আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
281 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম।
ইসলামিক আইন অনুযায়ি যদি কারো কন্যা সন্তান থাকে, পুত্র সন্তান না থাকে তবে তার সম্পত্তির একটা অংশ তার ভাই বা ভাতিজারা পাবে। যদি কেউ এটা না দেয় তাহলে তো একজনের হক নষ্ট হবে। কিন্ত বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে উক্ত ব্যাক্তির মৃত্যুর পর সেই চাচা বা ভাতিজাদের যে দায়িত্ব পালন করার কথা তা মোটেও করে না। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, ভাই বা ভাতিজাদের সাথে ঝগড়া বিবাদ থাকে বা সমাজে খারাপ মানুষ হিসেবেই পরিচিত যাদের কাছ থেকে পরবর্তিতে কোন সহযোগিতা পাওয়া যাবে না। সেক্ষেত্রে সেই ভাই ভাতিজাদের সম্পত্তি দেয়া কতটুকু যুক্তি যুক্ত? মানে অন্যজনের হক আদায় করলাম কিন্ত নিজের কন্যার অসুবিধা করে। মানে ভাই বা ভাতিজাদের সম্পত্তি দেয়াই হয় কন্যার নিরাপত্তা বা তার দায়িত্ব নেয়ার জন্য। যখন কেউ নিশ্চিত যে তার ভাই ভাতিজা দায়িত্ব পালন করবে না তখনও কি ভাই ভাতিজাদের সম্পত্তি দিতে হবে?
আরেকটা প্রশ্ন: কোন ব্যাক্তির মৃত্যুর পর তার সম্পত্তি ওয়ারিশগনের মধ্যে বণ্টন হবে। কিন্ত বেঁচে থাকতে তার সম্পত্তি সে যা খুশি করতে পারে এতে করো কিছু বলার নাই। সেহিসেবে উপরোক্ত পরিস্থিতে যদি কেউ জীবিত থাকতেই তার সকল সম্পত্তি তার কন্যাকে লিখে দেয় তাহলে কি ভাই ভাতিজার হক নষ্ট করা হবে কিনা।

আরো একটা জানতে চাওয়া। শুধু কন্যা সন্তান থাকলে পুত্র সন্তান না থাকলে ভাই ভাতিজারা যে ওয়ারিশ হয় এই আইন বাতিল করা যায় কিনা? ইসলামিক আইনে আরো একটা আইন আছে তাহলো ‘পিতার আগে যদি পুত্র মারা যায় আর সেই পুত্রের যদি কোন সন্তান থাকে তাহলে সেই সন্তানরা দাদার সম্পত্তির ভাগ পাবে না।’ যদি ভুল না করি তবে এই আইন ১৯৬৮ সালে রাষ্ট্র বাতিল করে দিয়েছে। মানে বর্তমান রাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী দাদার সম্পত্তি পাবে। তার মানে অতিতে এমন ঘটনা ঘটেছে যে ইসলামিক আইনের কার্যকারিতা বাতিল করা হয়েছে। এই আইন সম্পর্কে আপনার মতামত কি?

1 Answer

0 votes
by (589,230 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
ভূমিকা
হযরত আবু উমামা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ
ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻗَﺪْ ﺃَﻋْﻄَﻰ ﻛُﻞَّ ﺫِﻱ ﺣَﻖٍّ ﺣَﻘَّﻪُ ، ﻓَﻠَﺎ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَﺍﺭِﺙٍ
নিশ্চয় আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক হক্বদারকে তার প্রাপ্য হক্ব (নির্ধারণ)করে দিয়েছেন।সুতরাং ওয়ারিছদের জন্য আর কোনো ওসিয়্যাত নেই।
অর্থাৎ-মূত্যুর পরে কাউকে কিছু দানের সিদ্ধান্ত নিলে সেটা ওসিয়ত হয়ে যায়,আর নিজ ওয়ারিছদের মধ্য থেকে কারো জন্য ওসিয়ত করা জায়েয নয়।তবে ওয়ারিছ ব্যতীত অন্য কারো জন্য এক তৃতীয়াংশ মালে ওসিয়ত করা জায়েয আছে। (সুনানে আবু-দাউদ-২৮৭০সুনানে তিরমিযি-২১২০সুনানে নাসাঈ-৪৬৪১ইবনে মাজাহ-২৭১৩)

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّه ُمِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ যে ব্যক্তি তার ওয়ারিছদেরকে মিরাছ প্রদান থেকে পলায়ন করবে(তথা-ওয়ারিছদেরকে মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবে)আল্লাহ তা'আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ-২৭০৩)

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻋَﻦِ اﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ: «ﻻَ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَاﺭِﺙٍ، ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺸَﺎءَ اﻟْﻮَﺭَﺛَﺔُ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ ওয়ারিছদের জন্য কোনো ওসিয়ত নেই,তবে যদি অন্যান্য সমস্ত ওয়ারিছরা রাজি থাকে তাহলে জায়েয আছে। (মিশকাত-৩০৭৪)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
(১)
" ভাই ভাতিজারা দায়িত্ব পালন করক বা নাই করুক, ঐ ভাই ভাতিজাকে সম্পত্তির নির্ধারিত একটি অংশ ম প্রদান করা শরীয়তের আইন বা বিধান। সুতরাং দিতেই হবে।

(২)
কেউ জীবিত অবস্থাতে তার সকল সম্পত্তি যতি তার কন্যাকে লিখে দেয়, তাহলে ভাই ভাতিজার হক নষ্ট করা হবে।


(৩)
শুধু কন্যা সন্তান থাকলে পুত্র সন্তান না থাকলে, ভাই ভাতিজারা যে ওয়ারিশ হয়, এই আইনকে বাতিল করা যাবে না। 

পিতার আগে যদি পুত্র মারা যায় আর সেই পুত্রের যদি কোন সন্তান থাকে তাহলে সেই সন্তানরা দাদার সম্পত্তির ভাগ পাবে না। এটাই ইসলামের আইন।যদি বর্তমানে এই আইন বাংলাদেশে না থাকে , তাহলে এটাকে দেশে বাস্তবায়ন করার জন্য চেষ্টা করতে হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (589,230 points)
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...