বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/31561/?show=31561#q31561 নং
ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
ওয়াদাকে পূর্ণ করার বিধান কি? ওয়াজিব
না মুস্তাহাব? এবং ওয়াদাকে ভঙ্গ করা
হারাম না মাকরুহ?
সে সম্পর্কে ইমাম নববী রাহ বলেন,
"
ﺃﺟﻤﻊَ
ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀُ ﻋﻠﻰ ﺃﻥ ﻣَﻦ ﻭﻋﺪ ﺇﻧﺴﺎﻧﺎً ﺷﻴﺌﺎً ﻟﻴﺲ ﺑﻤﻨﻬﻲّ ﻋﻨﻪ ﻓﻴﻨﺒﻐﻲ ﺃﻥ ﻳﻔﻲ ﺑﻮﻋﺪﻩ ، ﻭﻫﻞ ﺫﻟﻚ
ﻭﺍﺟﺐٌ ، ﺃﻭ ﻣﺴﺘﺤﺐّ ؟ ﻓﻴﻪ ﺧﻼﻑ ﺑﻴﻨﻬﻢ ، ﺫﻫﺐ ﺍﻟﺸﺎﻓﻌﻲُّ ﻭﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ ﻭﺍﻟﺠﻤﻬﻮﺭُ ﺇﻟﻰ ﺃﻧﻪ ﻣﺴﺘﺤﺐّ
، ﻓﻠﻮ ﺗﺮﻛﻪ ﻓﺎﺗﻪ ﺍﻟﻔﻀﻞ ، ﻭﺍﺭﺗﻜﺐ ﺍﻟﻤﻜﺮﻭﻩ ﻛﺮﺍﻫﺔ ﺗﻨﺰﻳﻪ ﺷﺪﻳﺪﺓ، ﻭﻟﻜﻦ ﻻ ﻳﺄﺛﻢ
.
ﻭﺫﻫﺐَ
ﺟﻤﺎﻋﺔٌ ﺇﻟﻰ ﺃﻧﻪ ﻭﺍﺟﺐ ، ﻗﺎﻝ ﺍﻹِﻣﺎﻡُ ﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﺑﻦ ﺍﻟﻌﺮﺑﻲ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻲ : ﺃﺟﻞُّ ﻣَﻦ ﺫﻫﺐَ ﺇﻟﻰ
ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻤﺬﻫﺐ ﻋﻤﺮُ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰ ، ﻗﺎﻝ : ﻭﺫﻫﺒﺖِ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻴﺔ ﻣﺬﻫﺒﺎً ﺛﺎﻟﺜﺎً : ﺃﻧﻪ ﺇﻥ ﺍﺭﺗﺒﻂ
ﺍﻟﻮﻋﺪُ ﺑﺴﺒﺐ ﻛﻘﻮﻟﻪ : ﺗﺰﻭّﺝ ﻭﻟﻚ ﻛﺬﺍ، ﺃﻭ ﺍﺣﻠﻒ ﺃﻧﻚ ﻻ ﺗﺸﺘﻤﻨﻲ ﻭﻟﻚ ﻛﺬﺍ، ﺃﻭ ﻧﺤﻮ ﺫﻟﻚ ، ﻭﺟﺐ
ﺍﻟﻮﻓﺎﺀ ، ﻭﺇﻥ ﻛﺎﻥ ﻭﻋﺪﺍً ﻣُﻄﻠﻘﺎً، ﻟﻢ ﻳﺠﺐ .
ﻭﺍﺳﺘﺪﻝّ
ﻣَﻦ ﻟﻢ ﻳﻮﺟﺒﻪ ﺑﺄﻧﻪ ﻓﻲ ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﻬﺒﺔ ، ﻭﺍﻟﻬﺒﺔ ﻻ ﺗﻠﺰﻡ ﺇﻻ ﺑﺎﻟﻘﺒﺾ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﺠﻤﻬﻮﺭ، ﻭﻋﻨﺪ ﺍﻟﻤﺎﻟﻜﻴﺔ
: ﺗﻠﺰﻡ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﻘﺒﺾ "
উলামায়ে কেরাম এ কথার উপর একমত যে,যদি
কোনো মানুষ কারো সাথে এমন কোনো বিষয়ের ওয়াদা করে যা নিষিদ্ধ নয়,তাহলে
তার জন্য উচিৎ হল সেই ওয়াদাকে পূর্ণ করা। ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না মুস্তাহাব? এ
সম্পর্কে অবশ্যই মতপার্থক্য রয়েছে।ইমাম শা'ফেয়ী ও ইমাম
আবু হানিফা এবং জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা মুস্তাহাব।যদি সে ওয়াদাকে
ভঙ্গ করে ফেলে তাহলে যেন সে উত্তমতাকে পরিত্যাগ করল,এবং শক্ত মাকরুহে
তানযিহি সম্ভলিত কাজে লিপ্ত হল।কিন্তু সে আবার গোনাহগার হবে না। অন্যদিকে এক দল উলামায়ে
কেরামের মতে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব। ইমাম আবু বকর ইবনুল আরাবি মালিকি রাহ বলেন,যারা
উক্ত মাযহাবের প্রবক্তা তাদের মধ্যে এটা উমর ইবনে আব্দুল আযিয রাহ শীর্ষে রয়েছেন।তিনি
আরো বলেন,মালিকি মাযহাবের উলামাগণ তৃতীয় আরেকটি মাযহাবকে বর্ণনা করেছেন।
সেটা হল যে,যদি কেউ কাউকে বলে, তুমি বিয়ে করবে
বলে ওয়াদা করো তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে।অথবা তুমি ওয়াদা করো আমাকে গালি দেবে
না তোমাকে এই পরিমাণ মাল দেয়া হবে ইত্যাদি বাক্য। তাহলে এমতাবস্থায় ওয়াদাকে পূর্ণ করা
ওয়াজিব হবে। আর যদি স্বাভাবিক ওয়াদা হয়ে থাকে তাহলে ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব না।যারা
ওয়াদাকে পূর্ণ করা ওয়াজিব বলেন না তারা বলেন, যে ওয়াদা হলো
হেবার সমার্থক। আর জুমহুর উলামায়ে কেরামের মতে হেবা কবজা ব্যতীত পরিপূর্ণ হয় না। তবে
ইমাম মালিক রাহ এর মতে ওয়াদা কবজার পূর্বেও ওয়াজিব হয়ে যায়। (আল-আযকার-৩১৭)
ওলিমার আয়োজন করা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/52878/
কনের বাড়ীতে দাওয়াত খাওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/52878/
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. বিয়ের engagement করা মানে বিয়ে করার জন্য ওয়াদা করা। আর কোন বিষয়ে ওয়াদা করে
তা পালন করা একজন মুমিনের কর্তব্য ও দায়িত্ব। সুতরাং শরীয়ত সম্মত কারণ ছাড়া বিয়ের ওয়াদা
করে তা অযথা ভঙ্গ করা অত্যান্ত গর্হিত কাজ।
২. Engagement মানে
হলো বিয়ের তারিখ বা বিয়েটা নির্ধারণের জন্য যেই অনুষ্ঠান করা হয়। যেখানে অনেক
ধুমধামের সাথে অনেক বড় আয়োজন করা হয়ে থাকে। অনেক শরীয়ত বিরোধী (গান,বাজনা, ফ্রি
মিক্সিং ইত্যাদি) কাজও হয়ে থাকে। তাই এমন অনুষ্ঠানে যাওয়া ঠিক নয়। আর সেখানে গেলে
কোনো গোনাহ হওয়ার বা পর্দা লঙ্ঘন হওয়ার সম্ভবনা থাকলে তাহলে তো সেখানে যাওয়াই
জায়েজ হবে না।
৩. যদি কনে পক্ষ যদি কাহারো চাপে পরে নয়, বরং এমনিতেই সন্তুষ্টি চিত্তে মেয়ের বাড়ীতেই বা কমিউনিটি সেন্টারে দাওয়াতের
আয়োজন করে, তাহলে পর্দা
মেইনটেইনের শর্তের ভিত্তিতে সেই দাওয়াতে যাওয়া যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে যদি
মেয়ে পক্ষকে চাপ প্রয়োগ করে (যা আমাদের সমাজে সাধারণত হয়ে থাকে) বেশী লোকের
দাওয়াতের আয়োজন করা হয় বা তাদেরকে পেসার দিয়ে তাদের থেকে টাকা নিয়ে ছেলেদের বাড়ীতে
আয়োজন করা হয় তাহলে এমন দাওয়াত খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং খাবার দিয়ে গেলেও তা
খাওয়া যাবে না। বরং গরীবদেরকে দিয়ে দিতে হবে।
৪. এটা তো
অনেক বড় লজ্জার বিষয় যে, মেয়ে পক্ষ থেকে টাকা
এনে ছেলের বাড়ীতে দাওয়াতের আয়োজন করা। এসব থেকে বিরত থাকা চাই। এমন অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিলেও
বা খাবার পাঠিয়ে দিলেও তা খাওয়া থেকে বিরত থাকা চাই। কারণ কনে পক্ষ সন্তুষ্ট চিত্তে
দিয়েছে কি না। সন্দেহ রয়েছে। বরং বেশী সম্ভবনা রয়েছে যে, কনে পক্ষকে চাপ প্রয়োগ করে বা কনে
পক্ষ চক্ষু লজ্জার কারণে এই টাকা দিয়েছে। আর শরীয়তের বিধান হলো বিবাহের পরদিন (বাসর রাত পর) পাত্রের পক্ষ (কনের পক্ষ থেকে
নয়) থেকে ওলিমা
(লোকদেরকে খাওয়ানো) করা সুন্নাত।
৫. উক্ত অনুষ্ঠান উপলক্ষে কেক কাটার জন্য তৈরী
করা হলে তা শরীয়ত সমর্থন করে না। সুতরাং এ থেকে বিরত থাকা চাই। যদি এমনি খাওয়ার জন্য
এবং মালিকের সন্তুষ্ট চিত্তে হয়ে থাকে তাহলে জায়েজ আছে।