আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
221 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
edited by
আমি ভার্সিটিতে পড়াশোনা করা অবস্থায় আছি, কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং এ। আমি আমার জীবনে ইসলামের সকল বিধি বিধানকে নিজের জন্য একদম বাধ্যতামূলক করে নিয়েছি আর যেগুলো পেরে উঠছি না, সেগুলো চেষ্টা করে যাচ্ছি। উল্লেখ্য আমি জেনারেল ব্যাকগ্রাউন্ডের ছাত্র।

ভার্সিটিতে এত শক্ত ভাবে ইসলাম মেনে চলা কঠিন সেটা খুব টের পাচ্ছি। এবং এখানে একই ক্লাসে ছেলে মেয়ে একসাথে পড়ে। আমি আমার জীবন সঙ্গী হিসেবে এমন কাউকে চাই যার কাছে জীবনের সকল কিছুর চাইতে ইসলাম গুরুত্বপূর্ণ।
আমার পরিবার এত নিখুঁত ভাবে আমার জন্য মেয়ে খুজবে বলে আমার মনে হয় না কারণ আমার পরিবার এত বেশি জোর দিয়ে ইসলাম মানে না। আমার ক্লাসে এক মেয়ে আমাকে মেসেজে বলেছে সরাসরি সে আমাকে বিয়ে করতে চায় শুধু মাত্র ইসলাম মেইন্টেইন করার জন্য। অন্যদিকে সে মেয়েটি ক্লাসে অন্যদের মত ফ্রিমিক্সিং এবং বেপর্দায় চলে না। উপরদিয়ে যত টুকু বোঝা যায় ইসলাম মেনে চলার চেষ্টা করে।  আমি তাকে উত্তরে বলেছি ঠিক আছে, আপনার কথা সময় মত কনসিডার করবো অর্থাৎ ভবিষ্যতে বিয়ের সময় তাকেও দেখবো। এবং কিছুদিন পর আবার আমাকে জিজ্ঞেস করেছে মেসেজে কবে আমার বিয়ে করার প্ল্যান। আমি বলেছি ২-৩ বছর পরে। এবং সে জিজ্ঞেস করেছে আমি তাকে বিয়ে করতে চাই কি না। আমি তাকে ইসলাম রিলেটেড কিছু প্রশ্ন করলাম পর্দা, ইসলাম কে কঠোর ভাবে মেনে চলা ইত্যাদি নিয়ে। সে বলেছে সে এমন টাই চায়।  এবং ইসলাম মানতে সে সর্বোচ্চ পরিমানে ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। আমি উত্তরে বলেছি তাহলে আমি রাজি হবো যদি আপনার কথা সত্য হয়। অন্যদিকে আমি একটা ইসলামিক ফেসবুক পেজে কুরআন আর হাদিস সহ প্রায় ই কিছু ইসলামিক কন্টেন্ট শেয়ার করি। এবং আমি আমার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে কিছু লেখালিখি করি বেশিরভাগ ই ইসলাম বিষায়ক। আর সে মেয়ে ফেসবুকে আমার লেখা ফলো করে৷ আমি যদি মনে করি কোন সময় যে তার থেকেও ভালো একজন মেয়ে পেয়েছি বিয়ের জন্য, তাহলে আমার কি তাকে ত্যাগ করা ঠিক কাজ হবে? আর সে যে আমাকে ফেসবুকে ফলো করে, এটা ইসলামের দৃষ্টিতে কেমন? উল্লেখ্য তার সাথে আমার কমেন্টে বা মেসেজে কোন কথা হয় না।

আমি হারাম থেকে খুব সতর্ক থাকতে চাই। যখন তাকে আমি ইসলামিক বিভিন্ন প্রশ্ন করছিলাম, প্রায় মনে হয়েছিলো এ যেন  বেদরকারি কথাও বলা হয়ে যাচ্ছে। তাই আমি সিন্ধান্ত নিয়েছি ব্লক করে রাখবো মেসেজ থেকে। সেও এই বিষয়ে একমত যে ব্লক করে রাখা উচিত নতুবা বার্তি কথা হতে পারে। কিন্তু সে চায় আমার প্রোফাইলে ফলো লিষ্টে থাকতে। এতে সে কোন সমস্যা দেখছে না। আমার কি তাকে সব কিছু থেকেই ব্লক করে রাখা উচিত? নাকি ছাড় দেওয়া উচিত। আর তার কথায় আমার মনে হয়েছে এমন মেয়ে পাওয়া খুব কঠিন ব্যাপার। তাই তাকে বিয়ে করতে চাই। আমি কি ধরণের সতর্কতা অবলম্বন করতে পারি বিয়ের আগে পর্যন্ত? একটু সাজেশন দিবেন

1 Answer

+1 vote
by (572,970 points)
edited by
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

উক্ত আয়াত সমূহে পরিস্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে, আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। যা পরিস্কার ভাষায় জানাচ্ছে যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বা সামনা সামনি প্রয়োজন ছাড়া তাদের সাথে কথা বলা জায়েজ নয়।
দ্বীনী বা বৈধ কোন জরুরী বিষয় থাকলে পর্দা মেইনটেইন করে কম কথায় শেষ করে নিবে। অযথা কথা বলা হারাম।

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তার সাথে আপনার যেহেতু কোনো প্রয়োজনীয় কথা নেই,তাই আপনি তার সাথে কোনো কথাই বলবেননা।
এসবই ফিতনার দিকে নিয়ে যাবে।

ফেসবুকে কথা হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় ব্লক করে রাখার সিদ্ধান্ত সঠিক।
আপনি যদি বিবাহের ক্ষেত্রে অন্য মেয়ে পেয়ে বিবাহ করেন,এক্ষেত্রে সমস্যা নেই।
কেননা বর্তমান মেয়েটির সাথে আপনার বিবাহের ওয়াদা বা এ জাতীয় কথা আসলে শরীয়তে কোনো ধর্তব্য রাখেনা।

এহেন ওয়াদাই নাজায়েজ, তাই নাজায়েজ ওয়াদা উপেক্ষা করে অন্য মেয়েকে বিবাহ করাতে সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+1 vote
1 answer 447 views
...