আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
226 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (17 points)
edited by
আমি গত ১ বছর ধরে ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত। আমি আর পারছিন।। জীবন অসহ্য হয়ে গিয়েছে। ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত আমার ৩ টি প্রশ্নঃ-

১. আমার নাপাকি সংক্রান্ত মারাত্মক ওয়াসওয়াসা রয়েছে। হাতে নাপাকি লাগার পর ভালভাবে হাত ধুইলেও সন্দেহ থেকে যায়। আমার জন্য কি শরিয়তের শিথিলতা রয়েছে? অর্থাৎ, আমি যদি আমার চেষ্টার পরও নাপাক থেকে যায় আল্লাহ কি ক্ষমা করবেন?

২. আমার ঈমান সংক্রান্ত ওয়াসওয়াসা রয়েছে। শুধু মনে হয় ঈমান চলে গেছে। কালিমা শাহাদাত পাঠ করি প্রায়ই। মনে নানা কুফুরি বাক্য আসে। আবার, মাঝে মাঝে মনে হয় কুফুরি বাক্য উচ্চারণ করে ফেলেছি। আমার জন্য কি শরিয়তের শিথিলতা রয়েছে?

৩. আমার তালাক নিয়ে মারাত্মক ওয়াসওয়াসা রয়েছে। শুধু মনে হয় তালাক দিয়ে ফেলেছি। আমার জন্য কি শরিয়তের শিথিলতা রয়েছে? অর্থাৎ, আমি যদি সত্যিই তালাক দিয়েই ফেলি এবং সেটা ওয়াসওয়াসা ভেবে বাদ দেই আল্লাহ কি ক্ষমা করবেন?

একটি কুফুরি বাক্য (সেটা লিখতে চাচ্ছিনা) উচ্চারণ না করলে শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে - এমন চিন্তা করছিলাম। হঠাৎ ভয় হলো যে আমি উচ্চারণ করে বলে ফেললাম কি না? তাই আমি ভয়ে সেই কুফুরি বাক্য উচ্চারণ করি। এরকম কয়েকদিন চলতে থাকে। অর্থাৎ,  আমি একাধিকবার কুফুরি বাক্য উচ্চারণ করেছি।

৪. আজকে হঠাৎ মনে মনে এটা নিয়ে ভাবছিলাম। এখন আমি যদি আবার সেই তালাকের ব্যাপারে ভেবে সেই কুফুরি বাক্য উচ্চারণ করার নিয়ত করে ফেলি (উচ্চারণ করে) তাহলে কি আমি যদি উচ্চারণ না করি তাহলে শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে?  আমি শতভাগ নিশ্চিত যে আমি তালাক নিয়ে সম্পূর্ণ বাক্য উচ্চারণ করিনি।

৫. যদি কুফুরি বাক্য উচ্চারণ না করলে শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যায় - তাহলে আমি কুফুরি বাক্য উচ্চারণ করবো। - এই ধরনের ধারণা পোষণ করায় কি ঈমান চলে যাবে?

৬. আমার এই লিখার মাধ্যমে কি শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবে কিংবা আবার সেই কুফুরি বাক্য উচ্চারণ করতে হবে?

৭. উমুক কাজ না করলে আল্লাহকে ভালবাসি না - এমন নিয়ত চলে আসে। এরপর আমি বাধ্য হয়ে সেই কাজ করি। কি করব?

৮. আমি এক হিন্দু দোকানে চা খাই। চা ওয়ালা তার ভেজা হাত তার লুংগির উপরে রাখে। মাঝে মাঝে লুংগির মধ্যে হাত মুছে। সে প্রশ্রাব করে ইস্তিঞ্জা করে না। এখন তার হাতে ভেজা চায়ের কাপ কি নাপাক?

৯. যারা ইস্তিঞ্জা করে না আমাদের ভেজা হাত তদের লুংগিতে লাগলে কি হাত নাপাক হবে?

১০. আমার অল্পতেই মযী বের হয়ে যায়। সামান্য যৌন চিন্তা করলেই মযী চলে আসে। এমনকি ১০-১২ সেকেন্ড এ। আমি পায়জামার নিচে আন্ডারপ্যান্ট পড়ি না। খুবই পাতলা পায়জামা পড়ি। এখন এসব পায়জামা ভেদ করে করে কি পাঞ্জাবিতে মযী লাগতে পারে? আমি সবসময় সন্দেহে থাকি।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
জবাব
 بسم الله الرحمن الرحيم 


(০১)
https://ifatwa.info/17196/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
শরীয়তের বিধান হলো কাপড়ে নাপাকি লাগলে তিনবার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে এবং প্রত্যেকবার ভালো করে চাপ দিয়ে নিংড়াতে হবে। 
শেষ বার এমন ভাবে চিপতে হবে যে কোনো পানি যেনো আর টককিয়ে না পড়ে।
ভালো করে নিংড়িয়ে ধোয়ার পরও যদি দুর্গন্ধ থেকে যায় কিংবা দাগ থাকে তাতে কোনো দোষ নেই। এতেই চাদর কিংবা কাপড় পবিত্র হয়ে যাবে।  (হাশিয়ায়ে তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃষ্ঠা নং ১৬১, বেহেশতি জিওর ২/৭৭ )

وغير المرئية بغسلهاثلاثا والعصر كل مرة

অদৃশ্যমান নাপাক বস্তু তিন বার ধৌত করত্র হবে।এবং প্রত্যেকবার নিংড়াতে হবে।
(নুরুল ইযাহ ৫৬)

উল্লেখ্য, তিনবারের কথা বলা হয়, যাতে সন্দেহ না থাকে। অন্যথায় যদি প্রবাহমান পানি যেমন, নদী, পুকুরে বা টেপের পানিতে এত বেশি করে ধোয়া হয়, যাতে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয়ে যায় তাহলে তা পাক হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তিনবার নিংড়িয়ে ধোয়া জরুরি নয়। (রদ্দুল মুহতার ১/৩৩৩ আলবাহরুর রায়েক ১/২৩৭ শরহুল মুনইয়া ১৮৩) 

★★এটাই মূলনীতি।  

হাদিস শরিফে এসেছে,আসমা রাযি. থেকে বর্ণিত,

 أَنَّ النَّبِيَّ  ﷺ قَالَ -فِي دَمِ الْحَيْضِ يُصِيبُ الثَّوْبَ-: «تَحُتُّهُ، ثُمَّ تَقْرُصُهُ بِالْمَاءِ، ثُمَّ تَنْضَحُهُ، ثُمَّ تُصَلِّي فِيهِ

হায়িযের রক্ত কাপড়ে লেগে যাওয়া প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, ‘পানি দিয়ে ঘষা দিবে তারপর পানি দ্বারা ভালোভাবে ধৌত করবে। অতঃপর সলাত আদায় করবে।’ (বুখারী ২২৭,৩০৭)
,
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার শরীরে বা কাপড়ে নাপাকি লাগলে তাহা শরীয়াহ নিয়ম মেনে ধোয়ার পর যদি সন্দেহ থেকেই যায়,সেক্ষেত্রে আপনার জন্য শিথিলতা রয়েছে। 

(০২)
এক্ষেত্রে আপনার জন্য শিথিলতা রয়েছে। 

(০৩)
এক্ষেত্রে আপনার জন্য শিথিলতা রয়েছে। 
এভাবে তালাক দিলে আপনার তালাক যেহেতু কার্যকর হবেনা,তাই সেটিকে ওয়াসওয়াসা ভেবে বাদ দিলে আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করবেন।

(০৪)
প্রশ্নের বিবরণ মতে শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবেনা।

(০৫)
আপনি এ ধরনের ধারণা রাখবেন যে আপনি যাহাই বলেননা কেনো,তাতে শর্তযুক্ত তালাক হবেনা।

(০৬)
আপনার এই লেখার মাধ্যমে শর্তযুক্ত তালাক হয়ে যাবেনা। আবার সেই কুফুরি বাক্য উচ্চারণ করতে হবেনা।

(০৭)
আপনার সেই অমুক কাজ করা বা না করার উপর আল্লাহকে ভালোবাসা ডিপেন্ড করেনা।
আল্লাহকে ভালোবাসা, এটি তো মন থেকে হয়। 

(০৮)
তার লুঙ্গি নাপাক হওয়া সম্পর্কে যেহেতু নিশ্চিত ভাবে বলা যায়না,তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কাপ নাপাক বলা হবেনা।
তদুপরি সতর্কতা কাম্য।
তাই অন্যত্রে চা খাওয়া উচিত।

(০৯)
এক্ষেত্রে আপনার হাতে পেশাবের গন্ধ পাওয়া গেলে আপনার হাত নাপাক হবে। 
নতুবা নয়।

(১০)
মযির পরিমাণ খুব বেশি হলে পায়জামা ভেদ করে করে পাঞ্জাবিতে মযী লাগতে পারে।
সামান্য মযি হলে তাহা পায়জামা ভেদ করে করে পাঞ্জাবিতে মযী লাগতে পারেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...