়ত করে নিবেন।জাযাকুমুল্লাহ। আল্লাহ-ই ভালো জানেন। বিস্তারিত জানুন- 1254

এবার মূল জবাবে আসা যাক

(১)

নামাযে রা'কাত বা সেজদা সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ হলে,যে ঐ ব্যক্তির কি এটা প্রথম হয়েছে না মাঝেমধ্যে এমন হয়।যদি প্রথমবার বা কদাচিৎ হয়ে তাহলে উনি আবার প্রথম থেকে শুরু করে নতুনভাবে পড়ে নিবেন।কিন্তু যদি কারো প্রায় এরকম সন্দেহ হয়,তাহলে উনার বিধান হলো,

"وإن كثر الشك" تحرى و "عمل" أي أخذ "بغالب ظنه" لقوله صلى الله عليه وسلم: "إذا شك أحدكم فليتحر الصواب فليتم عليه" وحمل على ما إذا كثر الشك للرواية السابقة "فإن لم يغلب له ظن أخذ بالأقل" لقوله صلى الله عليه وسلم: "إذا سها أحدكم في صلاته فلم يدر واحدة صلى أو اثنتين فليبن على واحدة فإن لم يدر اثنتين صلى أو ثلاثا فليبن على اثنتين فإن لم يدر ثلاثا صلى أو أربعا فليبن على ثلاث ويسجد سجدتين قبل أن يسلم"

যদি কারো নামাযে সংখ্যা নিয়ে প্রায় সন্দেহ হয়,তাহলে উনি তাহাররি(সঠিক বিষয়ে পৌছার জন্য চিন্তাভাবনা করা) করে গালিবে যান্ন(প্রবল ধারণা) এর উপর আ'মল করবেন।কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কেউ নামাযে সংখ্যা নিয়ে সন্দেহ করে,তাহলে সে যেন সঠিক বিষয়ে পৌছার চেষ্টা করে সে হিসেবে নামাযকে সম্পন্ন করে।তবে যদি চিন্তাভাবনার পরও কোনো সংখ্যার দিকে মনে প্রবল ধারণা না জন্মে, তাহলে সে যেন,কম সংখ্যাকে ধরে নিয়ে সেই হিসেবে নামাযকে সম্পন্ন করে।কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কেউ নামাযে সন্দেহ করে,এক রা'কাত পড়েছে না দুই রা'কাত পড়েছে? তাহলে সে যেন এক রা'কাত ধরে নিয়ে সেই হিসেবে নামাযকে সম্পন্ন করে।এভাবে দুই/তিন বা তিন/চার নিয়ে সন্দেহ হলে কম সংখ্যাকে ধরে নিয়ে সে দদধনামাযকে সম্পন্ন করবে।এবং শেষে যেন সে সেজদায়ে সাহু দেয়।(মারাকিল ফালাহ-১/৪৭৭)

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- 1787

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

আপনি তাহাররি করে নামাযকে সম্পন্ন করবেন।এবং পরবর্তীতে সাহু সিজদা দিবেন।

(২)এক্ষেত্রে তাহাররি তথা চিন্তা গবেষনা করার পরও যদি কোনো দিক-দিশা না পান,তাহলে নতুন করে আবার নামায পড়ে নিবেন।আর চিন্তাভাবনা করার পর যদি মনে হয়ে যায়,তাহলে এভাবেই নামায পড়ে নিবেন।এবং শেষে সাহু সিজদা দিয়ে দিবেন।