আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
456 views
in সালাত(Prayer) by (24 points)
আমি সাধারনত ঘুমানোর আগে বিতর আদায় করে ঘুমাতে যাই। গতকাল রাতে কোন কারনে আমার বিতর এর কথা মনে ছিল না। আমার যে বিতর কাযা হয়েছে, সেটা আমার খেয়াল হয় যুহর এর  ওয়াক্তে। এমন অবস্থায় আমার করনীয় কি? আমি কিভাবে কাযা আদায় করব ?

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
বিতিরের কাযা রয়েছে।যেভাবে তাকে তার ওয়াক্তে আদায় করতে হয় সেভাবে তার কাযা পড়তে হবে।এক্ষেত্রে হানাফি মাযহাব মত আদ্বা এবং কাযার মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই।(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যা-৭/৩৬৬)

বিতিরের ক্বাযা সম্পর্কে রদ্দুল মুহতার গ্রন্থে বর্ণিত রয়েছে,
وَكَذَا حُكْمُ الْوِتْرِ) لِأَنَّهُ فَرْضٌ عَمَلِيٌّ عِنْدَهُ خِلَافًا لَهُمَا
এ সম্পর্কে ইমাম আবু হানিফা রাহ এর কথা হ্যা অবশ্যই জরুরী। কেননা তা ফরযে আ'মলী।
এবং সাহেবাইন রাহ এর মতে ফরযে আ'মলী।রদ্দুল মুহতার-২/৭৩আল্লাহ-ই ভালো জানেন।বিস্তারিত জানুন- 629

বিতির নাময তিন রা'কাত।তাই কা'যা হয়ে গেলে তিন রা'কাতই কা'যা করতে হবে।মালিকি মাযহাব অনুযায়ী, কারো বিতিরের নামায কা'যা হয়ে গেলে ফজরের নামাযের আগ পর্যন্ত পড়তে হবে।যদি সে ফজরের নামাযকে পড়ে নেয়,তাহলে এর পর আর বিতিরের কা'যা নেই।শা'ফেয়ী মাযহাব মতে,বিতিরকে কা'যা করা মু্স্তাহাব।হাম্বলী মাযহাব মতে, কাযা করা মুস্তাহাব।এবং যখন কা'যা করা হবে,তখন জোড় সংখায় কা'যা করা হবে।হানাফি মাযহাব মতে
বিতির নামাযকে কা'যা করা ওয়াজিব।যেমন ইবনে আবেদীন শামী রাহ লিখেন,
فى تنوير الأبصار- وكذا حكم الوتر
وقال ابن عابدين، لأنه فرض عملى عنده (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب قضاء الفوائت-2/73، سعيد)
মসজিদের বা জনসম্মুখে বিতিরকে কা'যা করলে হাতু উত্তোলন করে কুনুত করা যাবে না।
যেমন রদ্দুল মুহতারে বর্ণিত রয়েছে- 
أما في القضاء عند الناس فلا يرفع حتى لا يطلع أحد على تقصيره. اه
বিতিরের নামাযকে যদি মসজিদে বা জনসম্মুখে কা'যা করা হয়,তাহলে কুনুতের সময় তাকবীর অবশ্যই বলা যাবে, তবে হাত উত্তোলন করা যাবে না।

হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত,
، قالت أمّ المؤمنين عائشة -رضي الله عنها- أنّ النبيّ صلّى الله عليه وسلّم: (كان إذا غلبه نومٌ أو وجَعٌ عن قيامِ الليلِ صلَّى من النهارِ ثِنتي عشرةَ ركعةً)
রাসূলুল্লাহ সাঃ এর যখন বেশ ঘুম চলে আসতো বা শারিরিক ক্লান্তি কারণে কিয়ামুল লাইল করতে পারতেন না তখন দিনে বার রা'কাত নামায পড়ে নিতেন।(সহীহ মুসলিম-৭৪৬)

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
وفي الفتاوى رجل يقضي الفوائت فإنه يقضي الوتر وإن لم يستيقن أنه هل بقي عليه وتر أو لم يبق فإنه يصلي ثلاث ركعات ويقنت ثم يقعد قدر التشهد ثم يصلي ركعة أخرى فإن كان وترا فقد أداه وإن لم يكن فقد صلى التطوع أربعا ولا يضره القنوت في التطوع
ফাতাওয়ার কিতাব সমূহে বর্ণিত রয়েছে,একজন ব্যক্তি সে তার জীবনের ছুটে যাওয়া নামায সমূহের কা'যা করতেছে।তাহলে সে বিতিরেরও কা'যা করবে।যদি নিশ্চিত না থাকে যে,তার উপর কোনো বিতির কা'যা রয়েছে কি না?তাহলে সে তিন রা'কাত কা'যা পড়বে,এবং কুনুত করবে।অতঃপর তাশাহুদ পরিমাণ সময় বৈঠক করবে।অতঃপর আরো এক রাকাত পড়বে।যদি সেটা বিতির হয়ে থাকে, তাহলে সেটা আদায় হয়ে যাবে।আর যদি বিতির না হয়ে থাকে,তাহলে তো সে চার রাকাত পড়েই নিয়েছে যা নফল হিসেবে গণ্য হবে।নফল নামাযে কুনুত করাতে কোনো সমস্যা নেই।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/১২৫)

ذهب الحنفية إلى أن من طلع عليه الفجر ولم يصل الوتر يجب عليه قضاؤه، سواء أتركه عمدا أم نسيانا وإن طالت المدة، ومتى قضاه يقضيه بالقنوت. فلو صلى الصبح وهو ذاكر أنه لم يصل الوتر فصلاة الصبح فاسدة عند أبي حنيفة لوجوب الترتيب بين الوتر والفريضة 
হানাফি মাযহাব মতে যদি কারো সামনে ফজরের ওয়াক্ত শুরু হয়ে যায,এবং সে বিতির পড়তে না পারে,তাহলে তার উপর বিতিরের কা'যা ওয়াজিব।চায় সে ইচ্ছাকরে বিতিরকে কা'যা করুক বা অনিচ্ছায় কা'যা হোক।চায় কা'যা হওয়ার পর অনেক লম্বা সময় অতিবাহিত হয়ে যাক।যখনই কা'যা করা হবে, তখন কুনুত সহ কা'যা করা হবে।যদি বিতির কা'যা হয়েছে,সেটা স্বরণে থাকা সত্তেও কেউ ফজরের নামায পড়ে নেয়,তাহলে ইমাম আবু-হানিফার মাযহাবমতে তার ফজর ফাসিদ হয়ে যাবে।কেননা বিতির এবং ফরয নামাযের মধ্যে তারতিব ওয়াজিব(তবে যদি সে সাহেবে তারতিব না হয়,তাহলে তার নামায ফাসিদ হবে না)(আল-মাওসুআতুল ফেকহিয়্যাহ-২৭/৩০১) আরো বর্ণিত রয়েছে-আহসানুল ফাতাওয়া-৪/১৮,ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-৭/৩৬৬

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
বিতিরের কা'যা নিয়ে মতপার্থক্য বিদ্যমান রয়েছে।হানাফি মাযহাব অনুযায়ী বিতিরের কায়া তিন রাকাতই আদায়ের মত করতে হবে।আল্লাহ-ই ভালে  জানেন।বিস্তারিত জানুন- 2053


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

–1 vote
1 answer 554 views
...