بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
অপচয় ও কৃপণতা সর্বক্ষেত্রেই নিন্দনীয়। পোশাক-পরিচ্ছদেও এর ব্যতিক্রম নয়।
সামর্থ্য থাকার পরও কেউ যদি কৃপণতা করে নিম্নমানের পোশাক পরিধান করে ইসলামে তাদের
অপছন্দ করা হয়েছে। একবার আবুল আহওয়াসের পিতা মালিক বিন আউফ রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর
কাছে এলেন। তখন তাঁর পরনে ছিল অতি নিম্নমানের পোশাক। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার কি সম্পদ আছে? আমি বললাম,
হ্যাঁ। তিনি পুনরায়
জিজ্ঞেস করেন, কী সম্পদ আছে? আমি বললাম, সব ধরনের সম্পদই আল্লাহ আমাকে দান করেছেন।
উট, গরু, ছাগল, ঘোড়া,
গোলাম ইত্যাদি। তখন
তিনি ইরশাদ করলেন, ‘যখন আল্লাহ তাআলা তোমাকে সম্পদ দিয়েছেন
তখন তোমার ওপর তাঁর নিয়ামতের ছাপ থাকা চাই। ’ (নাসাঈ, হাদিস: ৫২৯৪)
আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ
وَلا
تَمْشِ فِي الْأَرْضِ مَرَحاً إِنَّكَ لَنْ تَخْرِقَ الْأَرْضَ وَلَنْ تَبْلُغَ
الْجِبَالَ طُولاً
অর্থঃ “ভূ-পৃষ্ঠে দম্ভভরে বিচরণ করো না, তুমি তো কখনোই পদভারে ভূ-পৃষ্ঠ
বিদীর্ণ করতে পারবে না এবং উচ্চতায় তুমি কখনোই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না”। [সূরা
ইসরাঃ ৩৭]
অহংকার বা মানুষ
দেখানোর মানসিকতা সর্বাবস্থায় সকল কাজেই নিন্দনীয়। পোশাক-পরিচ্ছদের মাধ্যমেও যেন এই
ব্যাধি মানুষের অন্তরে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়েও হাদিস শরিফে বিশেষ নির্দেশনা
রয়েছে। এক হাদিসে নবী করিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি অহংকারবশত মাটিতে কাপড় টেনে টেনে চলে আল্লাহ
তাআলা কেয়ামতের দিন তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না (রাগান্বিত থাকবেন)। (বুখারি,
হাদিস: ৫৭৯১)
**বিভিন্ন অসুবিধায়
মানুষের রক্ত প্রদান-গ্রহণের প্রয়োজন হয়। ইসলামে এ ব্যাপারেও রয়েছে সুন্দর নির্দেশনা।
স্বেচ্ছায় নিজের রক্ত অন্য কারও প্রয়োজনে দান করাই রক্তদান।
রক্ত দানকারীরা
খুবই ভাগ্যবান। দুনিয়াতেও তাদের উপকার, আখেরাতেও তাদের উপকার। দুনিয়ার উপকারটা দুই ধরনের। একটি
হলো ব্যক্তিগত উপকার আর অন্যটি হলো জনগণের উপকার। ব্যক্তিগত উপকারের কথা বলা হলে বলতে
হবে যে, রক্তদান
স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
রক্ত শরীরের ভেতরে
থাকাবস্থায় পবিত্র। আর শরীর থেকে বের হয়ে গেলে অপবিত্র। এর আসল দাবি হলো,
অন্যের শরীরে রক্ত দেওয়া হারাম হওয়া। তাই
স্বাভাবিক অবস্থায় (প্রয়োজন ও কারণ ছাড়া) একজনের রক্ত অন্যের শরীরে স্থানান্তর করা
শরিয়তে নিষেধ। তাই রক্ত গ্রহণের বিকল্প নেই, এমন অসুস্থ ব্যক্তিকে রক্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত
বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে।
১. যখন কোনো অসুস্থ
ব্যক্তির জীবননাশের আশঙ্কা দেখা দেয় এবং অভিজ্ঞ ডাক্তারের মতে তার শরীরে অন্যের রক্ত
দেওয়া ব্যতীত বাঁচানোর কোনো পন্থা না থাকে, তখন রক্ত দিতে কোনো অসুবিধা নেই। বরং এ ক্ষেত্রে ইসলাম
আরও উৎসাহ দিয়েছে। ২. রক্ত দেওয়া প্রয়োজন। অর্থাৎ অসুস্থ ব্যক্তির মৃত্যুর আশঙ্কা নেই
বটে, কিন্তু
রক্ত দেওয়া ছাড়া তার জীবনের ঝুঁকি বাড়ে অথবা রোগমুক্তি বিলম্বিত হয়;
এমন অবস্থায় রক্ত দেওয়া জায়েজ ও জরুরি।
৩. যখন রোগীর শরীরে রক্ত দেওয়ার খুব বেশি প্রয়োজন দেখা দেয় না,
বরং রক্ত না দেওয়ার অবকাশ থাকে;
তখন অযথা রক্ত দেওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।
৪. যখন জীবননাশের এবং অসুস্থতা বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা না থাকে,
বরং শুধু শক্তি বৃদ্ধি এবং সৌন্দর্যবর্ধনের
উদ্দেশ্যে হয়; সে
অবস্থায় ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক রক্তদান জায়েজ নয়। (ফাতাওয়া আলমগিরি ৫/৩৫৫; রদ্দুল মুহতার : ৬/৩৮৯)
প্রিয় প্রশ্নকারী
দ্বীনী ভাই/বোন!
১-২. প্রয়োজনের অতিরিক্ত মূল্যে কোন মোবাইল বা পোশাক পরিধান করা হারাম
নয়। তবে সর্বদা মধ্যমপন্থা অবলম্বন করাই শ্রেয়। যেমন প্রয়োজনাতিরিক্ত খরচ করা
যাবে না, তেমনি কৃপণতাও করা যাবে না। কিন্তু মানুষকে দেখানোর জন্য অহংকার বশত দামী বস্তু ব্যবহার
করলে তা জায়েয হবে না।
৩.রক্তের ব্যাংক
বা বিভিন্ন সংস্থা যেখানে লোকেরা স্বেচ্ছায় রক্ত দান করে এবং
তারা ব্যাংকগুলো অভাবগ্রস্তকে বিনামূল্যে রক্ত সরবরাহ করে সেখানে মুসলমানদের জন্য রক্তদান
করা জায়েজ। এটি মানব সেবার অন্তর্ভুক্ত। (কিতাবুন নাওয়াজিল : ১৬/২১৫)।
তবে যদি কোন সংস্থা সাধারণ
মানুষ থেকে রক্ত নিয়ে অন্যের নিকট বিক্রি করে, তাহলে জেনে শুনে সেখানে রক্ত প্রদান
করা জায়েয নেই।
আরো জানুন: https://ifatwa.info/58382/?show=58382#q58382