আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
167 views
in সালাত(Prayer) by (12 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওরহমাতুল্লাহি ওবারকাতুহু

প্রশ্নঃ

দুই রাকাত বিশিষ্ট নামাজে যদি এক রাকাত নামাজ আদায় করে বসে আর বসাটা তিন তাসবিহ পরিমান হয়নাই ।

কিন্তু এর ভিতরে পিছন থেকে মুক্তাদী গন তাকবির দেয় ।

এখন আমার জানার বিষয় হলো মুক্তাদিগনের এই তাকবিরের কারনে কি ইমাম সাহেবেকে সাহু সিজদা দিতে হবে ?

আর যদি দিতে হয় তাহলে কারন টা কি।

একটু জানালে ভালো হয় ।

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

প্রথম রাকাত বা তৃতীয় রাকাতের পর যদি ভুলে কেউ বসে যায় তাহলে তিন তাসবীহ তথা তিনবার سبحان الله বলার পরিমাণ বিলম্ব হলেই সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়। অন্যথায় সাহু সিজদা ওয়াজিব নয়। (রদ্দুল মুহতার ২/৯৪; আল বাহরুর রায়েক ২/১৭৩; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী পৃ. ২৫৮)

আবদুল্লাহ্ ইবনু বুহায়নাহ্ (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) জোহরের দু্ই রাকাত আদায় করে দাঁড়িয়ে গেলেন। দু্ই রাকাতের পর তিনি বসলেন না। সালাত শেষ হয়ে গেলে তিনি দুইটি সিজদা করলেন এবং অতঃপর সালাম ফেরালেন। (বুখারি, হাদিস : ১১৫২; ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

আবদুল্লাহ্ (রা.) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসুল (সা.) জোহরের পাঁচ রাকাত আদায় করলেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, নামাজ কি বৃদ্ধি করা হয়েছে? তিনি বললেন, এ প্রশ্ন কেন? (প্রশ্নকারী) বললেন, আপনি তো পাঁচ রাকাত আদায় করেছেন। অতএব তিনি সালাম ফেরানোর পর দুইটি সিজদা করলেন। (বুখারি, হাদিস : ৪০১)

নামাজে কখন সাহু সিজদা দিতে হয়?

  নামাজের কোনো ওয়াজিব আমল কেউ ইচ্ছা করে ছেড়ে দিলে, গুনাহগার হবে এবং নামাজও নষ্ট হয়ে যাবে। তাই ওই নামাজ পুনরায় আদায় করতে হবে। তখন সিজদায়ে সাহুর মাধ্যমে, নামাজ পূর্ণ হবে না।

নামাজের কোনো ওয়াজিব কাজ ভুলক্রমে ছুটে গেলে, সিজদায়ে সাহু দেওয়া ওয়াজিব। (বুখারি, হাদিস: ৩৮৬; আবু দাউদ, হাদিস: ৮৭৪; আল-মুজামুল আওসাত, হাদিস : ৭৮০৮)

ফরজের প্রথম দুই রাকাত বা যেকোনো এক রাকাতে সুরায়ে ফাতিহা পড়তে গেলে অথবা অনুরূপ নফল ও বিতরের যেকোনো রাকাতে ভুলক্রমে সুরায়ে ফাতিহা পড়া না হলে, সিজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে। (মুসলিম, হাদিস: ৮৯৩)

ফরজের প্রথম দুই রাকাতে কেরাত পড়া ভুলে গেলে, শেষ দুই রাকাতে তা পড়ে নেবে। তবে সিজদায়ে সাহু দেবে, নামাজের তারতিব বা ধারাবাহিকতা লঙ্ঘনের কারণে। (মুসলিম, হাদিস : ৮৯৫; মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদিস : ১/৪০৯)

ফরজের দুই রাকাত বা এক রাকাতে কিরাত মেলাতে ভুলে গেলে সাহু সিজদা দিতে হবে। (নাসায়ি: ১২৪৩)

কেউ যদি এক সিজদা করে পরের রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে যায়, তখন ওই রাকাত দুই সিজদা দিয়ে সম্পন্ন করে ছুটে যাওয়া সিজদাও এর সঙ্গে মিলিয়ে নেবে (এক রাকাতে তখন তিন সিজদা হবে)। শেষে সিজদায়ে সাহু করবে, এতে করে নামাজ হয়ে যাবে। (প্রাগুক্ত)

যদি তিন বা চার রাকাতবিশিষ্ট নামাজে প্রথম বৈঠক ভুলে যায়, তা ফরজ নামাজ হোক বা নফল নামাজ, সিজদায়ে সাহু দিতে হবে। (আবু দাউদ, হাদিস : ৮৮২)

  তাশাহহুদ পড়তে ভুলে গেলে, সাহু সিজদা দিতে হবে। (নাসায়ি, হাদিস : ১২৪৩)

বিতর নামাজের তৃতীয় রাকাতে রুকুর আগে কুনুত পড়তে ভুলে গেলে সাহু সিজদা দিতে হবে। (বায়হাকি, হাদিস : ৪০৪২)

প্রথম বৈঠকে তাশাহহুদের সঙ্গে দরুদ ইত্যাদি পড়ে ফেলে, তাহলে সাহু সিজদা দিতে হবে। (মুসলিম, হাদিস: ৮৯৫)

সাহু সিজদা যেভাবে দেবেন:

সাহু সিজদার সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে সাহু সিজদা যার ওপর ওয়াজিব হয়েছে, সে শেষ বৈঠকে তাশাহহুদ পড়ে ডান দিকে এক সালাম ফেরাবে। এরপর তাকবির বলে নামাজের মতো দুইটি সিজদা করে বসে যাবে এবং তাশাহহুদ, দরুদ, দোয়ায়ে মাসুরা পড়ে সালাম ফেরাবে। সালামের আগে সিজদা করলে নামাজ হয়ে যাবে। তবে তা মাকরুহে তানজিহি। (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৮১৮৮; বুখারি, হাদিস : ১১৫০-১১৫৩; তিরমিজি, হাদিস : ৩৬১)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সাহু সিজদা না করা ঠিক হয়েছে। কেননা প্রথম রাকাত বা তৃতীয় রাকাতের পর যদি ভুলে বসে যায় এবং অল্প সময় তথা তিন তাসবীহ পরিমাণের চেয়ে কম সময় অবস্থান করার পর ভুল বুঝতে পেরে দাঁড়িয়ে যায় তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না। আর যদি তিন তাসবীহ পরিমাণ অবস্থান করে তাহলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ইমাম সাহেব যেহেতু বসার সঙ্গে সঙ্গে দাঁড়িয়ে গেছেন তাই সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়নি। মুক্তাদী তাকবীর দিলেই সাহু সিজদা ওয়াজিব হয় না (আলমুহীতুল বুরহানী ২/১২৩; আদ্দুররুল মুখতার ১/৪৬৯; রদ্দুল মুহতার ১/৫০৬; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ২৫৮; ইমদাদুল আহকাম ১/৬৭৫)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 175 views
...