আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
164 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ উস্তায।

==।আমার বাবার ব্যাংকে চাকরী।পুরো উপার্জন হারাম।কোনোও হালাল উপার্জন নেই আমাদের।এখন আমাদের বাড়িতে মেহমান আসলে, তাদের যে আপ্যায়ন করা হয়,,তারা বেশিরভাগই জেনে বুঝেই খায়।

১।তাহলে কি তাদের নামায কবুল না হওয়ার সম্ভাবনা? নাকি শ দোয়া কবুল না হওয়ার সম্ভাবনা?২।এক্ষেত্রে আমার বাবা গোনাহগার হবে কি?

==আমি ব্যাংকে চাকরী হারাম জানার পরে বাসায় বলেছি।কিন্তু বাবা মানতে চায় না।কারও মেহমানদারির আয়োজন করলে ধার করে খরচ করতে বললেও কথা গুরুত্ব দেয় না।রাগারাগি করে।অনেক চেস্টা করেছি বোঝানোর।এক্ষেত্রে

১। যেহেতু,আমাদের বেশিরভাগ সময়ই একটা দোকান থেকে বাকিতে কিনে খাওয়া হয় সেহেতু মেহমান খাওয়ানোর পর আমি লুকিয়ে দোকানের  টাকা টা পরিশোধ করার সময় যদি টাকা বদল করে দিই,,তাহলে কি  চলবে? কারণ আমার বাবাকে  মেহমানদের জন্য বাজার করার আগে একমুঠে হালাল টাকার সাথে হারাম টাকা বদল করতে বললে বাসায় খুব ঝামেলা করে।


এ অবস্থায় আমার কি করা  উচিৎ জানাবেন উস্তায।

জাযাকুমুল্লহু খয়ের

1 Answer

0 votes
by (58,470 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/1900 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,

অবৈধ ও হারাম সম্পত্তির মালিকের নিকট থেকে হাদিয়া গ্রহণ সম্পর্কে কিছুটা ব্যাখ্যা রয়েছে।

(১)লোকটির সম্পূর্ণ সম্পত্তিই হারাম। এবং সে তার ঐ সম্পত্তি থেকেই কাউকে হাদিয়া দিতে চাচ্ছে।

(২)লোকটির সম্পত্তিতে হালাল-হারামের সংমিশ্রণ রয়েছে। কোন গুলো হারাম আর কোনো গুলো হালাল, তার পরিচয় লাভের কোনো সুযোগ নেই।

তবে হারামের ধিক্যর সম্ভাবনাই বেশী। উক্ত ব্যক্তিটি তার ঐ মিশ্রিত সম্পদ থেকে হাদিয়া দিতে চাচ্ছে।

(৩)দ্বিতীয় প্রকারের উল্টো তথা-লোকটির সম্পত্তিতে হালাল-হারামের সংমিশ্রণ রয়েছে। কোন গুলো হারাম আর কোনো গুলো হালাল, তার পরিচয় লাভের কোনো সুযোগ নেই।

তবে হালালের ধিক্যর সম্ভাবনাই বেশী।উক্ত ব্যক্তিটি তার ঐ মিশ্রিত সম্পদ থেকে হাদিয়া দিতে চাচ্ছে।

(৪)হারাম সম্পত্তির মালিক তার হারাম টাকা থেকে হাদিয়া দিচ্ছে না।বরং কারো থেকে হালাল টাকা ধার করে বা কারো কাছ থেকে অর্থ নিয়ে হাদিয়্যা দিচ্ছে।

১ম নং এবং ২য়নং সূরতে উক্ত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে হাদিয়া গ্রহণ জায়েজ হবে না। আর ৩য় সুরতে জায়েয হলেও, গ্রহণ না করাই উত্তম। এবং ৪র্থ সুরতে হাদিয়া গ্রহণ জায়েজ।

জ্ঞাতব্য যে,ব্যাংকের সকল ইনকাম হারাম নয়। বরং কিছু জায়েযও আছে।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন-https://www.ifatwa.info/398

সুতরাং বিত্তশালীর জন্য হারাম মাল থেকে হাদিয়া গ্রহণ কখনো জায়েয হবে না।তবে যাকে হাদিয়া দেয়া হচ্ছে, তিনি যদি এমন মিসকিন হন যে, তার উপর যাকাত ওয়াজিব হওয়ার পরিমাণ সম্পদ নেই। তাহলে এমন ব্যক্তির জন্য উক্ত হাদিয়া গ্রহণ জায়েয।কেননা হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে সে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেবে।যদি ফিরিয়ে দেয়া সম্ভব না হয়,তাহলে গরীবদেরকে সদকাহ করে দেবে।(মা'রিফুস-সুনান১/৩৪)

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

যদি দাওয়াত প্রদানকারী ব্যাংক কর্মকর্তা হন এবং উনার হালাল কোনো ইনকামসোর্স না থাকে, তাহলে আপনি গরীব হলেই কেবল উনার দাওয়াত কবুল করতে পারবেন। নতুবা উনার দাওয়াত কবুল করে বিয়েতে খেতে যেতে পানবেন না।এটা আপনার জন্য জায়েয হবে না।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. যদি আপনাদের বাসার মেহমান নিতান্তই গরীব/মিসকিন হন,তাহলে তাদের জন্য আপনার বাবার দাওয়াত কবুল করা, হাদিয়া গ্রহণ করা জায়েয হবে,নতুবা জায়েয হবে না। আর জেনে শুনে হারাম মাল দ্বারা কাউকে মেহমানদারী করালে গুনাহ হবে। এবং যারা নেসাব পরিমাণ মালের মালিক হওয়া সত্বেও হারাম ইনকামের দাওয়াত কবুল করবে তাদেরও গুনাহ হবে। তবে যদি জানা না থাকে যে, কেমন মাল দ্বারা আপ্যায়ন করাবে তাহলে উনার বাসার দাওয়াত থেকে নিজেকে সতর্কতামূলক দূরে রাখতে হবে যদি তার সব বা অধিকাংশ ইনকাম হারাম হয়।

২. জ্বী আপনি এভাবে টাকা বদল করতে পারবেন। তবে যেহেতু তিনি আপনার কথা শুনেন না তাই আপনার জন্য উচিত হবে তাকে স্থানীয় কোন ভালো আলেমের সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এবং তার মাধ্যমে আপনার বাবাকে হালাল ইনকামের প্রতি দাওয়াত প্রদান করা ও হারাম বর্জনের জন্য তাকে বুঝানো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...