بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
আরবীতে ওহী (وحی) শব্দটি বাবে ضرب এর মাসদার। এটির আভিধানিক অর্থ হলোঃ গোপনে জানিয়ে দেয়া, ইঙ্গিত করা, প্রেরণ করা - ইত্যাদি।
ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায়, “জিবরাঈল (আঃ) এর মাধ্যমে নবী রাসূলগণের নিকট পাঠানো প্রত্যাদেশই ওহী।”
মুজামুল ওয়াসীত অভিধানে বলা হয়েছে, “নবীদের উপর আল্লাহ তা’আলার অবতারিত বাণীই ওহী।”
মোটকথা, হযরত জিবরাঈল (আঃ) এর মাধ্যমে নবী রাসূলগণের নিকট মানুষের হেদায়েতের জন্য পাঠানো উপদেশ সম্বলিত মহান আল্লাহর ভাষণকে ওহী বলে।
ওহী দু'প্রকারঃ
وحی متلو
বা পঠিত ওহী৷ এটি হলোঃ পবিত্র কুরআন শরীফ।
وحی غير متلو
বা অপঠিত ওহী৷ এটি হলোঃ পবিত্র হাদীস শরীফ।
আল্লাহর বাণী সমষ্টিকে ওহী বলে। যা রাসূল (সাঃ) এর উপর বিভিন্ন সমস্যার প্রেক্ষিতে নাযিল হয়েছে। এটি মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ। এর উপর আমল করা আমাদের কর্তব্য। চলুন তাহলে ওহী সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই –
ওহী নাযিলের পদ্ধতিঃ
আল্লামা সুহাইলী (রহঃ) বলেছেন, ৭ টি পদ্ধতিতে ওহী নাযিল হয়েছে। এগুলো হলোঃ
১.স্বপ্নযোগেঃ হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় রাসূল (সাঃ) এর নিকট ঘুমের মধ্যে ওহী আসত।
২.ঘন্টাধ্বনির মাধ্যমে।
৩.হযরত জিবরাঈল (আঃ) কর্তৃক অন্তঃকরণে ওহী ঢেলে দেওয়ার মাধ্যমে।
৪.জিবরাঈল (আঃ) কখনো কখনো মানব আকৃতি ধারণ করে ওহী নিয়ে আসতেন
৫.জিবরাঈল (আঃ) কোন কোন সময় নিজের আকৃতিতে ওহী নিয়ে আসতেন।
৬.কখনো কখনো জিবরাঈল (আঃ) পর্দার আড়াল থেকে কথা বলার মাধ্যমে ওহী নাযিল করতেন
৭.কখনো কখনো আবার ঈসরাফীল (আঃ) ওহী নিয়ে আগমণ করতেন।
(১)ক্বাদীম(২)হাদীস
দর্শন বিদ্যার আলোকে এই দু'টি শব্দের ব্যখ্যা নিম্নরূপ--
ক্বাদীম অর্থ,যা পুরাতন,অনেক পুরাতন।যার কোনো শুরু নেই।এবং যার শেষও নেই। অর্থাৎ যা চিরকাল থাকবে,তাকেই ক্বাদীম বলা হয়ে থাকে।
হাদীস অর্থ,যা নবসৃষ্ট,যাকে তৈরী করা হয়েছে।অর্থাৎ যার শুরু আছে।যার শুরু আছে,তার শেষও আছে।অর্থা যা চিরস্থায়ী নয়।একদিন যা শেষ হয়ে যাবে।
আল্লাহ এবং আল্লাহর সমস্ত সিফাত,ক্বাদীম।যা চিরঞ্জীবী, যার শুরুও নেই এবং শেষও নেই।আল্লাহ ব্যতীত সমস্ত জিনিষ হাদীস অর্থাৎ যার শুরু রয়েছে।আর যার শুরু রয়েছে,তার শেষও আছে।
এবার মূল আলোচনায় আসা যাক,
কুরআন আল্লাহর সিফাত না আল্লাহর সৃষ্ট মাখলুক?কোনটা
এ প্রশ্নের জবাবে বলবো, আল্লাহর অনেক সিফাত রয়েছে।এই সিফাত সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রসিদ্ধ যে সিফাত রয়েছে,সেগুলোর অধিকাংশই আমরা হাদীসে বর্ণিত ৯৯টা সিফাতি নামে দেখতে পাই।
আল্লাহর সিফাত হল,কালাম।তথা আল্লাহ বক্তা,আল্লাহ কথা বলেন,আদেশ নাযিল করে,ইত্যাদি।
আমরা যদি কুরআন কে আল্লাহর সিফাতে কালাম মনে করি,তাহলে আল্লাহ যেভাবে ক্বাদীম,কুরআনও ঠিক সেভাবে ক্বাদীম।যা কখনো শেষ হবে না, ধংস হবে না।
আর যদি আমরা কুরআনকে আল্লাহর তৈরীকৃত কোনো জিনিষ মনে করি,তাহলে এর অর্থ হবে,কুরআন নবসৃষ্ট, যার শুরু রয়েছে,এবং যা একদিন ধংস হয়ে যাবে।
সুতরাং কুরআন হল,আল্লাহর সিফাতে কালামের অংশ যা ক্বাদীম,হাদীস নয়।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
কালামুল্লাহ ক্বাদীম যা সৃষ্ট নয়। হাদীসে কুদসির অর্থ তো ক্বাদিম তবে শব্দ হাদীস। অনুরুপ ওহির আরো কিছু বিষয় আছে যেগুলি হাদীস।