বিসমিহি তা'আলা
সমাধানঃ-
বৃটিশ আইন এবং দেশীয় বিভিন্ন সংস্কারমূলক আইন দ্বারা বাংলাদেশের বিচার বিভাগ পরিচালিত।
এর মধ্যে সমস্ত ধারা ইসলাম বিরোধী নয়, যদিও বিচার সংক্রান্ত সমস্ত আইন-কানুন কোরআন-সুন্নাহর আলোকে রচিতও হয়নি।
অবশ্যই পরবর্তিতে কিছু আইন মোটামোটি কোরআন-সুন্নাহর আলোকে রচিত হয়েছে।
যেমন বিবাহ-তালাক,সম্পদ বন্টন,শুফা,ইত্যাদি।
সাধারণত ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যে ন্যায়ের পক্ষেই ইসলামের অবস্থান।
আর উকিল যিনি উনিতো ন্যায়ের পক্ষেই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করছেন,উনিতো আর বিচারক না উনি শুধুমাত্র বাদী বা বিবাদীর মনের কথাকে যুক্তির আলোকে সত্য প্রকাশের উদ্দেশ্যে বিচারকের সামনে উপস্থাপন করছেন।
তাই সত্যাসত্যি ও ন্যায় প্রতিষ্টার উদ্দেশ্যে যে উকিল লড়বেন তিনি অবশ্যই উত্তম ও প্রশংসনীয় কাজ করছেন এবং কোরআন-সুন্নাহ বিরোধী নয় এমন কোন কাজে যদি তিনি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তাহলে অবশ্যই তিনি সওয়াবের অধিকারী হবেন। পক্ষান্তরে যদি তিনি এমন কোন বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন যা অদ্য কোরঅান-সুন্নাহ সমর্থিত নয়,তবে ইসলামের মৌলিক কোনো বিষয়ের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিকও নয়,অন্যদিকে দেশের নাগরিকগণ উক্ত বিষয়ের সমস্ত বিধি-বিধান সম্পর্কে অবগত থাকেন,তাহলে উক্ত বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করাও একটি উত্তম কাজ।
এবং এ কাজকে সওয়াব থেকে একেবারে বঞ্চিত না করাটাই যুক্তিসংগত।কেননা প্রতিটা উত্তম কাজে কিছুনা কিছু সওয়াব অবশ্যই থাকে।
★
আমাদের সামনে সহসাই একটি প্রশ্ন আসে যে,উকিল কেন কোর্টে ইসলামী বিধি-বিধান বাস্তবায়নের দাবী তুলছে না?
এ প্রশ্নের জবাব হচ্ছে,উকিলের সামনে ইসলামি আইনের সরকার অনুমোদনকৃত কোনো দ্বারা নেই ,যা সে বিচারকের সামনে উপস্থাপন করবে।
★প্রশ্ন হতে পারে তাহলে কি তার জন্য এমতাবস্থায় কোর্টে উকিল পেশায় নিযুক্ত থাকাটা জায়েয হবে না?
এ প্রশ্নের জবাবে বলা যায় যে,
ইসলামি আইন বাস্তবায়ন করা বা তার দাবী তোলা ও আন্দোলন করা একা উকিলের দায়িত্ব নয় বরং সকল মুসলমানের দায়িত্ব।এজন্য ইসলামী হুকুমত প্রতিষ্টা করা সকল মুসলমানের উপর ফরযে কেফায়া।
ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্টা সম্পর্কে জানতে ভিজিট করুন-356
যেহেতু আমাদের দেশে পুরোপুরি শরয়ী বিচার ব্যবস্থা নেই।তাই শরয়ী বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্টার আন্দোলনে শরীক থেকে ও তা বাস্তবায়নের আকাংখা অন্তরে লালন করে বর্তমান কোর্টে উকালতি করার অনুমোদন রয়েছে।কেননা যদি আমরা কোর্টকে সম্পূর্ণ পরিত্যাগ করে ফেলি, তাহলে সেটা অমুসলিম বা ধর্মনিরপেক্ষবাদীদের অবাধ বিচরণক্ষেত্রে পরিণত হয়ে যাবে।যেখানে সাধারণ ন্যায়ের পক্ষে কথা বলার মত কেউ-ই থাকবে না।তবে অন্তরে সর্বদা শরয়ী বিধি-বিধান বাস্তবায়নের আক্ষেপ ও অাকাংখা লালন করতে হবে।
ইসলাম চায় অপরাধমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা।কুরআন-হাদীসে কোনো অপরাধের যে সাজা বর্ণিত রয়েছে,সে সাজা কার্যকর করা ব্যতীত মূলত ঐ অপরাধকে ধমন করা কস্মিনকালেও সম্ভব হবে না।যার উজ্জল দৃষ্টান্ত হল,ধর্ষণ। ইসলামি আইন বাস্তবায়ন করলে এ অপরাধের সংখ্যা দিনিদিন কমবে।কিন্তু মানুষ কর্তৃক তৈরী আইনে এ অপরাধের সংখ্যা দিনিদিন বাড়ছে।তবে তারপরও সাজা হিসেবে একটি আইন রয়েছে।
কিন্তু যদি কোথাও এটাকে অপরাধ হিসেবেই বিবেচনা করা হয় না,বরং এটাকে স্বাভাবিক মনে করা হয়,এবং এ আলোকে কোনো যুক্তিতর্ক উপস্থাপিত হয়,তাহলে এমন যুক্তিতর্কে০ যুক্ত হওয়া কখনো জায়েয হবে না।এটা পরিস্কার হারাম এবং কুরআন অস্বীকারের দরুণ সে কাফির হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় আরেকটি প্রশ্ন আমাদের সামনে চলে আসে, সেটা হল,
বাংলাদেশে পুরোপুরি কোরআন-সুন্নাহর আইন নেই, এজন্য উকিলেরর সামনে শরয়ী যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সাংবিধানিক অনুমোদন নেই।উকিল চাইলেও সে শরয়ী বিচারের দাবী করতে পারবে না।
তাহলে উক্ত কোর্টে আমাদের জন্য বিচার চাওয়াটা কতটুকু অনুমোদনযোগ্য হতে পারে ?
জবাবে বলা যাবে যে,
আমাদের বিচার ব্যবস্থায় পুরোপুরি শরয়ী বিধি-বিধান যদিও নেই,তবে সাধারণ ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যে অবশ্য ন্যায়ের পক্ষেই কোর্টের অবস্থান রয়েছে।
তাই আমাদের জন্য যেহেতু এছাড়া আর ভিন্ন কোনো বিচার ব্যবস্থা নেই।এখন আমরা নিজ-জানকে হেফাজত করতে উক্ত কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে বিচার চাইতে মজবুর-
ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্টার আন্দোলনে শরীক থেকে ও তা বাস্তবায়নের দূঢ় প্রত্যয় ও আক্ষেপ অন্তরে লালন করে উক্ত কোর্টে বিচার চাওয়া অনুমোদনযোগ্য ই মনে হচ্ছে।
তবে নতুনভাবে উপস্থাপিত সরাসরি ইসলামের মৌলিকতা বিরোধী আনীত কোনো বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা কোনো উকিলের জন্য কখনো জায়েয হবে না। এমতাবস্থা সে মিথ্যাচারী হবে।এবং ক্ষেত্রবেধে তার ঈমান চলে যাবার প্রবল আশংকা থাকবে।
যেমন, রাষ্ট্র ধর্ম ইসলাম বহাল থাকা না থাকা ইস্যু,এবং কুরআন-হাদীস বিরোধী আনীত নতুন সকল বিলের পক্ষে অবস্থান নেয়া।এটা কখনো জায়েয হবে না।বরং এটা পরিস্কার নাজায়েয ও হারাম হবে।
কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী আইন বাস্তবায়ন সম্পর্কে আরো জানতে ভিজিট করুন-623
আল্লাহ-ই ভালো জানেন।