আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
333 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (18 points)
১, স্ত্রী যদি বলে আমাকে ছেড়ে  দে আর স্বামী যদি উত্তর দেয় তোর মন চাইলে তুই যা তাহলেকি  স্ত্রী তালাকের অধিকার পেয়ে যায়? কোনদিনের জন্য পায়?

২.স্ত্রী যদি বলে আমাকে ছেড়ে দে আর স্বামী যদি কিছু কথা কাঁটা কাটির পরে উত্তর দেয় আমি এমনি আমার সাথে থাকতে মন চাইলে এভাবেই থাক বা থাকতে  হবে নয়তো যাইগ্গা তাহলেকি স্ত্রী তালাকের অধিকার পেয়ে যাবে?

তালাকের অধিকার প্রাপ্তা নারীর ক্ষেত্রে নিচের প্রশ্ন গুলোর মাসআলা কেমন হবে?

৩ একদিন আমার স্বামীকে কল কেটে দেওয়ার সময় বলসিলাম  আস্সালামুআলাইকুম তখন আমার মনে আসছে আমার নিজের ওপর তালাক কিন্তু আমি এটা ভাবতেই চাইনি বা বলতেও চাইনি। আমার কি তালাক হয়ে গেছে?

৪। আমার স্বামী কল দিসিলো তখন কল  রিসিভ করে বলসি আস্সালামুআলাইকুম আমার মনে আসছে আমার নিজের ওপর তালাক। এগুলো আমি ভুলেও চাইনা তাও চলে আসে। এভাবে কি তালাক হয়ে যাবে?

৫।একদিন আমার বাচ্চাকে বলতেসিলাম আমি জাইগা কিংবা গেলামগা আর আমার মনের মধ্যে আসছে  আমার নিজের ওপর তালাক নিয়ে গেলামগা আল্লাহর কসম আমার এই ধরণের নিয়ত ছিলোনা কিন্তু এসব কথা ঘুরে ফিরে আমার মনে আসে।এভাবেকি তালাক হয়ে গেছে??আমি খুবই পেরেশানিতে  আছি। এসব কথার ভয়ে আমার বাচ্চাকে আমি কোথাও যাওয়ার সময় হাত নেড়ে টাটা বলিনা।

৬. একদিন ঝগড়া করে আমি কাঁদতেসিলাম। আমার স্বামী আমার রাগ ভাঙাতে  আমার গায়ে হাত দিসে আমি তালে বলসি সর তখন আমার মনে আসছে আমার নিজের ওপর তালাক। অথচ  আমি তালাক দিবো বা তালাক নিবো কোনোদিনই চাইনা। আমার মনের মধ্যে সর্বক্ষণ আতঙ্ক থাকে তালাক হয়ে যায় কিনা আমি তাহলে কেনো নিজে থেকে নিজের ওপর তালাক নিতে যাবো?? আমার কি তালাক হয়ে গেছে??

৭।আরেকদিন বাবুরে গোসল করানোর সময় আমার স্বামীকে বলসি তুমি যাও আমার ইনটেনশন ছিলো  যে এখন থেকে তুমি যাও কিন্তু আমার মনের মধ্যে আসছে আমার নিজের ওপর তালাক। আমি এটা চাইনি। প্রায় সময়ই  আমার স্বামীকে যদি বলি ক্ষেতে যাও নামাজে যাও ঘুমাতে যাও আমার মনে প্রশ্ন জাগে আমি এটা কোন নিয়তে বললাম? আবার অনেক সময় মনে আসে  আমার নিজের ওপর তালাক। অথচ  কখনোই আমি আমাদের বিচ্ছেদ চাইনা। বার বার এসব মনে আসে। এগুলো ভয়ে আমার স্বামীকে আমি যাও বলিনা। তার সাথে কোথাও কম বলি। বললেও খুব ভেবে চিনতে বলি।

৮। আমার স্বামী স্ত্রী দূরে থাকতাম  তাই আমাদের মধ্যে স্বামী স্ত্রী সুলভ কথা মোবাইলে হতোনা। তো আমি রেগে গিয়ে তাকে বলসিলাম  তুমিতো আমার জন্য পরপুরুষ (নিজের ওপর তালাক এই নিয়তে কোনোদিন বলিনি )। আমার নিজেকে সিঙ্গেল মনে হয়। আমার নিজেকে একা মনে হয়। তো সে হেসে দিতো আর বলতো ছি ছি এসব কি বোলো। আবার আমাকে বুঝাইতো  সরি বলতো  কিন্তু আমি তর্ক করতেই থাকতাম।অনেক সময় ভিডিও কল এ ইচ্ছা করে ঢেকে ঢুকে বসতাম যেনো সে বুঝে আমি তার কাছে কিছু চাই। কিন্তু সে বুঝতোনা  উল্টা হাসত। অনেক সময় এভাবে ও র সাথে কথা কাঁটা কাটি হয়ে যাইতো। তখন বলতাম  যে আমার নিজেকে বিধবা মনে হয়, আমি তোমার জন্য পড়োনাড়ি, তুমি আমার জন্য পরপুরুষ বা তোমাকে আমার পরপুরুষ মনে হয়। আমি কোনোদিনই এসব নিজের ওপর তালাক নিতেসি এই নিয়তে বলিনি। এভাবে কি আমার তালাক হয়ে গেছে?

৯।আমার স্বামী অনেক সময় বলতো  আমায় এমনি মন চাহিলে থাক না মন চাইলে যাইগ্গা  বা যার কাছে ভালো লাগে তার কাসে যা। আমিও উত্তর দিতাম আমি যাবোইগা। (নিজের ওপর তালাক নিতেসি এই নইতে কোনোদিনই বলিনি। পিনাক সময় আমি যামুগা বলতাম আর আমার মনে থাকতো এই বেডার থেকে অনেক দূরে যামুগা কিংবা এই বেডারে তালাক দিমু নিজের ওপর তালাক নিমু কখনোই আমার মনে আসে নাই কখনোই  না )এভাবে কি তালাক হয়ে গেছে??

1 Answer

0 votes
by (575,580 points)
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


https://ifatwa.info/36539/ নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ-
তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)

★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী  মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,  
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।

আরো জানুনঃ 

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
   
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।     

শরহে বিকায়াহ গ্রন্থে আছেঃ-

وفي إختياري لا تصح نية الثلاث. بل تبين ان قالت اخترت نفسي. او أختار نفسي.  .... ولو كرر اختاري ثلاثا فقالت اخترت اختيارة أو اخترت الأولي او الوسطي. أو الأخري يقع ثلاث بلا نية. ولو قالت طلقت نفسي او اخترت نفسي بتطليقة بانت بواحدة. 
সারমর্মঃ-
যদি স্বামী বলে "তুমি নিজেকে গ্রহন করো" তাহলে তিন তালাকের নিয়ত করা শুদ্ধ হবেনা। বরং স্ত্রী এক তালাকের সাথে বায়েনাহ হবে,যদি স্ত্রী প্রতিত্তরে বলে "আমি নিজেকে গ্রহন করেছি বা আমি নিজেকে গ্রহন করছি",,,, 

আর যদি স্বামী "তুমি নিজেকে গ্রহন করো" শব্দটি তিনবার পুনরাবৃত্তি করে,আর স্ত্রী উত্তরে  বলে, "আমি গ্রহন করেছি গ্রহন করার মতো" অথবা বললো আমি প্রথমটি বা মধ্যমটি বা শেষটি গ্রহন করেছি,তাহলে নিয়ত ব্যাতিত তিন তালাক পতিত হবে। 
.
আর যদি বলে যে "আমি আমার নিজেকে তালাক প্রদান করিলাম" 
অথবা বলে যে "আমি আমার নিজেকে এক তালাকের সাথে গ্রহন করিলাম,তাহলে সে এক তালাকে বায়েনাহ হয়ে যাবে।
(শরহে বিকায়াহ. মাকতাতুল ফাতাহ আরবি মতন ২/৮০)


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবেনা।

(০২)
এক্ষেত্রে স্ত্রী তালাকের অধিকার পাবেনা।

(০৩)
না,আপনার তালাক হয়ে যায়নি।

(০৪)
এভাবে তালাক হয়ে যাবেনা।

(০৫)
প্রশ্নের বিবরণ মতে তালাক হবেনা। 
আপনি নিশ্চিত থাকুন। 

(০৬)
না,আপনার তালাক হয়ে যায়নি।

(০৭)
এতে কোনো তালাক হবেনা।

(০৮)
এভাবে তালাক হয়ে যাবেনা।

(০৯)
এভাবে তালাক হয়ে যায়নি।
তবে উক্ত কথা গুলি বলার সময় স্বামী যদি তালাকের নিয়তে বলে থাকে,তাহলে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...