ফাতিমা বিনতে আবদিল্লাহ (রা.) বলেন, যখন প্রিয় নবীজি (সা.)-এর শুভ আগমন ঘটল, তখন আমি আমিনার কাছে উপস্থিত ছিলাম। আমি দেখলাম সব গৃহ উজ্জ্বল আলোতে ভরে গেছে এবং এও দেখলাম, আসমানের তারকারাজি এত কাছে এসেছে যে আমার মনে হলো এই তারকা আমার ওপর পতিত হবে। (ফাতহুল বারি, ৬/৪২৬)
ইরবাস ইবনে সারিয়্যা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্ম গ্রহণকালীন তাঁর সময়ে তাঁর মাতা এক নুর দেখেন, যাতে সিরিয়ার প্রাসাদসমূহ আলোকিত হয়ে যায়। (ইমাম হাকেম, আল মুসতাদরাক, মেশকাত-৫৭৫৯)
আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি তোমাদের আমার প্রাথমিক বিষয় সম্পর্কে বলছি। আমি হলাম ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া ও ঈসা (আ.)-এর সুসংবাদ। আর আমার মায়ের স্বপ্ন, যা তিনি আমাকে প্রসব করার সময় দেখেছিলেন যে এমন এক নুর উদ্ভাসিত হয়েছে, যার দ্বারা আমার আম্মাজানের জন্য সিরিয়ার প্রাসাদও উজ্জ্বল হয়েছিল। (ইমাম বায়হাকি, দালায়েলুন নবুয়ত, পৃষ্ঠা ৩৫)
নবী (ﷺ)-এর জন্মের সময় কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা নবুওয়াতের পূর্বাভাস স্বরূপ প্রকাশিত হয়। কিসরাপ্রাসাদের চৌদ্দটি সৌধচূড়া ভেঙ্গে পড়ে, প্রাচীন পারসীক যাজকমন্ডলীর উপাসনাগারগুলোতে যুগ যুগ ধরে প্রজ্জ্বলিত হয়ে আসা অগ্নিকুন্ডগুলো নির্বাপিত হয়ে যায়, বাহীরা পাদ্রীগণের সরগম গীর্জাগুলো নিস্তেজ ও নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। এ বর্ণনা হচ্ছে ইমাম বায়হাক্বী, তাবারী এবং অন্যান্যদের।
(মুখতাসারুস সীরাহ ১২ পৃঃ।)
তবে এগুলোর কোন সঠিক ভিত্তি নেই ।
(মুহাম্মাদ গাযালী সীরাত ৪৬ পৃঃ (ইমাম বায়হাকীর মত। কিন্তু মুহাম্মাদ গাযালী এটার শুদ্ধতা সম্পর্কে দ্বিমত পোষণ করেন।)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উপরোক্ত বর্ণনা গুলির ব্যপারে অনেক মুহাদ্দিসিনে কেরামগন মওযু' বলে আখ্যায়িত করেছেন।
কেহ কেহ দূর্বল হাদীস বলেছেন।
তবে কেহ সহীহ বলেননি।
আরেকটি হাদীসঃ-
আল্লাহ তাআলা আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করে যখন (হে আবু মুহাম্মদ) বলে ইলহাম করলেন তখন তিনি বলেছেন, হে আল্লাহ, আপনি আমার কুনিয়াত ‘আবু মুহাম্মদ’ কেন রেখেছেন? এর জবাবে আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমার মাথা উত্তোলন করো। তিনি মাথা উত্তোলন করে আরশ এবং এর চারপাশে রাসুল (সা.)-এর নুর মুবারক দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এই নুর কার? জবাবে আল্লাহ তাআলা বলেন, এটি ওই নবীর নুর, যিনি তোমার সন্তানদের মধ্যে হবেন। তাঁর নাম আসমানে ‘আহমদ’ এবং জমিনে ‘মুহাম্মদ’ (সা.)। তিনি যদি না হতেন তবে আপনাকে সৃষ্টি করতাম না, আসমান আর জমিনও সৃষ্টি করতাম না। (ইমাম শিহাব উদ্দিন কাস্তালানি, আল মাওয়াহিবু লাদুনিয়া, ১/৫৭)
যেটি আরেকটি হাদীসে এসেছেঃ-
لو لا محمد ما خلقتك
তথা যদি মোহাম্মদ সাঃ না হতো, তাহলে তোমাকে [আদম আঃ] কে সৃষ্টি করা হতো না।
যেসব কিতাবে এ হাদীসটি বর্ণিত
আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৫০২, আল মুজামুস সগীর লিত তাবরানী, হাদীস নং-৯৯২,
এছাড়া আরও রয়েছে আবু নুআইম রহঃ এর দালায়েলুন নাবুয়্যাহ, ইমাম বায়হাকী রহঃ এর দালায়েলুন নাবুয়্যাহ, আদ দুরার কিতাবে ইবনে আসাকীর রহঃ, এবং রয়েছে মাযমাউজ যাওয়ায়েদ কিতাবে।
আল্লামা হাকেম রহঃ বলেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। {মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, বর্ণনা নং-৪২২৮}
ইমাম বায়হাকী রহঃ বলেন, আব্দুর রহমান বিন জায়েদ বিন আসলাম এ বর্ণনায় মুনফারিদ। আর তিনি জঈফ বর্ণনাকারী। {তারীখে দামেশক-৭/৪৩৭, দালায়েলুন নবুয়্যাহ-৫/৪৮৯}