ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
□ শরীয়তের বিধান হলো যে পদ্ধতিতে কোন ইবাদত খাইরুল কুরুনে আদায়
করা হতো না, সেটিকে জরুরী মনে করে বা একমাত্র পদ্ধতি মনে করে, বা আবশ্যকীয় পদ্ধতি বানিয়ে
উক্ত ইবাদত করাও বিদআতের শামিল।
রাসুল সাঃ
বলেন-
وَإِيّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ، فَإِنّ
كُلّ مُحْدَثَةٍ بِدْعَةٌ، وَكُلّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ.
আর সকল
নব উদ্ভাবিত বিষয় থেকে দূরে থাকবে। কারণ, সকল নব উদ্ভাবিত বিষয় বিদআত। আর সকল বিদআত
গোমরাহী ও ভ্রষ্টতা।’ (দ্র. মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৭১৪২, ১৭১৪৫)
□ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-
وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ
‘(দ্বীনের
নামে) নবউদ্ভাবিত সকল বিষয় থেকে দূরে থাক।’
□ হাদিস শরীফে এসেছে-
وَكُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ»
তরজমা-
প্রত্যেক নবসৃষ্টই বিদআত(আবু-দাউদ হাদিস নং৪৬০৭-লম্বা হাদিসের অংশ বিশেষ)
উক্ত হাদিসের
ব্যখ্যায় বিদআতের আলোচনা করতে যেয়ে আব্দুর রহমান মোবারকপুরি রাহ বলেন-
والمراد بالبدعة ما أحدث في الدين ما لا أصل له
في الشريعة يدل عليه)مراعاة المفاتيح شرح مشكاة المصابيح -ج1ص264(
তরজমা-
বিদআত দ্বারা উদ্দেশ্য হল, দ্বীনের মধ্যে এমন কোনো জিনিষ নবআবিস্কৃত হওয়া, যাকে শরীয়তের মূলনীতি সমর্থন
দেয়না।
□ অন্য এক হাদীসে এসেছে-
সাহল ইবন সা’দ (রা) ও অন্যান্য সাহাবী বর্ণিত হাদীসে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন:
إِنِّي فَرَطُكُمْ عَلَى الْحَوْضِ مَنْ مَرَّ
عَلَيَّ شَرِبَ وَمَنْ شَرِبَ لَمْ يَظْمَأْ أَبَدًا لَيَرِدَنَّ عَلَيَّ
أَقْوَامٌ أَعْرِفُهُمْ وَيَعْرِفُونِي ثُمَّ يُحَالُ بَيْنِي وَبَيْنَهُمْ،
فَأَقُولُ: إِنَّهُمْ مِنِّي فَيُقَالُ إِنَّكَ لا تَدْرِي مَا أَحْدَثُوا
بَعْدَكَ (في رواية: إِنَّكَ لا تَدْرِي مَا عَمِلُوا بَعْدَكَ)، فَأَقُولُ
سُحْقًا سُحْقًا لِمَنْ غَيَّرَ بَعْدِي.
আমি তোমাদের আগে হাউযে গিয়ে তোমাদের জন্য অপেক্ষা করব। যে আমার কাছে যাবে সে (হাউয)
থেকে পান করবে, আর যে পান করবে সে আর কখনো পিপাসার্ত হবে না। অনেক মানুষ আমার
কাছে (হাউযে পানি পানের জন্য) আসবে, যাদেরকে আমি চিনতে পারব এবং তারাও আমাকে
চিনতে পারবে, কিন্তু তাদেরকে আমার কাছে আসতে দেওয়া হবে না, বাধা দেওয়া হবে। আমি বলব:
এরা তো আমারই উম্মত। তখন উত্তরে বলা হবে : আপনি জানেন না, এরা আপনার পরে কী-সব নব উদ্ভাবন
করেছিল। (দ্বিতীয় বর্ণনায় : আপনার পরে তারা কী আমল করেছে তা আপনি জানেন না।) তখন আমি
বলব: যারা আমার পরে (আমার দ্বীনকে) পরিবর্তিত করেছে তারা দূর হয়ে যাক, তারা দূর হয়ে যাক!’’ [সহীহ
বুখারী, ৫/২৪০৬]
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১-২. কিছু বিদআত আছে যা শিরক বা
কুফরী পর্যন্ত নিয়ে যায়। অর্থাৎ বিদআতকারী মুশরিক বা কাফের হয়ে যায়। সুতরাং কেউ যদি
এমন বিদআত করে থাকে যার দ্বারা ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। তাহলে তার জন্য রাসূল সা. সুপারিশ
করবেন না এবং এই প্রকার বিদআতকারীকে আল্লাহ তায়ালা মাফ করবেন না যদি সে তওবা করা
ছাড়া মারা যায়।
৩. জ্বী হ্যাঁ, গান শোনা, নাচ
গান দেখা এটা অনেক বড় গোনাহের কাজ। তবে বিদআত নয়।
৪. কোনো খুশীর ঘটনা ঘটলে আনন্দে
আত্মীয়-স্বজনকে খাওয়ালে এটা বিদআত হবে না।
৫. কেউ যদি এমন বিদআত করে থাকে
যার দ্বারা ঈমান নষ্ট হয়ে যায় তাহলে এমন ব্যক্তি তওবা করা ছাড়া ক্ষমা পাবে না।
৬. আপনি চেষ্টা করবেন যাতে করে
ফজরের নামাজ কাযা না হয়ে যায়। কারণ, এটা একটি ফরজ বিধান। না পড়লে অনেক অনেক গোনাহ
হবে।