আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
508 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (25 points)
retagged by
যেমন: সূরা মূলক এর ৫ নং আয়াতে "ঝাইয়ান্না" অর্থ "আমরা সাজিয়েছি"।এখানে আমরা দিয়ে কী বোঝানো হচ্ছে?

1 Answer

+1 vote
by (565,890 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরত সহ কুরআন শরীফের অসংখ্য জায়গায় "আমরা" বলা হয়েছে।
যেমন আল্লাহ তায়ালার বাণীঃ     

وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلَائِكَةِ اسْجُدُوا لِآَدَمَ فَسَجَدُوا إِلَّا إِبْلِيسَ (البقرة 34:2)
وَقُلْنَا يَا آَدَمُ اسْكُنْ أَنْتَ وَزَوْجُكَ الْجَنَّةَ وَكُلَا مِنْهَا رَغَدًا حَيْثُ شِئْتُمَا (البقرة ২: ৩৫)
قُلْنَا اهْبِطُوا مِنْهَا جَمِيعًا (البقرة ২: ৩৮)
قُلْنَا يَا نَارُ كُونِي بَرْدًا وَسَلَامًا عَلَى إِبْرَاهِيمَ  (الأنبياء 69:21)
وَقُلْنَا مِنْ بَعْدِهِ لِبَنِي إِسْرَائِيلَ اسْكُنُوا الْأَرْضَ                                                         (الإسراء1104:17 )
وَقُلْنَا لَهُمُ ادْخُلُوا الْبَابَ سُجَّدًا  (النساء 154:4)
 وَقُلْنَا لَهُمْ لَا تَعْدُوا فِي السَّبْتِ (النساء 154:4)

-
 فَفَتَحْنَا أَبْوَابَ السَّمَاءِ بِمَاءٍ مُنْهَمِرٍ (سورة القمر 11:54)
نَحْنُ نَعْلَمُهُمْ سَنُعَذِّبُهُمْ مَرَّتَيْنِ ثُمَّ يُرَدُّونَ إِلَى عَذَابٍ عَظِيمٍ  (سورة التوبة 101:9)

একথা বাস্তব সত্য এই যে, আল্লাহর কালাম কুরআনুল কারীমের যথাযথ তরজমা করা কোনো মানুষের পক্ষেই সম্ভব নয়। কারণ কুরআন হলো كلام معجز (অক্ষমকারী কালাম),যার সমতুল্য ছোট একটি সূরাও তৈরি করা সম্ভব নয়। মূল আরবী ভাষায়ও সম্ভব নয় এবং অন্য কোনো ভাষায়ও সম্ভব নয়। 

জিন ও ইনসান মিলেও যদি চেষ্টা করে তবু নয়। তাছাড়া কুরআন হল আরবী নযম ও শব্দ এবং অর্থ ও মর্মের সমষ্টি। কুরআনের অন্যতম প্রধান ‘ইজায’ ও অলৌকিকত্ব হল তার বালাগাত-ফাসাহাত অর্থাৎ ভাষার অনন্য সাধারণ বিশুদ্ধতা, অলংকারময়তা, গতি-স্বাচ্ছন্দ্য, ধ্বনি-গাম্ভীর্য ও ব্যঞ্জনা। তাই কুরআনের ঐসব অনন্য বৈশিষ্ট্য ও আবেদন তরজমার ভাষায় প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়।

সে কারণেই সাধারণভাবে আমরা যদিও বলি, ‘তরজমাতুল কুরআন’ কিন্তু আরবের সুবিজ্ঞ আলিমগণ অতি গভীর ও সূক্ষ্ম চিন্তা থেকে অতিরিক্ত শব্দ যোগ করে বলে থাকেন:
ترجمة معاني القرآن الكريم বা  ترجمة تفسير القرآن الكريم

★তারপরেও মুফাসসিরিনে কেরামগন উক্ত প্রশ্নের উত্তরে বলে থাকেন যেঃ
আল্লাহ তাআলার কালাম কুরআনুল কারীমের ভাষা হচ্ছে খাঁটি ও বিশুদ্ধ আরবী ভাষা। 

কুরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন : وهذا لسان عربي مبين (আর এটা সুস্পষ্ট আরবী ভাষা)। অর্থাৎ এই আরবী কুরআনের ভাষা হল, আরবী ভাষার অনন্য সাধারণ বাকরীতিসম্মত এবং আরবীর অনুপম অলংকার ও সাহিত্যগুণসম্পন্ন।

সুতরাং কুরআনে কারীমে আল্লাহ তাআলার শানে যে ‘যমীরে মুতাকালিস্নম’ বা বক্তাপক্ষের কোথাও একবচনের সর্বনাম, কোথাও বহুবচনের সর্বনাম এবং কোথাও পাশাপাশি একবচন ও বহুবচনের সর্বনাম ব্যবহার হয়েছে, তা আরবী বাকরীতি ও অলংকারসম্মত হবে বৈকি। 

আল্লাহ তাআলা সব দিক থেকে এক অদ্বিতীয় ও ‘লা-শারীক’-এই বিবেচনায় তাঁর সম্বন্ধে একবচনের সর্বনাম ব্যবহার হতে পারে। আবার আল্লাহ তাআলা হলেন মহামহিম, সার্বভৌমত্বের মালিক এবং সকল গুণাবলীর আধার- এই মহিমা ও গুণাবলীর বহুত্ব বরং অসীমতা ও অপরিমেয়তার বিবেচনায় তাঁর সম্বন্ধে বহুবচনের যমীর ও সর্বনাম ব্যবহার হতে পারে।
আরবী ভাষায় কোনো মহান ও সম্মানিত ব্যক্তির জন্য বহুবচনের ব্যবহার সুপরিচিত।

 এটিকে সম্মানার্থে বহুবচন বলা হয়।
প্রায় সব রকম ভাষাতেই এটার প্রচলন রয়েছে।
এটিকে অনেক আরবী ভাষাবিদ ‘বহুবচন’ না বলে ‘মহিমাজ্ঞাপক একবচনের সর্বনাম’ বলেছেন। তাঁদের ভাষায় এর নাম হলো: ضمير العظمة، نون العظمة، ضمير المتكلم المعظم نفسه، ضمير المتكلم الواحد المطاع، لفظ المتكلم المطاع ইত্যাদি।

(তাফসীরুল বাহরিল মুহীত, আবূ হাইয়ান আন্দালুসী (মৃত্যু : ৭৪৫ হি.) (সূরা বাকারা : ৩৪,৩৯); আল কাশশাফ, জারুল্লাহ যমখশারী (মৃত্যু : ৫৩৮ হি.) সূরা ত্বহা : ১-৪,৫৩); রুহুল মাআনী, আলস্নামা মাহমুদ আলূসী, (মৃত্যু : ১২৭০ হি.) (সূরা আলে ইমরান : ৮৪, সাজদা : ১৩, হিজর : ১২, কাসাস : ৯); আল মুযহির ফি উলূমিল লুগাহ ওয়া আনওয়ায়িহা, সুয়ূতী : ১/৩৩৩; আন নাহবুল ওয়াফী (যমীরের আলোচনা); আল মু‘জামুল ওয়াসীত (‘নাহনু’ মাদ্দা)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...