আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,189 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (0 points)
আমার এক বন্ধুর প্রশ্ন-

"নামাযের সময় রুকু সেজদায় পেটে চাপ লেগে অল্প প্রস্রাব বের হয়ে যায়।

১)এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি? প্রায় প্রতিবারই এরকম হয়।

২)নামায কিভাবে পড়ব?পেটে যেন চাপ না লাগে এই জন্য মাটিতে/চেয়ারে বসে পড়তে পারব?

৩)এমন না যে এইটা ওয়াসওয়াসা।আমি চেক করে দেখেছি আসলেই কিছু বের হয়।আমি কি মাযুর?বের হতে থাকলেও কি ঐভাবেই আমি নামায পড়ে ফেলব?

৪)এই অবস্থা ঠিক হওয়ার জন্য করণীয় কি?"

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী অযু ভেঙ্গে যাওয়ার অন্যতম একটি কারন হলো পেশাব-পায়খানার রাস্তা দিয়ে কোনো কিছু বের হওয়া। যেমন বায়ু, পেশাব পায়খানা, পোকা ইত্যাদি। (হেদায়া-১/৭)

আল্লাহ তাআলা বলেন,
أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِّنكُم مِّنَ الْغَائِطِ
তোমাদের কেউ প্রসাব-পায়খানা সেরে আসে [তাহলে নামায পড়তে পবিত্রতা অর্জন করে নাও]। (সূরা মায়িদা ৬)

আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত,  নিশ্চয় রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
إِنَّمَا الْوُضُوءُ مِمَّا خَرَجَ ، وَلَيْسَ مِمَّا دَخَلَ
শরীর থেকে যা কিছু বের হয় এ কারণে অযু ভেঙ্গে যায়, প্রবেশের দ্বারা ভঙ্গ হয় না। (সুনানে কুবরা লিল বায়হাকী ৫৬৮)
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির নামাজ এবং ভেঙ্গে যাবে।
,
ফরজ নামায দাঁড়িয়ে পড়া ফরজ। وَقُومُوا لِلَّهِ قَانِتِينَ ‘তোমারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে (নামাযে ) বিনীতভাবে দণ্ডায়মান হও।’ (সূরা বাক্বারাহ ২৩৮)।

 যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে পড়তে অক্ষম  সে বসে নামায পড়বে। তার জন্য  নামায দাঁড়িয়ে পড়া ফরজ নয়। এক্ষেত্রে মূল হল হযরত ইমরান বিন হুসাইন রা. এর একটি হাদীস –
عَنْ عِمْرَانَ بْنِ حُصَيْنٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ كَانَتْ بِي بَوَاسِيرُ فَسَأَلْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنْ الصَّلَاةِ فَقَالَ صَلِّ قَائِمًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ
‘হযরত ইমরান বিন হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমার অর্শ্বরোগ ছিল। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নামায (এর পদ্ধতি) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন,দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করবে,তাতে সামর্থ্য না হলে বসে। যদি তাতেও সক্ষম না হও তাহলে কাত হয়ে শুয়ে।’ (সহিহ বুখারী হাদীস নং- ১১১৭)

ইবনে কুদামাহ রহ. বলেন –
أجمع أهل العلم على أن من لا يطيق القيام له أن يصلي جالسا আহলে ইলম এ ব্যপারে একমত যে, যে ব্যক্তি দাড়িয়ে নামায পড়তে অক্ষম সে বসে নামায পড়বে। (আল-মুগনী ১/৪৪৩)

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা স্পষ্ট বুঝে আসে দাঁড়াতে অক্ষম ব্যক্তির জন্য ফরজ নামায বসে পড়া জায়েয। দাঁড়ানোর সক্ষমতা থাকার পরেও যদি কেউ ফরজ নামায বসে পড়ে তবে তার নামায বাতিল হয়ে যাবে।

 (ক) যদি দাঁড়িয়ে নামায পড়ার কারণে রোগীর খুব বেশি কষ্ট হয় অথবা (খ) রোগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে অথবা (গ) রোগ মুক্তি বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা হয় তবে তার জন্য বসে নামায পড়া জায়েয। (আল মাজমূ ৪/৩১০;তানভীরূল আবসার ২/৫৬৫)

কোনো ব্যক্তি যদি দাঁড়াতে সক্ষম হয় কিন্তু রুকু-সিজদা করতে সক্ষম না হয় তাহলে সে কিভাবে নামায আদায় করবে?

এক্ষেত্রে ফিকহে হানাফীর প্রসিদ্ধ মত হল, এমন ব্যক্তি বসে ইশারায় রুকু সিজদা করবে। তার জন্য দাঁড়িয়ে নামায পড়া আর ফরজ থাকবে না।  (বাদায়েউস সানায়ে ১/১০৭; ফাতাওয়া হিন্দীয়া ৪/২০৪;ফাতহুল ক্বাদীর ১/৪৬০;বাদায়েউস সানায়ে ১/১০৭) 

আপনার জন্য চেয়ারে বসে নামাজ পড়া জায়েয নেই। 
আরো জানুনঃ 
,
(১.২)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে প্রত্যেক নামাজের আগে ভালো ভাবে পেশাব করে আসলে এমনটি হওয়ার কথা নয়। 
সুতরাং উক্ত ব্যাক্তির জন্য  দাড়ানো,রুকু,সেজদাহ কোনোটাই ছাড় নেই।
একটা বাদ দিলে নামাজ হবেনা।
,
আর যদি খুব ভালোভাবে নামাজের আগে পেশাব করে আসার পরেও নামাজে এসে পেশাব বের হয়,তাহলে চিকিৎসা অব্যাহত রেখে নিম্নোক্ত পদ্ধতি ফলো করবেনঃ   

আপনার যদি সামান্য ঝুকে রুকু সেজদাহ করার দ্বারা সমস্যা না হয়,তাহলে পুরোপুরি রুকু সেজদাহ না করে সামান্য ঝুকে রুকু সেজদাহ করে নামাজ আদায় করিবেন।
,
আর যদি রুকু সেজদাহ করতেই এমনটি হয়,কোনোভাবেই রুকু সেজদাহ করা সম্ভব না হয়,তাহলে ইশারার দ্বারা রুকু সেজদাহ করবেন।
,
যদি দাড়ানো অবস্থা থেকে বসতে গেলেও এমনটা বের হত,তাহলে বসেই নামাজ পড়বেন।
রুকু সেজদাহ সামান্য ঝুকে আদায় করবেন,সমস্যা হলে শুধু ইশারা করে রুকু সেজদাহ আদায় করবেন।
  
যদি বসেও নামাজ না পড়তে পারেন,তাহলে চেয়ারে বসে নামাজ পড়তে পারবেন।
,
,
(০৩) শরীয়তের পরিভাষায় আপনি মা'যুর নন।

বিস্তারিত জানুনঃ
,
(০৪) এই অবস্থা ঠিক হওয়ার জন্য ডাক্টারকে দেখাতে হবে,ভালো চিকিৎসা করালে মুক্তি হবে,ইনশাআল্লাহ ক্যাগেল ব্যায়ামের সাহায্যও নিতে পারেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (559,140 points)
ক্যাগেল ব্যায়াম সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...