আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
309 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (32 points)
আসসালামু 'আলাইকুম।
ভার্সিটির/কলেজের সহশিক্ষায়  অনেকসময়  গ্রুপ করে রিসার্চ/থিসিস করতে হয়, বা গ্রুপ করে প্রজেক্ট করতে হয়।
কোন গ্রুপে কারা থাকবে, ছেলে-মেয়ে কম্বাইন্ড থাকবে কিনা এটা অনেকসময় শিক্ষক ঠিক করে দেয়।
তখন কম্বাইন্ড হয়ে গেলে শিক্ষককে অনুরোধ করে মেয়েদের আলাদা গ্রুপ কিংবা ছেলেদের আলাদা গ্রুপ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করাটা উচিত কিনা?


আর অনেকসময় গ্রুপে কারা থাকবে এটা শিক্ষকরা স্টুডেন্টদের উপর ছেড়ে দেয়!
সেক্ষেত্রে "আগেবাগে" প্লানিং করে রাখলে কিংবা আগেবাগে গ্রুপ করলে ছেলেদের আলাদা, মেয়েদের আলাদা গ্রুপ করা সম্ভব। এমতাবস্থায়, কেউ যদি সেচ্ছায় ছেলে হয়ে মেয়েদের গ্রুপে কিংবা মেয়ে হয়ে সেচ্ছায় ছেলেদের সাথে গ্রুপ করে এবং কাজ করে, তা কতটুকু জায়েজ হবে? গুনাহের কাজ হবে কিনা?


বিদ্র:
অনেকে প্রজেক্ট/রিসার্চ "ভালো" পারে না কিংবা পারবে না বিধায় ছেলে হয়ে মেয়েদের গ্রুপে, এবং মেয়ে হয়ে ছেলেদের গ্রুপে যুক্ত হয়। এবং স্যারদের আশা এবং নিয়ম হলো গ্রুপের কাজে সবার অবদান থাকবে।  কিন্তু অনেকে এভাবে গ্রুপিং ই করে কাজবাজ না করার জন্য বা কম করার জন্য।
ভালো একটা মার্কস ক্যারি করার জন্য ছেলে হয়ে মেয়েদের গ্রুপে সেচ্ছায় কিংবা মেয়ে হয়ে ছেলেদের গ্রুপে যুক্ত হওয়াটা কতটুকু জায়েজ? গুনাহের কাজ কিনা?
আরেকটা বিষয় হলো, এসব  গ্রুপের কাজবাজের জন্য একটা ম্যাসেনজার/ওয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একসাথে জয়েন থাকতে হয়। ম্যাসেজ দিতে হয়, অনেকসময় অডিও মিটিং এ জয়েন হতে হয়। অনেকসময় স্বশরীরে মিটিং করতে হয়, একসাথে সবার সামনে গিয়ে প্রেজেন্টেশন দিতে হয়।
টিচার বাধ্য করলে ভিন্ন কথা, কিন্তু নিজের অলসতা কিংবা অসাবধানতার জন্য কম্বাইন্ড গ্রুপে কাজ করা কিংবা সেচ্ছায় কম্বাইন্ড গ্রুপে যুক্ত হওয়া কাজ করা কতটুকু তাকওয়াক পরিচায়ক?  কতটুকু জায়েজ?   গুনাহের কাজ কিনা?

দয়া করে জানাবেন, জাযাকাল্লহু খইরন

1 Answer

0 votes
by (561,180 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠] 

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١] 

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

★উক্ত আয়াত সমূহে পরিস্কার ভাষায় মেয়েদের অন্যের সামনে নিজেকে প্রকাশ করতে, অপ্রয়োজনে কথা বলতে, আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে। 

দ্বীনী বা বৈধ প্রয়োজনীয় কোন বিষয় থাকলে কম কথায় শেষ করে নিবে। অযথা কথা বলা হারাম।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে গ্রুপ করে রিসার্চ/থিসিস করতে বা গ্রুপ করে প্রজেক্ট করতে  কোন গ্রুপে কারা থাকবে, ছেলে-মেয়ে কম্বাইন্ড থাকবে কিনা এটা যদি শিক্ষক ঠিক করে দেয়,সেক্ষেত্রে
তখন কম্বাইন্ড হয়ে গেলে শিক্ষককে অনুরোধ করে মেয়েদের আলাদা গ্রুপ কিংবা ছেলেদের আলাদা গ্রুপ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করাটা জরুরি ।

আগেই বিষয়টি সম্পর্কে শিক্ষককে অনুরোধ করা উচিত।

★আর যদি শিক্ষকরা এটি স্টুডেন্টদের উপর ছেড়ে দেয়!

সেক্ষেত্রে যদি "পূর্ব থেকেই" প্লানিং করে রাখলে কিংবা পূর্ব থেকেই গ্রুপ করলে ছেলেদের আলাদা, মেয়েদের আলাদা গ্রুপ করা সম্ভব হয়। সেক্ষেত্রে এমতাবস্থায়, কেউ যদি সেচ্ছায় ছেলে হয়ে মেয়েদের গ্রুপে কিংবা মেয়ে হয়ে সেচ্ছায় ছেলেদের সাথে গ্রুপ করে এবং কাজ করে, তা জায়েজ হবেনা।
এতে গুনাহ হবে।

★ভালো একটা মার্কস ক্যারি করার জন্য ছেলে হয়ে মেয়েদের গ্রুপে সেচ্ছায় কিংবা মেয়ে হয়ে ছেলেদের গ্রুপে যুক্ত হওয়াটা জায়েজ নয়।
গুনাহের কাজ হবে।

★টিচার বাধ্য না করলে নিজের অলসতা কিংবা অসাবধানতার জন্য কম্বাইন্ড গ্রুপে কাজ করা কিংবা সেচ্ছায় কম্বাইন্ড গ্রুপে যুক্ত হওয়া কাজ করা জায়েজ নয়।
গুনাহের কাজ হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...