আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
181 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম
আমি রিসেন্টলি একটা কোর্সের জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছি, যিনি কোর্স টা করাবেন উনি আজ কিছু সোর্সের নাম শেয়ার করেছেন এবং তিনি আমাদের কোর্সটা কম্প্লিট করতে সেগুলোর সাহায্য নিবেন। কিন্তু তার মধ্যে একটা দেখলাম একজন ফরেনার এর ভিডিও যেটা লিগ্যালি সাবস্ক্রাইব করতে বেশকিছু টাকা লাগে তবে ইলিগ্যালি সেটা অল্পদামে বা ফ্রিতে পাওয়া যায় যেটা অনুমোদিত না, তো উনি সেখান থেকে ভিডিও দেখে এবং কিছু বৈধ সোর্স থেকে লেকচার প্রস্তুত করে এই ফ্রি কোর্সটি করাবেন।যেহেতু তার সোর্সগুলোর মধ্যে ২/১ টা ইলিগ্যাল সোর্স আছে যেটা থেকে সাহায্য নিয়ে সে আমাদেরকে পড়াবে তাহলে তার কাছে পড়া কি জায়েজ হবে?

1 Answer

0 votes
by (708,200 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
وَتَعَاوَنُواْ عَلَى الْبرِّ وَالتَّقْوَى وَلاَ تَعَاوَنُواْ عَلَى الإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ وَاتَّقُواْ اللّهَ إِنَّ اللّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ
সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা।(সূরা মায়েদা-০২)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এমন ব্যক্তির নিকট আপনি পড়বেন না।যখন কেউ উনার কাছে পড়বে না। তখন উনি আর এরকম ইলিগ্যালি বিষয়ে জড়িত হবেন না।

প্রশ্ন হয়,স্বত্বকে কি সংরক্ষণ রাখা যায়,
এ সম্পর্কে আমরা পূর্বে একটি ফাতাওয়ায় লিখেছি যে,

ফেকহী মাকালাত (আল্লামা তাকী উসমানী দাঃবাঃ)-১/২৩৬ এ বর্ণিত রয়েছে।তথা সত্ত্বর ক্রয়-বিক্রয় এবং অন্যান্য সম্পত্তির মত সত্ত্ব সংরক্ষিত কি না? সে সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা রয়েছে।
আমি নিম্নে সারসংক্ষেপ মূলক কিছু আলোচনা তুলে ধরছি।প্রয়জনে উক্ত কিতাবকে অধ্যয়ন করা যেতে পারে।

আবিস্কার এবং প্রকাশনা সত্ত্বের ক্রয়-বিক্রয়

আবিস্কার সত্ত্ব এমন একটি সত্ত্বকে বলা হয়, যা প্রচলিত নিয়মানুসারে কিংবা আইনগত দিক দিয়ে ওই ব্যক্তির অনুকূলে থাকে,যে ব্যক্তি নতুন কোনো জিনিষ আবিস্কার করেছে বা কোনো জিনিষের নতুন আকৃতি বা রূপ দান করেছে।আর আবিস্কার সত্ত্বের অর্থ হল,এককভাবে ওই ব্যক্তির জন্যই নিজের আবিস্কৃত জিনিষ বানানোর এবং বাজারজাত করার অধিকার থাকবে।আবার কোনো কোনো সময় আবিস্কারক তার আবিস্কার সত্ত্ব অন্য কারো কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর সত্ত্ব ক্রয়কারী তখন আবিস্কারকের মত বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ওই জিনিষ প্রস্তুত করে থাকে।এমনিভাবে কোনো ব্যক্তি যদি কোনো কিতাব, বই লিখে কিংবা সংকলন করে, তাহলে ওই কিতাব-বই, প্রকাশ-প্রচার ব্যবসায়িক ভিত্তিতে বাজারজাত করার অধিকার লেখক বা সংখকলকের জন্য সংরক্ষিত থাকে।আবার কোনো কোনো সময় কিতাবের লেখক ওই সত্ত্ব অন্যের কাছে বিক্রয় করে দিয়ে থাকে।আর ওই সময় ক্রেতা এই কিতাবের প্রকাশ-প্রচার এবং ব্যবসা-বাণিজ্য করার সত্ত্বাধিকারী হয়ে যায়।যে অধিকার পূর্বে লেখকের ছিল,সেই অধিকার চলে আসে ক্রেতার নিয়ন্ত্রণে।

এ ক্ষেত্রে আমাদের প্রশ্ন হল এই যে,
আবিস্কার সত্ত্ব, লেখার সত্ত্ব এবং প্রকাশনা সত্ত্বের ক্রয়-বিক্রয় শরীয়তের দৃষ্টিতে জায়েয হবে কি?
এই ব্যাপারে সমকালীন ফুকাহায়ে কিরামের মধ্যে দুইটি অভিমত পরিলক্ষিত হয়।কোনো কোনো ফুকাহায়ে কিরাম এ জাতীয় সত্ত্বের ক্রয়-বিক্রয় কে জায়েয বলেছেন।আবার কোনো কোনো ফুকাহায়ে কিরাম এ জাতীয় সত্ত্বের বেচাকেনাকে নাজায়েয বলেছেন।
এ ব্যাপারে মৌলিক প্রশ্ন হল এই যে,আবিস্কার লেখা ও প্রকাশনা সত্ত্বকে কি ইসলামী শরীয়ত সত্ত্ব হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে?

এই মৌলিক প্রশ্নের উত্তর হল এই যে,
যে ব্যক্তি সর্বপ্রথম কোনো জিনিষ আবিস্কার করেছে,তার আবিস্কৃত জিনিষ অস্তিত্বমান বস্তু হোক বা অস্তিত্বহীন, নিঃসন্দেহে সেইব্যক্তি অন্যের তুলনায় তা থেকে উপকৃত হওয়ার, প্রস্তুত করার এবং মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যে বাজারজাত করার বেশী অধিকারী।কেননা, আবু দাউদ শরীফে হযরত আসমুর ইবনে মুদরাস (রা.) থেকে একটি হাদীসে বর্ণিত হয়েছে যে, 'আমি নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দরবারে হাজির হয়ে তার হাতে বাইআত গ্রহণ করি।এ সময় নবী আকরাম সাল্লাল্লাহু অালাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,' যে ব্যক্তি ওই বস্তুর দিতে অগ্রসর হল, যে বস্তুর দিকে কোনো মুসলমান অগ্রসর হয় নাই,তাহলে ওই বস্তু ওই ব্যক্তির।(যে ওই দিকে প্রথম অগ্রসর হয়েছে।)আবু-দাউদ:৪/২৬৪ হাদীস নং২৯৪৭)

আল্লামা মুনাবী রাহ[আব্দুর রউফ আল মুনাবী, মৃত্যু:১০৩১হি,] যদিও এই হাদীসটিকে পতিত ও অনাবাদী জমিন ব্যবহারযোগ্য করে গড়ে তোলার অর্থে প্রয়োগের বিষয়কে প্রধান্য দিয়েছেন, তথাপি তিনি কোনো কেনো উলামায়ে কেরাম থেকে এ বর্ণনাও উদ্ধৃত করেছেন যে,এই হাদীসটির মর্মে যাবতীয় ঝরণা, কূপ এবং খণিজসম্পদ অন্তর্ভুক্ত। আর যে ব্যক্তি এসবের কোনো একটিতে প্রথম অগ্রসর হবে,ওই জিনিসটির সত্ত্বাধিকারী ওই ব্যক্তিই সাব্যস্ত হবে।এ বিষয়ে কোনো সংশয় নেই যে,যে কোনো বাক্যে শব্দের ব্যাপকতাই গ্রহণযোগ্য হয়ে থাকে,তা কোনো নির্দিষ্ট কারণের প্রেক্ষিতে বলা হলেও সেই কারণের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ হয় না।(ফায়জুল কাদীর:৬/১৩৮)



প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম যে,কোনো কিতাব নতুন হেক বা পুরাতন হোক,সংরক্ষিত প্রকাশনায় প্রকাশকের অনুমতি ব্যতীত ঐ প্রকাশনার কোনো কপি করা যাবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...