আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
150 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (100 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ
ইউনিভার্সিটিতে লাস্ট সেমিস্টারে ইন্টার্নি করতে হয়!

কোনো কোম্পানিতে ইন্টার্নশিপ করা পর্দার জন্য সেইফ না! তাছাড়া কোম্পানিতে ইন্টার্নি করার জন্য যেসব স্কিল সাধারণত দরকার হয় সেগুলো নেই আমার, যেমনঃ কম্পিউটারে কাজ করতে পারা!

অনেকেই ব্যাংকে ইন্টার্নি করছে!

১. আমি যদি কোনো ইসলামি ব্যাংকে ইন্টার্নি করি সেটা কি জায়েজ হবে?!  কোন কাজ সুদের সাথে জড়িত সেটাও জানি না আমি, হয়তো বুঝবো না!
২.  যদি ইসলামি ব্যাংকে ইন্টার্নি করার কারণে আমাকে টাকা পে করে সেই টাকা নেয়া জায়েজ হবে?!
৩. উক্ত অবস্থায় ইসলামি ব্যাংক হতে টাকা নেয়া জায়েজ না হলে সেই টাকা  নিয়ে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সাদাকা করে দেয়া যাবে?!  নাকি টাকা নেয়াই উচিত হবে না?!
৪. ইন্টার্নশিপ মাস্ট করতে হবে!  এমতাবস্থায় ব্যাংক ছাড়া অন্য কোথাও করার মতো ক্ষেত্র জানা নেই আমার যেখানে পর্দা মেইনটেইন করে কাজ করা যাবে মনে হয়! বাসার কাছেই ব্যাংক,  তাই যাতায়াতেও সমস্যা হবে না!   তাছাড়া কম্পিউটার স্কিল নেই যেহেতু আমার তাই কোনো কোম্পানিও আমার জন্য উপযোগী না!  এই পরিস্থিতিতে  করনীয় কি আমার?!

  খুবই অসহায় পরিস্থিতিতে আছি এটা নিয়ে! ইন্টার্নশিপ অলরেডি শুরু হয়ে গিয়েছে, আমি এখন পর্যন্ত শুরু করি নি কোথাও!

৫. যদি কোনো ইসলামি ব্যাংকে ইন্টার্নি শুরু করি কিন্তু কোনো কাজ না করি সেখানে, তাহলে কি করা যাবে এভাবে?!  অবশ্য জানি না এভাবে করা যায় কিনা!

জাযাকাল্লাহু খইরন!

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/60414/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

শরীয়তের বিধান মতে সুদ গ্রহণ, সুদ প্রদান, সুদী কাজে সহযোগিতা করা সবই লানতপ্রাপ্ত গোনাহ।

মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন 

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لَا يَقُومُونَ إِلَّا كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ۚ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُوا إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا ۗ وَأَحَلَّ اللَّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا ۚ فَمَنْ جَاءَهُ مَوْعِظَةٌ مِنْ رَبِّهِ فَانْتَهَىٰ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللَّهِ ۖ وَمَنْ عَادَ فَأُولَٰئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ ۖ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ [٢:٢٧٥

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে। {সূরা বাকারা-২৭৫}

 

হাদীস শরীফে এসেছে 

عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

 

নারী চাকরির খাতিরে ঘর থেকে বের হতে পারবে। তবে এর জন্য কিছু নিয়ম ও শর্ত রয়েছে। নিয়ম ও শর্তগুলো মেনে চললে নারীর জন্য ঘর থেকে বের হওয়া জায়েয হবে; অন্যথায় নয়।  যেমন-

যদি সত্যিকারে তার চাকরি করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে।

চাকরিটা তার দৈহিক, মানসিক স্বভাব ও রুচির সঙ্গে সামন্জস্যশীল হতে হবে। যেমন, ডাক্তারি, নার্সিং, শিক্ষা, সেলাই কিংবা এ জাতীয় পেশা হতে হবে।

কর্মক্ষেত্রে পর্দার পরিপূর্ণ পরিবেশ থাকতে হবে। অন্যথায় জায়েয হবে না।

চাকরির কারণে যাতে পরপুরুষের সঙ্গে সফর করতে না হয়।

কর্মক্ষেত্রে আসা-যাওয়ার পথে যাতে কোন হারাম কাজ করতে না হয়। যেমন, ড্রাইভারের সঙ্গে একাকী যাওয়া, পারফিউম ব্যবহার করা ইত্যাদি।

নারীর প্রধান কাজ ও দায়িত্ব হচ্ছে স্বামীর খেদমত করা, তার সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা ও মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা। যদি চাকরি করতে গিয়ে এসব দায়িত্ব পালনে ব্যাপক অসুবিধা হয় তাহলে তার জন্য চাকরি করা জায়েয হবে না। (ফাতাওয়াল মারআতিল মুসলিমাহ ২/৯৮১ ফিকহুন নাওয়াযিল ৩/৩৫৯)

মহিলাদের জন্য পর্দা রক্ষা করে ব্যবসা বাণিজ্য ও চাকুরী করা জায়েজ আছে। তবে এক্ষেত্রে যেন পর্দা লঙ্ঘণ না হয়, সেই সাথে শরয়ী অন্য কোন বিধান লঙ্ঘিত না হয়, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।  

আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/5338/

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!

 

১-৩. আপনি যে একটি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নি করতে চাচ্ছেন, এক্ষেত্রে আপনার কাজ যদি সুদ সংশ্লিষ্ট কাজ হয়, তাহলে এটি জায়েজ হবেনা। কেননা এতে সুদি কাজে সহযোগিতা করা হয়, আর তা হারাম এবং উক্ত কাজ করে বেতন নেওয়াও জায়েজ হবে না। একান্ত বেতন নিয়ে নিলে গরীবদেরকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া সদকা করে দিতে হবে।

আর যদি আপনার কাজ সুদ সংশ্লিষ্ট কাজ না হয়, তাহলে এটি জায়েজ হবে  এবং উক্ত কাজ করে বেতন নেওয়াও জায়েজ।

 

৪. প্রিয় বোন! এই বিষয়ে আপনিই সিদ্ধান্ত নিবেন। যদি কোনো ব্যাংকে পরিপূর্ণ পর্দার সাথে ইন্টার্নশিপ করা হয় বা করার সুযোগ থাকে আর যদি আপনার কাজ সুদ সংশ্লিষ্ট কাজ না হয়, তাহলে এটি জায়েজ হবে। অন্যথায় জায়েজ হবে না।

৫. না, এভাবে ধোঁকার আশ্রয় নেওয়াও জায়েজ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...