আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
530 views
in সালাত(Prayer) by (32 points)
১। আমি যদি সুরা ফাতিহা পড়ার পর অন্য সুরা পরার জন্য বিসমিল্লাহ বলে ফেলি,কিন্তু পরে আমার মনে হয় যে ফাতিহার শেষ আয়াতটা সঠিকভাবে পড়া হয় নি,তাই আবার শেষ আয়াত টা পড়ে বিসমিল্লাহ পড়ে অন্য সুরা পড়লাম।এতে নামাজের কি কোন ক্ষতি হয়েছে?

২। আমি যদি কাওকে বলি,"আমার ভাইয়ের কারণে আমার সম্পত্তিতে ভাগ কম আসছে",কিন্তু সে আমার ভাইকে না চেনে, এটা গীবত হবে?

৩। আমি যদি কাওকে বলি, "আমার ভাইয়ের ব্যবহার আমার সাথে খুব খারাপ।" কিন্তু সে আমার ভাইকে না চেনে,তাও কি এটা গীবত হবে?

1 Answer

0 votes
by (566,940 points)
edited by
জবাব
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
শরীয়তের বিধান হলো নামাজে সুরা ফাতেহা পড়া ওয়াজিব।
আর ওয়াজিবকে একাধিকবার আদায় করলে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হয়।    

ফরজ নামাজে ইচ্ছাপূর্বক ভাবে কোনো ওযর ছাড়া সুরা ফাতেহার এক আয়াত দুইবার পড়া মাকরুহ। 
নফল নামাজে কোনো সমস্যা নেই।
ফরজ নামাজের প্রথম দুইরাকাতে বিনা ওযরে সুরা ফাতেহার অধিকাংশ আয়াত যদি দুইবার পড়া হয়,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।
৩য়,৪র্থ রাকাতে হলে কোনো সমস্যা নেই।
,
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবেনা।
নামাক হয়ে গিয়েছে।
,

ولو کرر الفاتحة او بعضھا فی احدی الاولیین قبل السورة سجد للسہو ۔
(طحطاوی علی مراقی الفلاح ٤٦٠ باب سجود السہو)
সারমর্মঃ
যদি ১ম দুই রাকাতে সুরা ফাতেহা বা তার কিছু আয়াত অন্য সুরা পড়ার আগে (বারংবার পড়ে),পুনরায় পড়ে,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।  
  
ولو قرأھا في رکعۃ من الأولیین مرتین وجب سجود السہو لتاخیر الواجب الخ، وکذا لو قرأ أکثرھا ثم أعادھا کما في الظہیریۃ۔ (شامی زکریا ۲؍۱۵۲)
সারমর্মঃ
নামাজের প্রথম দুইরাকাতে সুরা ফাতেহা যদি দুইবার পড়া হয়,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।
একইভাবে যদি সুরা ফাতেহার অধিকাংশ আয়াত আবার পড়া হয়,তাহলেও সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবে।      
,
 ولو قرأ الحمد فی الأخریین مرتین لا سہو علیہ۔ (بدائع الصنائع ۱؍۴۰۶)
যদি শেষ দুই রাকাত (৩য়,৪র্থ রাকাত) এ সুরা ফাতেহা বারবার পড়ে,তাহলে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবেনা। 

وینبغي أن یقید ذٰلک بالفرائض؛ لأن تکرار الفاتحۃ في النوافل لم یکرہ، کما في القہستاني۔ (مجمع الأنھر ۱؍۲۲۰)
সারমর্মঃ
নফল নামাকে সুরা ফাতেহা বারবার পড়া মাকরুহ নয়।
,  
’إذا کرر آیۃ واحدۃ مرارًا إن کان في التطوع الذی یصلیہ وحدہ فذالک غیر مکروہ، وإن کان في الفریضۃ فہو مکروہ ، وھذا في حالۃ الاختیار اما في حالۃ العذر والنسیان فلا باس بہ ، تتمات فیما یکرہ من القرأۃ في الصلاۃ۔ ( کبیری : ٤٦٢)
সারমর্মঃ
ফরজ নামাজে সুরা ফাতেহার এক আয়াত দুইবার পড়া মাকরুহ।
,
★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হবেনা।    

(২.৩)
গীবতের গুনাহ খুবই মারাত্মক। 
হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
عَنْ أَبِي سَعْدٍ، وَجَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللهِ، قَالَا: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا “، قَالُوا: يَا رَسُولَ اللهِ وَكَيْفَ الْغِيبَةُ أَشَدُّ مِنَ الزِّنَا؟ قَالَ: ” إِنَّ الرَّجُلَ لَيَزْنِي فَيَتُوبُ فَيَتُوبُ اللهُ عَلَيْهِ “وَفِي رِوَايَةِ حَمْزَةَ ” فَيَتُوبُ فَيَغْفِرُ لَهُ، وَإِنَّ صَاحِبَ الْغِيبَةِ لَا يُغْفَرُ لَهُ حَتَّى يَغْفِرَهَا لَهُ صَاحِبُهُ  

হযরত আবু সাঈস এবং জাবের বিন আব্দুল্লাহ রাঃ থেকে বর্ণিত। উভয়ে বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ গীবত করা ব্যভিচার করার চেয়েও জঘন্য। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! গীবত করা ব্যভিচারের চেয়ে জঘন্য হয় কি করে? রাসূল সাঃ বললেনঃ নিশ্চয় ব্যভিচারকারী ব্যভিচার করে তওবা করে থাকে, ফলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, কিন্তু গীবতকারীকে ক্ষমা করা হয় না, যতক্ষণ না যার গীবত করেছে সে তাকে ক্ষমা করে। {শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬৩১৫, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৫৯০}

শরীয়তের বিধান হলো  কারো নাম,পরিচয়  উল্লেখ না করলে এতে গীবত হয় না। কিন্তু উপস্থিত লোকেরা যদি বুঝতে পারে যে অমুক ব্যক্তিকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে তবে তা গীবত বলে গণ্য এবং হারাম হবে।
,
★সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদিও সে আপনার ভাইকে চিনেনা,তবে সে তো আপাতত এতটুকু জানতে পারলো যে সম্পত্তিতে কম আসা,ব্যবহার খারাপ ইত্যাদি দোষ দুনিয়ার আর  কাহারো নয়,আপনার ভাইয়েরই।
এটাও এক ধরনের পরিচিতি লাভ করাই।
,
তাই প্রশ্নে উল্লেখিত উভয় ছুরতে গীবত হবে।  

আরো জানুনঃ  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...