ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
জেনারেল শিক্ষা অর্জন সম্পর্কে আমরা ইতি পূর্বে বলেছিলাম যে,
বলা যায় মুসলিম দেশের মুসলিম সরকারের জন্য ওয়াজিব যে,অচিরেই পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা।
প্রয়োজনে এ জন্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করা সমস্ত মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব ও কর্তব্য।
কিন্তু যতদিন পর্যন্ত এই পৃথক শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হচ্ছে ,ততদিন প্রয়োজনের তাগিদে নিম্নোক্ত শর্তাদির সাথে কলেজ-ভার্সিটিতে শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।
১/শিক্ষা অর্জন দেশ ও মুসলিম জাতীর খেদমতের উদ্দেশ্যে হতে হবে।
২/চোখকে সব সময় নিচু করে রাখতে হবে,প্রয়োজন ব্যতীত কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকার দিকে তাকানো যাবে না।মহিলা/পুরুষ তথা অন্য লিঙ্গের সহশিক্ষার্থীদের সাথে তো কোনো প্রকার সম্পর্ক রাখা যাবেই না।সর্বদা অন্য লিঙ্গর শিক্ষার্থী থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে।(ফাতাওয়া উসমানী ১/১৬০-১৭১)(শেষ)
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/434
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১) সহশিক্ষা কিছু শর্তসাপেক্ষে বৈধ। বিস্তারিত উপরের লিংকে দেখুন।
(২)
এ ক্ষেত্রে করণীয় হল, নিজ ঈমান আ'মলকে ঠিক রেখে শিক্ষা করা সম্ভব হলে করবেন,নতুবা এমন শিক্ষা গ্রহণ জায়েয হবে না।
(৩) উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রেখে এই তথাকথিত শিক্ষা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করার পরামর্শ দেয়া যাবে না।এজন্য যে আমরা নিরুপায়।সুতরাং যার জন্য নিজ আ'মল ইয়াকিনকে ঠিক রেখে পড়াশোনা করা সম্ভব হবে,তারজন্য জায়েয।আর যার জন্য সম্ভব হবে না,তার জন্য জায়েয হবে না। বর্তমান পরিস্থিতিতে এটাই মুসলমানদের জন্য কল্যাণকর মনে হচ্ছে।
(৪) বর্তমান সময়ে তো প্রায় সবারই এই শিক্ষার একটাই উদ্দেশ্য থাকে একটা ভালো কর্ম-সংস্থান এর জন্য পড়ালেখা, যার অন্য কোনো রিজিকের ব্যবস্থা আছে, এবং দেশ ও মুসলমানের যথাসাধ্য খেদমতেে চিন্তা নাই, তার জন্য এইসব বাদ দেয়া অবশ্যই অত্যাবশ্যক।
(৫) যার নিজের সতীত্ব রক্ষাই কঠিন হয়ে পড়ে,তার জন্য উক্ত পরিবেশে পড়ালেখা জায়েয হবে না।আর যার জন্য সম্ভব হবে, সে পড়বে।
(৬) অনেক মেয়ে হোস্টেলে থেকে পড়ালেখা করে যা তাদের বাড়ি থেকে সফরের দূরত্বের চাইতে বেশি বা কম, এখানে দুটো প্রশ্ন, এই দু'টির উত্তর হল,
(i) কোনো মেয়ে মাহরাম ছাড়া ৭৭ কিলোর অধিক দূরত্ব সফর করতে পারবে না। রাস্তা নিরাপদ হলে এর চেয়ে কম একাকি সফর করা বৈধ।
(ii) মাহরাম ছাড়া একা একা বাড়ি থেকে সফর সমপরিমাণ দূরত্বের হোস্টেলে আসা যাওয়া করে পড়ালেখা করা কখনো জায়েয হবে না।
(৭) বর্তমান চলাকালীন এইচ এস সি পরীক্ষার বাংলা ১ম প্রশ্নপত্রে আল্লাহ তায়ালার হালাল বিধান কোরবানি করার বিধান কে খাল কেটে কুমির আনার সাথে তুলনা করা হয়েছে কটাক্ষ করা হয়েছে, এইটা অবশ্যই কুফুরি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিই এর দায়ভাড় বহন করবে। এর জন্য পুরো শিক্ষা ব্যবস্থাকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না।
(৮)
যাদের দেশ ও জাতির খেদমত করার উদ্দেশ্য রয়েছে, তাদের জন্য প্রাতিষ্টানিক শিক্ষা সমাপ্ত করা অত্যান্ত জরুরী। আর যাদের তেমন মহান কোনো উদ্দেশ্য নাই, তাদের উচিত হালাল চাকুরী করা ও সম্ভব হলে সম্পূর্ণ গোনাহ মুক্ত পরিবেশে পড়ালেখার চেষ্টা করা।