জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১) নামাজে লাহনে জলি (অর্থ বিকৃত হওয়া) এর দ্বারা নামাজ ফাসেদ হয়ে যায়।
সাধারনত মাখরাজ পুরোপুরি সঠিক ভাবে আদায় না করলে সেটা লাহনে জলি হয়না।
তবে মাঝে মাঝে লাহনে জলি হয়।
যেমন যেমনঃ পবিত্র কুরআনের একটি গুরুত্বপূর্ণ সুরা হলো সুরা ইখলাস। এ সুরার প্রথম আয়াতের অর্থ হলো, ‘হে নবি আপনি বলে দিন, আল্লাহ এক।’ এবং আরবি প্রথম শব্দটি হল ‘ক্বুল’ (বড় কাফ)।
মাখরাজ ভালো ভাবে আদায় না করলে হয় ‘কুল’ (ছোট কাফ)। এর অর্থ হলো খাও। তাই সুরা ইখলাসের প্রথম আয়াতের অর্থ হবে, ‘হে নবি! আপনি খেয়ে নিন।
এমন ভয়ানক অর্থ বিপর্যয়ের মূলে রয়েছে মাখরাজ বিহিন উচ্চারণের চেষ্টা।
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মাখরাজ আদায় না করার করানে যদি লাহনে জলি করে থাকেন,তাহলে উক্ত আয়াত আবার পড়বেন।
এতে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
লাহনে জলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ
যদি লাহনে জলি না হয়,তাহলে সুরা ফাতেহার ক্ষেত্রে এমনটি হলে আপনি ঐ আয়াত আর পড়বেননা।
,
নামাজে সুরা ফাতেহার ব্যাতিত অন্য কোনো আয়াত নিয়ে এমনটি হলে আবার পড়তে পারেন,সমস্যা নেই।
সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবেনা।
আরো জানুনঃ
(০২)
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ ۚ
আল্লাহ তায়ালা কাহারো গুনাহের বোঝা অন্যের উপর চাপিয়ে দিবেননা।
(সুরা ফাতির ১৮)
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে নজরের হেফাজত না করার গুনাহ আপনার ঐ বন্ধুরই হবে।
আপনার কোনো গুনাহ হবেনা।
,
প্রশ্নে উল্লেখিত আন্টির জন্যেও বেপর্দা হয়ে আপনাদের সামনে জায়েজ নেই,আপনাদের সকলেরও আন্টির দিকে নজর দেওয়া জায়েয নেই।
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠]
وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]
মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّ السَّمْعَ وَالبَصَرَ وَالفُؤَادَ كُلُّ أُولَئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا.
...নিশ্চয় কান, চোখ, হৃদয় এর প্রতিটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হবে। সূরা বনী ইসরাঈল (১৭) : ৩৬
তবে অনিচ্ছায় একবার নজর চলে গেলে গুনাহ নেই,তবে সাথে তা ফিরাতে হবে,ইচ্ছা করে একবারও নজর দেওয়া যাবেনা।
আলী রা.-কে নবীজী সাঃ বলেছেন,
يَا عَلِيُّ لَا تُتْبِعِ النَّظْرَةَ النَّظْرَةَ، فَإِنَّ لَكَ الأُولَى وَلَيْسَتْ لَكَ الآخِرَةُ.
হে আলী! (হঠাৎ) দৃষ্টি পড়ে যাওয়ার পর আবার দ্বিতীয়বার তাকিয়ো না। কারণ, (হঠাৎ অনিচ্ছাকৃত পড়ে যাওয়া) প্রথম দৃষ্টি তোমাকে ক্ষমা করা হবে, কিন্তু দ্বিতীয় দৃষ্টি ক্ষমা করা হবে না। জামে তিরমিযী, হাদীস ২৭৭৭