জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم
ইসলাম পরিপূর্ণ এক জীবন ব্যবস্থার নাম। এতে মানবজীবনের ব্যক্তিগত পারিবারিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলের যাবতীয় বিষয়ের সমাধানে হিকমতপূর্ণ বিধানের বর্ণনা রয়েছে।
.
এখানে মুসলমানদের ইবাদত, মুআমালাত, মুআশারাত,আখলাক,এক জনের জম্ন থেকে নিয়ে মৃত্যু এমনকি অনন্তকাল আখেরাতের যাবতীয় বিষয় এখানে বলে দেওয়া আছে।
,
সেই হিসেবে স্ত্রী সহবাস যেহেতু স্বামী স্ত্রীর ফরজ হক,তাই সে সম্পর্কেও কুরআনে কিছু আলোচনা করা হয়েছে।
তবে এসব আলোচনা ক্ষেত্রে বিশেষ আয়াতে নাজিল হয়েছে।
কখনো কাফেরদের ভ্রান্তি ধারনা দূর করার জন্য,কখনো প্রশ্নকারীকে উত্তর দেওয়ার জন্য ইত্যাদি।
যেমন সুরা বাকারার ২২৩ নং আয়াতে স্বামী-স্ত্রীর একান্ত মুহূর্তগুলো সম্পর্কে বিধান জারি করেছেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
نساؤكم حرث لكم فأتوا حرثكم اني شئتم
তাফসিরে জালালাইনে এ আয়াতের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করা হয়-‘স্ত্রীগণ তোমাদের শষ্যক্ষেত্র অর্থাৎ সন্তান উৎপাদনের ক্ষেত্র। অতএব তোমরা তোমাদের শষ্যক্ষেত্রে অর্থাৎ তার নির্ধারিত স্থান যোনি-প্রদেশে যেভাবে ইচ্ছা দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে, সামনে পিছনে সব অবস্থায় গমন করতে পার।ইয়াহুদিরা বলতো, কেউ যদি যোনিপ্রদেশে পিছন দিক থেকে সঙ্গম করে তবে সন্তান ট্যারা হয়। ঐ ধারণা প্রত্যাখ্যানে এ আয়াত নাজিল হয়।
.
সুরা বাকারার ২২২ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন
فاعتزلوا النساء في المحيض ولاتقربوهن حتي يطهرن
যার সারমর্ম হলো রাসুল সাঃ কে যখন হায়েজাহ মহিলাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো,তখন আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাজিল করে বললেন,এই দিনগুলোতে তাদের নিকটবর্তী হয়োনা,যখন তারা পবিত্র হবে,তখম তাদের নিকট (সহবাস) এ যাও।
,
তবে একথা স্পষ্ট যে নামাজের ফরজ কাজ গুলির কথাও কুরআনে বলা হয়েছে।
,
কুরআনে সহবাসের কথাই শুধু বিস্তারিত বলা হয়েছে, নামাজ সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়নি বলা ভুল।
,
নামাজের মধ্যে (বিশুদ্ধ মতানুসারে ০৬ টি ফরজ।
০১. তাকবিরে তাহরিমা : আল্লাহর মহত্ত্ব প্রকাশ পায় এমন শব্দ দ্বারা নামাজ আরম্ভ করা ফরজ। আর তা হচ্ছে তাকবিরে তাহরিমা তথা আল্লাহু আকবার। যা দ্বারা নামাজের বাহিরের সব ধরণের কাজকে নিষিদ্ধ হয়ে যায়। আল্লাহ বলেন-
وربك فكبر
তোমার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর। (সুরা মুদদাসসির : আয়াত ৩)
০২. কিয়াম করা : নামাজের জন্য সোজা হয়ে দাঁড়ানো। আল্লাহ বলেন,
وقوموا لله قانطين
তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে বিনীতভাবে দাঁড়াবে। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ২৩৮)
০৩. কিরাত পড়া : সুরা ফাতিহার পর সুরা মিলানো। ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাআতে এবং ওয়াজিব, সুন্নাত ও নফল নামাজের সব রাকাআতে সুরা মিলানোই ফরজ। আল্লাহ বলেন-
فاقرووا ما تيسر من القرآن
তোমরা কুরআন থেকে যতটুকু সহজ হয়, ততটুকু পড়। (সুরা মুযযাম্মিল : আয়াত ২০)
০৪. রুকু করা : প্রত্যেক রাকাআতে একবার রুকু করা ফরজ। রুকু হচ্ছে- দাঁড়ানো থেকে অর্ধনমিত হওয়া, যেন দু`হাত হাঁটু পর্যন্ত পৌছে যায়। মাথা এবং পিঠ এক সমান্তরালে চলে আসে। আর বসে নামাজ পড়ার সময়ও ঝুঁকতে হবে, যেন কপাল হাঁটু বরাবর গিয়ে পৌঁছে। আল্লাহ বলেন-
واركعوا مع الراكعين
তোমরা রুকুকারীদের সঙ্গে রুকু কর। (সুরা বাক্বারা : আয়াত ৪৩)
০৫. সিজদা করা : প্রতি রাকাআতে দু`টি সিজদা করা ফরজ। সিজদার সময় নাক ও কপাল মাটিতে রাখা। আল্লাহ বলেন-
يا ايها الذين امنوا اركعوا واسجدوا
হে ঈমানদারগণ! তোমরা রুকু কর এবং সিজদা কর। (সুরা হজ : আয়াত ৭৭)
০৬. শেষ বৈঠকে বসা : নামাজের শেষ রাকাআতে সিজদার পর তাশাহহুদ পড়তে যতটুকু সময় লাগে ততটুকু পরিমাণ সময় বসা (অবস্থান করা) ফরজ। তাশাহহুদ পড়া ওয়াজিব, দরূদ ও দোয়া পড়া সুন্নাত।
,
আর ইহা ছাড়া নামাজের বাকি যাহা আমল আছে,সেগুলো সুন্নাত ওয়াজিবাত।
যাহা ফরজ নয়,তাই তাহা কুরআনে উল্লেখ নেই।