আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
194 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (18 points)
যাঁর আগমনের পূর্ব মুহূর্তে লুটিয়ে পড়েছিল পারস্য সাম্রাজ্যের গৌরবময় রাজপ্রাসাদের চৌদ্দটি মিনার; নির্বাপিত হয়ে গিয়েছিল অগ্নিপূজকদের সহস্র বর্ষব্যাপী প্রজ্বলিত বিশাল অগ্নিকুণ্ড; শুকিয়ে গিয়েছিল শ্বেত সাগরের পানি রাশি; নহর বয়ে গিয়েছিল সিরিয়ার মরুতে,ভূলুণ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল কাবা অভ্যন্তরের দেবমূর্তিগুলো।যাঁকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবী কিছুই সৃষ্টি করতেন না,তিনিই হলেন আমাদের প্রিয় আল-আমীন।

রাসুল সাঃ সম্পর্কে উক্ত কথা গুলো কি সঠিক। রেফারেন্স জানলে উপকৃত হবো

আসসালামু আলাইকুম। জাযাকাল্লাহ

1 Answer

0 votes
by (559,290 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم


ফাতিমা বিনতে আবদিল্লাহ (রা.) বলেন, যখন প্রিয় নবীজি (সা.)-এর শুভ আগমন ঘটল, তখন আমি আমিনার কাছে উপস্থিত ছিলাম। আমি দেখলাম সব গৃহ উজ্জ্বল আলোতে ভরে গেছে এবং এও দেখলাম, আসমানের তারকারাজি এত কাছে এসেছে যে আমার মনে হলো এই তারকা আমার ওপর পতিত হবে। (ফাতহুল বারি, ৬/৪২৬)

ইরবাস ইবনে সারিয়্যা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-এর শুভ জন্ম গ্রহণকালীন তাঁর সময়ে তাঁর মাতা এক নুর দেখেন, যাতে সিরিয়ার প্রাসাদসমূহ আলোকিত হয়ে যায়। (ইমাম হাকেম, আল মুসতাদরাক, মেশকাত-৫৭৫৯)

আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আমি তোমাদের আমার প্রাথমিক বিষয় সম্পর্কে বলছি। আমি হলাম ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া ও ঈসা (আ.)-এর সুসংবাদ। আর আমার মায়ের স্বপ্ন, যা তিনি আমাকে প্রসব করার সময় দেখেছিলেন যে এমন এক নুর উদ্ভাসিত হয়েছে, যার দ্বারা আমার আম্মাজানের জন্য সিরিয়ার প্রাসাদও উজ্জ্বল হয়েছিল। (ইমাম বায়হাকি, দালায়েলুন নবুয়ত, পৃষ্ঠা ৩৫)

নবী (ﷺ)-এর জন্মের সময় কিছু উল্লেখযোগ্য ঘটনা নবুওয়াতের পূর্বাভাস স্বরূপ প্রকাশিত হয়। কিসরাপ্রাসাদের চৌদ্দটি সৌধচূড়া ভেঙ্গে পড়ে, প্রাচীন পারসীক যাজকমন্ডলীর উপাসনাগারগুলোতে যুগ যুগ ধরে প্রজ্জ্বলিত হয়ে আসা অগ্নিকুন্ডগুলো নির্বাপিত হয়ে যায়, বাহীরা পাদ্রীগণের সরগম গীর্জাগুলো নিস্তেজ ও নিষ্প্রভ হয়ে পড়ে। এ বর্ণনা হচ্ছে ইমাম বায়হাক্বী, তাবারী এবং অন্যান্যদের।
(মুখতাসারুস সীরাহ ১২ পৃঃ।)

তবে এগুলোর কোন সঠিক ভিত্তি নেই ।
(মুহাম্মাদ গাযালী সীরাত ৪৬ পৃঃ (ইমাম বায়হাকীর মত। কিন্তু মুহাম্মাদ গাযালী এটার শুদ্ধতা সম্পর্কে দ্বিমত পোষণ করেন।)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
উপরোক্ত বর্ণনা গুলির ব্যপারে অনেক মুহাদ্দিসিনে কেরামগন মওযু' বলে আখ্যায়িত করেছেন।
কেহ কেহ দূর্বল হাদীস বলেছেন।
তবে কেহ সহীহ বলেননি।

আরেকটি হাদীসঃ-
আল্লাহ তাআলা আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করে যখন (হে আবু মুহাম্মদ) বলে ইলহাম করলেন তখন তিনি বলেছেন, হে আল্লাহ, আপনি আমার কুনিয়াত ‘আবু মুহাম্মদ’ কেন রেখেছেন? এর জবাবে আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমার মাথা উত্তোলন করো। তিনি মাথা উত্তোলন করে আরশ এবং এর  চারপাশে রাসুল (সা.)-এর নুর মুবারক দেখতে পান। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এই নুর কার? জবাবে আল্লাহ তাআলা বলেন, এটি ওই নবীর নুর, যিনি তোমার সন্তানদের মধ্যে হবেন। তাঁর নাম আসমানে ‘আহমদ’ এবং জমিনে ‘মুহাম্মদ’ (সা.)। তিনি যদি না হতেন তবে আপনাকে সৃষ্টি করতাম না, আসমান আর জমিনও সৃষ্টি করতাম না। (ইমাম শিহাব উদ্দিন কাস্তালানি, আল মাওয়াহিবু লাদুনিয়া, ১/৫৭)

যেটি আরেকটি হাদীসে এসেছেঃ- 

لو لا محمد ما خلقتك

তথা যদি মোহাম্মদ সাঃ না হতো, তাহলে তোমাকে [আদম আঃ] কে সৃষ্টি করা হতো না।
যেসব কিতাবে এ হাদীসটি বর্ণিত

আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৫০২, আল মুজামুস সগীর লিত তাবরানী, হাদীস নং-৯৯২,
এছাড়া আরও রয়েছে আবু নুআইম রহঃ এর দালায়েলুন নাবুয়্যাহ, ইমাম বায়হাকী রহঃ এর দালায়েলুন নাবুয়্যাহ, আদ দুরার কিতাবে ইবনে আসাকীর রহঃ, এবং রয়েছে মাযমাউজ যাওয়ায়েদ কিতাবে।

আল্লামা হাকেম রহঃ বলেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। {মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, বর্ণনা নং-৪২২৮}

ইমাম বায়হাকী রহঃ বলেন, আব্দুর রহমান বিন জায়েদ বিন আসলাম এ বর্ণনায় মুনফারিদ। আর তিনি জঈফ বর্ণনাকারী। {তারীখে দামেশক-৭/৪৩৭, দালায়েলুন নবুয়্যাহ-৫/৪৮৯}

অনেকে এটিকেও দূর্বল বলেছেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (18 points)
জাযাকাল্লাহ শাঈখ। বারাকাল্লাহ 
by (6 points)
প্রথমাংশে উপরোক্ত বর্ণনা বলতে, শুরুর ৪টি বর্ণনাই কি জাল বোঝানো হয়েছে?

আর দ্বিতীয় অংশের - "যদি মোহাম্মদ সাঃ না হতো,আসমান আর জমিনও সৃষ্টি করতাম না" 
মুফতি আব্দুল মালেক সাহেবের কিতাব - এসব হাদিস নয় ১, পৃষ্ঠা ১৬৩ প্রমান করা হয়েছে এটি 'জাল' বর্ণনা

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...