আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
387 views
in সালাত(Prayer) by (17 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকা তুহ উস্তাদ।আমার ভার্সিটিতে মেয়েদের নামাজ রুমেও জুমআর নামাজ পড়ে,আলহামদুলিল্লাহ্।ভার্সিটির মসজিদে নামাজ পড়ানো হয়,আর আমাদের নামাজ রুমের বাইরে একটা সাউন্ড বক্স রাখা, সেখান থেকে শুনে শুনে মেয়েরাও জামাতের সাথে জুমআর নামাজ পড়ে একই সময়ে। আমি ৩ জুমআ ধরে তাদের সাথে যুক্ত হয়েছি কিন্তু কিছু কনফিউশান তৈরি হয়েছে,এগুলো সম্পর্কে জানতে চাই,ইন শা আল্লাহ্।

 মেয়েদের শুক্রবারের জুমআর নামাজ সম্পর্কে তিনটা প্রশ্নঃ

(১) মেয়েদের ক্ষেত্রে জুমআর নামাজে জামাআতের সাথে দাড়ালে কি একটুও ফাঁকা রাখা যাবে না, পায়ের সাথে পা কিংবা কাধের সাথে কাধ কি মিলাতেই হবে?
(২) জুমআর নামাজে জামাআতের সাথে দাড়ানোর সময় যদি আমার সারিতে আমি এমনভাবে দাড়ালাম যে আমার পাশে ফাঁকা আর এর পরে আরেকজন দাড়ালো তাহলে কি নামাজ হবে? কারণ জুমআর নামাজ জামাআতে পড়ার সময় এমন কম জায়গা থাকে যে আমি সিজদাহও ভালোভাবে দিতে পারি না তাও কি আমি এরকম আলাদাভাবে দাড়াতে পারব না? (যদি আর কেউ জামাআতের সাথে দাাঁড়ানোর মতো অবশিষ্ট না থাকে)

(৩) সেখানের সবাই ছেলেদের মতো জুম্মার নামাজ জামাআতে পড়ে (সিজদাহ,আর রুকু দেওয়ার সময় তা দেখে বুঝেছি)কিন্তু আমি হানাফি মাজহাব ফলো করি, এখন আমি যদি হানাফি মাজহাব মতেই নামাজ পড়ি, সেজদাহ দেই, রুকু করি তাহলে কি আমার নামাজ হবে না? যখন আমি তাদের সাথে জুমআর নামাজ পড়ব আমাকেও কি তাদের মাযহাব অনুযায়ীই নামাজ পড়তে হবে?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

শরীয়তের বিধান হলো মহিলাদের উপর জামা'আত জরুরি নয়, এই কারনে জুম'আ এবং উভয় ঈদের নামাজ তাদের উপর ওয়াজিব নয়।

যেহেতু জুম'আর স্থলাভিষিক্ত জোহরের নামাজ, তাই তারা জুম'আর দিন বাসায় জোহরের নামাজ আদায় করবে।

তব ঈদের নামাজের যেহেতু কোনো স্থলাভিষিক্ত নেই,তাই ঈদের নামাজের পরিবর্তে তাদের উপর কোনো নামাজ নেই।

,

সুতরাং মহিলারা ঈদের নামাজ পড়বেনা। (কিতাবুন নাওয়াজেল ৫/১৯৯)

 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عن نافع عن ابن عمر: أنہ کان لا یخرج نساء ’ في العیدین، وفي روایۃ عن ہشام بن عروۃ عن أبیہ: أنہ کان لا یدع امرأۃ تخرج إلی فطر و لا أضحی۔ (المصنف لابن أبي شیبۃ ۴؍۲۳۴ المجلس العلمي، تاتارخانیۃ ۲؍۲۰۸ رقم: ۳۴۱۸)

সারমর্মঃ হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত, ঈদের নামাজে মহিলারা বের হবেনা।

 

হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত,ঈদের নামাজে মহিলারা বের হবেনা।

ﻃﺎﺭﻕ ﺑﻦ ﺷﻬﺎﺏ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ ( ﺍﻟﺠُﻤُﻌَﺔُ ﺣَﻖٌّ ﻭَﺍﺟِﺐٌ ﻋَﻠَﻰ ﻛُﻞِّ ﻣُﺴﻠِﻢٍ ﻓِﻲ ﺟَﻤَﺎﻋَﺔٍ ﺇِﻻَّ ﺃَﺭﺑَﻌَﺔ : ﻋَﺒﺪٌ ﻣَﻤﻠُﻮﻙٌ ، ﺃَﻭ ﺍﻣﺮَﺃَﺓٌ ، ﺃَﻭ ﺻَﺒِﻲٌّ ، ﺃَﻭ ﻣَﺮِﻳﺾٌ

তরজমাঃ হযরত ত্বারিক ইবনে শিহাব রাঃ থেকে বর্ণিত,নবী কারীম সাঃ বলেনঃ গোলাম, মহিলা, শিশু এবং অসুস্থব্যক্তি, এই  চারজন ব্যতীত  প্রত্যেক মুসলমানের উপর(মসজিদে এসে) জামাতের সাথে জুমু'আর নামায আদায় করা ওয়াজিব (এবং তা কোরআন-সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত।) (আবু-দাউদ,১০৬৭)

 

ولا تجب الجمعۃ علی مسافر ولا امرأۃ … وتجب صلاۃ العید علی من تجب علیہ صلوٰۃ الجمعۃ۔ (ہدایۃ ۱؍۱۶۹-۱۷۲)

জুম'আর নামাজ মুসাফির, মহিলাদের উপর ওয়াজিব নয়। আর ঈদের নামাজ কেবল তার উপরেই ওয়াজিব,যার উপর জুম'আর নামাজ ওয়াজিব।

 

বিস্তারিত জানুনঃ 

https://ifatwa.info/17732/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

প্রথমত কথা হলো যে, মহিলাদের উপর জুম্মার নামাজ পড়া ফরজ নয় এবং মহিলাদের জন্য মসজিদে না গিয়ে ঘরে নমাজ পড়াই উত্তম তবে যদি কোনো মসজিদে মহিলাদের জন্য জুম্মার নামাজ পড়ার সু-ব্যবস্থা থাকে এবং কোনো ধরণের ফিতনার আশংকা না থেকে তাহলে সেখানে গিয়ে জুম্মার নামাজ পড়লেও নামাজ হয়ে যাবে তবে এই ক্ষেত্রেও তার জন্য মসজিদে না গিয়ে ঘরে একা একা জহরের নামাজ পড়া উত্তম  আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/31099/?show=31099#q31099

মহিলারা যেখানে দাড়িয়ে জুম্মার নামাজ পড়বে তা মসজিদের সাথে একেবারে মিলিত হবে অথবা মসজিদেই হতে হবে সুতরাং মসজিদ মহিলাদের নামাজের স্থানের মাঝে যদি দূরত্ব থাকে তাহলেও মহিলাদের নামাজ হবে না

 

১. জ্বী হ্যাঁ, সামান্য পরিমাণ ফাঁকা রাখা যাবে। যাতে করে ভালো ভাবে রুকু, সিজদা দেওয়া যায়। তবে হাদীসে কাতার সোজা করার গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। তাই সেই দিকেও খেয়াল রাখতে হবে।

. জ্বী হ্যাঁ, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে নামাজ হয়ে যাবে সুতরাং আপনি আপনার সুবিধা মত দাঁড়াবেন যাতে আপনার জন্য রুকু, সিজদা দেওয়া সহজ হয় তবে এমন ফাঁকা করেও দাঁড়াবেন না যেখানে আরেক ব্যক্তি খুব সহজেই দাঁড়াতে পারে

. হানাফি মাজহাবে মহিলাদের নামাজ একটু আলাদা সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনি হানাফি মাজহাবের মত অনুসারেই রুকু, সিজদা, বৈঠক ইত্যাদি করবেন এবং এতে আপনার নামাজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ

 

উল্লেখ্য যেহানাফি মাজহাব মতে মহিলারা পুরুষের মত রুকু, সিজদা, বৈঠক ইত্যাদি করবে না  তারা একটু আলাদা ভাবে করবে।

বিষয়ে বিস্তারিত দলীলসহ জানুন-   https://ifatwa.info/3081/   

আরো জানুন-  https://ifatwa.info/52639/   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by
উস্তাদ আপনি বলেছেনঃ 

❝মসজিদ ও মহিলাদের নামাজের স্থানের মাঝে যদি দূরত্ব থাকে তাহলেও মহিলাদের নামাজ হবে না।❞

এ লাইন দ্বারা উদ্দেশ্য কি নামাজের রুম একসাথে থাকলে ইমাম সাহেব নামাজের মধ্যে উচ্চস্বরে যা পাঠ করবে তা যেন শুধু পুরুষ না মহিলারাও যেন শুনতে পারে? 

যদি উদ্দেশ্য শুধু নামাজের মধ্যে উচ্চস্বরে যা পাঠ করা হয় তা শুনা, তাহলে যদি ভার্সিটির ২য় তলায় পুরুষদের ছোট মসজিদ অথাৎ নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকে। আর মহিলাদের যদি নীচ তলায় এক কর্নারে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা থাকে এবং মহিলাও যেন জামআতে নামাজ পড়ার সময় নামাজে যা উচ্চস্বরে পাঠ করা হয় তা শুনতে পারে, এরজন্য বড় সাউন্ড বক্স ব্যবহার করে, তাও কি সে জামআতে জুমআর নামাজ পড়লে আমার নামাজ হবে না?

 
by (59,970 points)
এখানে দূরত্ব বলতে বুঝিয়েছি: জুমার নামাজ এক বিল্ডিং-এ হয় আর মহিলাদের জন্য নামাজের ব্যবস্থা থাকে আরেক বিল্ডিং-এ অথবা জুমার নামাজ হয় নিচ তলাতে আর মহিলাদের জন্য ব্যবস্থা থাকে তিন চার তলাতে এমন। শরীয়তের পরিভাষায় যাকে ইত্তেসাল বলে সেটা না থাকা। অর্থাৎ যেখানে জুমার নামাজ হয় তার পাশের বিল্ডিংয়ে অথবা উপর নিচ তলাতে মহিলাদের জন্য ব্যবস্থা থাকা জরুরি। সুতরাং ইমামের কেরাত শোনা না শোনা এখানে উদ্দেশ্য নয়। 
প্রশ্নোত্তর ক্ষেত্রে যেহেতু আপনারা নিচ তালাতেই পড়েন আর জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয় উপরের তলাতে। সুতরাং আপনাদের নামাজ হয়ে যাবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 140 views
...