আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
130 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (72 points)
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।

১।উপরের হাদিস টা হুজুর এটা একটু বুঝিয়ে বলুন।বিশেষ করে কার্যের ব্যাপার টা

২।কারো মনে মনে **** এর শর্ত আসল এটা বললে বা করলে অমুক হবে এবং সেই কাজটা করল বা বলল কিন্তু **** এর শর্ত সংযুক্ত করল না তাহলে তো কোন সমস্যা নেই হুজুর তাই না?


এই বুঝ টা কি ঠিক আছে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ- 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا مَا لم تعْمل بِهِ أَو تَتَكَلَّم»

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মতের হৃদয়ে যে খেয়াল জাগ্রত হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে তা কার্যে পরিণত করে বা মুখে উচ্চারণ করে।

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাতের অন্তরে যে ওয়াস্ওয়াসাহ্ বা খটকার উদয় হয়, আল্লাহ তা‘আলা তা মাফ করে দিবেন, যতক্ষণ না তারা তা কার্যে রূপায়ণ করে অথবা তা মুখে প্রকাশ করে।
সহীহ : বুখারী ২৫২৮, মুসলিম ১২৭,মিশকাত ৬৩।)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছেঃ-
ব্যাখ্যা: (تَجَاوَزَ عَنْ أُمَّتِىْ) ‘‘আমার কারণে আমার উম্মাতকে ক্ষমা করেছেন’’ এক বর্ণনাতে এমনটি উল্লেখ রয়েছে। এতে এ ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, উম্মাতে মুহাম্মাদীর মর্যাদার কারণ নাবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বয়ং। অতএব আল্লাহর অপার দয়া আমাদের ওপর রয়েছে যার কোন শেষ নেই। এতে এ ইঙ্গিতও রয়েছে এ বৈশিষ্ট্য শুধু এ উম্মাতেরই।

ইমাম ত্বীবী (রহঃ) বলেনঃ ওয়াস্ওয়াসাহ্ দু’ ধরনের- (১) জরুরী, (২) ইখতিয়ারী। জরুরী বলা হয় এমন ওয়াস্ওয়াসাকে যা মানুষের হৃদয়ে তার সূচনা হয় আর মানুষ তা রোধ করতে সক্ষম নয়। এ ধরনের ওয়াস্ওয়াসাহ্ সকল উম্মাতের জন্যই ক্ষমা।

ইখতিয়ারী হলো এমন ওয়াস্ওয়াসাহ্ যা হৃদয়ে অব্যাহতভাবে চলতে থাকে এবং লোকে তা কার্যে পরিণত করতে চায় এবং মনে মনে এ বিষয়ে সাধ ও অনুভব করে। যেমন মনের মধ্যে কোন মহিলার প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা এবং ঐ ভালোবাসা বাস্তবে রূপ দিতে চায়। এ ধরনের ওয়াস্ওয়াসাহ্ শুধু এ উম্মাতের জন্যই আল্লাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন আমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর উম্মাতের মর্যাদার কারণে।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
কোনো মানুষ কোনো গুনাহ করার খেয়াল করলে তাতে গুনাহ হবেনা।
কোনো গুনাহ করবে,এমনটি মনে মনে ভাবলে গুনাহ হবেনা।

তবে যখন সে কাজে পরিনত করবে,তথা মনে উদিত হওয়া সেই গুনাহের ভাবনাকে বাস্তবে কাজে পরিনত (তথা সেই গুনাহের কাজটি করে) তাহলেই কেবল গুনাহ হবে।

শুধু মনে মনে কাজ করবে বলে ভাবলে গুনাহ হবেনা,আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন।

যেমন কাহারো মনে চুরি করা ইচ্ছা হলো,এটা নিয়ে মনে মনে সে কৌশল আটলো।
এতে যতক্ষন পর্যন্ত চুরি করবেনা,ততক্ষন পর্যন্ত গুনাহ হবেনা।

মনে মনে চুরির কল্পনা আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 

وَعَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ الحسناتِ والسيِّئاتِ: فَمَنْ هَمَّ بِحَسَنَةٍ فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ لهُ عندَهُ حَسَنَة كَامِلَة فَإِن هم بعملها كَتَبَهَا اللَّهُ لَهُ عِنْدَهُ عَشْرَ حَسَنَاتٍ إِلَى سَبْعِمِائَةِ ضِعْفٍ إِلَى أَضْعَافٍ كَثِيرَةٍ وَمَنْ هَمَّ بسيئة فَلَمْ يَعْمَلْهَا كَتَبَهَا اللَّهُ عِنْدَهُ حَسَنَةً كَامِلَةً فَإِن هُوَ هم بعملها كتبهَا الله لَهُ سَيِّئَة وَاحِدَة 

‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা‘আলা সৎ-অসৎ চিহ্নিত করে রেখেছেন। যে ব্যক্তি সৎ কাজের সংকল্প করে, কিন্তু তা করেনি আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য একটি পূর্ণ নেকী লিখে নেন। আর যদি সৎ কাজের সংকল্প করার পর তা বাস্তবায়ন করে, তাহলে আল্লাহ তা‘আলা তাকে এই একটি সৎ কাজের জন্য দশ গুণ হতে সাতশ’ গুণ, বরং বহুগুণ পর্যন্ত সৎ কাজ হিসেবে লিখে রাখেন। আর যে ব্যক্তি অসৎ কাজের সংকল্প করে, কিন্তু বাস্তবে তা না করে, আল্লাহ তা‘আলা তার জন্য একে একটি পূর্ণ নেক কাজ হিসেবে লিখে নেন। আর যদি অসৎ কাজের সংকল্প করার পর তা বাস্তবে করে, তাহলে আল্লাহ এর জন্য তার একটি মাত্র গুনাহ লিখে রাখেন।
(সহীহ : বুখারী ৬৪৯১, মুসলিম ১৩১, আহমাদ ২৮২৭, শু‘আবূল ঈমান ৩২৮, সহীহ আত্ তারগীব ১৭,মিশকাত ২৩৭৪।)

(০২)
হ্যাঁ, তাহলে কোনো সমস্যা হবেনা।
এই বুঝটা ঠিক আছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...