আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
491 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (66 points)
"বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম"
প্রশ্নের বিষয়ঃ হুজুরের দেওয়া ভুল ফাতওয়া বা সিদ্ধান্ত যদি কেউ মেনে ফেলে বা মানতে থাকে তাহলে কি তার গুনাহ হবে ?
আসসালামু আলাইকুম,
হুজুর আমার প্রশ্ন হচ্ছেঃ
আমি কোনো একটি বিষয় জানিনা বা সন্দেহের মধ্যে আছি । এখন আমি যদি কোনো হুজুরের কাছে জানতে চাই এবং সে যদি আমাকে ভুল ফাতওয়া দেয় তাহলে ঐ কাজটি করলে আমার কি গুনাহ হবে ?
ধরুন কাজটি ইসলামে জায়েজ নাই কিন্তু হুজুরে বলেছিলো জায়েজ আছে তাই আমি কাজটি করেছিলাম । এমন অবস্থায় আমার গুনাহ হবে কি না ? আর ঐ হুজুরেরও কি গুনাহ হবে ?
যেমনঃ
অনেকেই ফাতওয়া দিয়েছে পর্দা করলে মুখ খোলা রাখা যাবে আবার অনেকেই ফাতওয়া দিয়েছে মুখ খোলা রাখা যাবে না ।
এখন কোনো মহিলা যদি যেসব হুজুর মুখ খোলার পক্ষে তাঁদের ফাতওয়া শুনে মুখ খোলা রাখে এবং আসলেই যদি মুখ খোলা জায়েজ না থাকে তাহলে কি ঐ মহিলার গুনাহ হবে ?
আবার,
অনেকেই ফাতওয়া দিচ্ছে কোকা কোলা হারাম আবার অনেকেই ফাতওয়া দিচ্ছে কোকা কোলা হালাল । এখন কারোও যদি কোকা কোলা খেতে ইচ্ছে হয় এবং সে যদি যারা হালাল বলতেছে তাদের ফাতওয়া ধরে কোকা কোলা খায় এবং আসলেই যদি কোকা কোলা হারাম হয়ে থাকে তাহলে তাঁর কি গুনাহ হবে ? নাকি যে/যারা হালালের পক্ষে মত/ফাতওয়া দিয়েছে তাদের গুনাহ হবে? নাকি যে খেয়েছে তাঁর এবং যে ফাতওয়া দিয়েছে তার দুইজনেরই গুনাহ হবে ? এই দুইটা উদাহরণ মাত্র ।
এই রকম অনেক বিষয়ই আছে যেখানে হুজুরগণের সিদ্ধান্তের মতভেদ রয়েছে ।
দয়া করে এই ব্যাপারে জানাবেন ।
আপনার মুল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত ।

1 Answer

0 votes
by (709,320 points)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/3394 নং ফাতাওয়ায় আমরা লিখেছি যে, 
ইবনে ‘উমর (রাযি.) হতে বর্ণিত।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم لَنَا لَمَّا رَجَعَ مِنَ الأَحْزَابِ " لاَ يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ الْعَصْرَ إِلاَّ فِي بَنِي قُرَيْظَةَ ". فَأَدْرَكَ بَعْضُهُمُ الْعَصْرَ فِي الطَّرِيقِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ نُصَلِّي حَتَّى نَأْتِيَهَا، وَقَالَ بَعْضُهُمْ بَلْ نُصَلِّي لَمْ يُرَدْ مِنَّا ذَلِكَ. فَذُكِرَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يُعَنِّفْ وَاحِدًا مِنْهُمْ.
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহযাব যুদ্ধ হতে ফিরার পথে আমাদেরকে বললেন, বনূ কুরাইযাহ এলাকায় পৌঁছার পূর্বে কেউ যেন ‘আসর সালাত আদায় না করে। কিন্তু অনেকের রাস্তাতেই আসরের সময় হয়ে গেল, তখন তাদের কেউ কেউ বললেন, আমরা সেখানে না পৌঁছে সালাত আদায় করব না। আবার কেউ কেউ বললেন, আমরা সালাত আদায় করে নেব, আমাদের নিষেধ করার এ উদ্দেশ্য ছিল না (বরং উদ্দেশ্য ছিল তাড়াতাড়ি যাওয়া) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এ কথা উল্লেখ করা হলে, তিনি তাঁদের কারোর ব্যাপারে কড়াকড়ি করেননি।(সহীহ বুখারী-৯৪৬)

উক্ত হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, একই মাস'আলায় বিভিন্ন মুজতাহিদের বিভিন্ন মতামত গ্রহণযোগ্য। কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ কোনো দলকেই তিরস্কার করেননি।

একই মাস'আলায় আল্লাহ নিকট সকল মুজতাহিদ হক? না কি একজনের মতামত হক এবং বাদবাকী অন্যান্যর মতামত অগ্রহণীয়?

এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে।কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম মনে করেন,আল্লাহর নিকট একজনের টা গ্রহণযোগ্য আর বাদবাকীদের টা গ্রহণযোগ্য নয়।তবে এর উপর যারা আমল করবে তারা সবাই সওয়াব পাবে।

মাওয়ারদি রাহ লিখেন,
وذهب أبو حنيفة ومالك والشافعي وأكثر الفقهاء إلى أن الحق في أحد الأقوال، ولم يتعين لنا وهوعند الله متعين لاستحالة أن يكون الشيء الواحد حلالاً وحراماً 
ইমাম আবু হানিফা রাহ,মালিক রাহ, শা'ফেয়ী রাহ,এবং অধিকাংশ ফুকাহায়ে কেরাম বলেন,সমস্ত মতামতের মধ্যে আল্লাহর নিকট হক একটিই।তবে সেটা আমাদের জন্য নির্দিষ্ট নয়।কেননা এক জিনিষ হালাল এবং হারাম উভয় হতে পারে না।(কেননা কখনো এক জিনিষকে কোনো এক ইমাম হালাল বললেও অন্য ইমাম হারাম বলে থাকেন)
(ইরশাদুল ফুহুল-শাওকানী-৩৮৫)

অন্যদিকে কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম মনে করেন,সকল মতামতই আল্লাহর কাছে হক ও গ্রহণযোগ্য।

আমর ইবনে আস রাযি থেকে বর্ণিত
عن عمرو بن العاص، أنه سمع رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «إذا حكم الحاكم فاجتهد ثم أصاب فله أجران، وإذا حكم فاجتهد ثم أخطأ فله أجر»، 
তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছেন,যদি কোনো বিচারক বিচার করেন,এবং ইজতেহাদে সঠিক করে থাকেন,তাহলে তিনি দু'টি সওয়াব পাবেন।আর যদি ইজতেহাদে ভূল করে থাকেন,তাহলে তিনি একটি সওয়াব পাবেন।(সহীহ বুখারী-৭৩৫২) (শেষ)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন! 
একেক মাযহাবের একেক ধরণের ফাতাওয়া থাকতে পারে, কোনোটাকে ভূল বলা যাবে না। বরং উভয়টাই সঠিক। তাছাড়া যদি কখনো কোনো মুফতি ভূল ফাতাওয়া দিয়েও থাকেন, তাহেল ঐ ফাতাওয়ার উপর যিনি আ’মল করবেন, তার কোনো গোনাহ হবে না। এমনকি মুজতাহিদেরও কোনো গোনাহ হবে না। বরং উনি একটি সওয়াব পাবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...