আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
139 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার পরিচিত এক ভাই ও বোন বিয়ের আগে রিলেশন এ থাকে তখন তাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের যিনাহ হয়।এমনকি তাদের সহবাসও হয়, নাউজুবিল্লাহ।
১। তখন ও কি তাদের মধ্যে বিবাহ জায়েজ হয়?
২। পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে দিতে চায়, তারা কি যিনাহ করার পরও এখন পারিবারিকভাবে বিয়ে করতে পারবে?
৩। ছেলে যদি এই ক্ষেত্রে বিয়েতে রাজি না হয় এই অপবাদ দিয়ে যে হাদিসে কোথাও নাই হারাম কাজ(যিনাহ) যার সাথে করা হয়েছে তাকেই বিয়ে করতে হবে ,এমনটা বলা নেই। তাই আমি তাকে বিয়ে করবো না।
৪। সেই ক্ষেত্রে ছেলে কি তওবা করে অন্য কোথাও বিয়ে করতে পারবে?
৫। মেয়ে যদি তওবা করার পরও অন্য কাউকে বিয়ে করতে নারাজি হয়, ওই ব্যক্তিকেই বিয়ে করতে চায় তওবা করে, কারণ তার মনে অন্য কাউকে স্বামী হিসেবে মেনে নেওয়া বা তার স্ত্রীর সঠিক অধিকার সে আদায় করতে পারবে না এরূপ মনোভাব থাকে তবে তার কি করনীয় , সে কি করবে বা ঐ ব্যক্তিকে (যার সাথে যিনাহ করে ফেলেছে) কিভাবে বিয়ের জন্য রাজি করাতে পারে ,ইসলামিক কোনো ফাতওয়া দিয়ে। যেহেতু সে ৩ নাম্বারে বলা দাবিটি করে আসছে।

একটু দয়া করে জানাবেন।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ- 


অবিবাহিত কেউ ব্যাভিচার করলে তার শাস্তি হল ১০০ চাবুক। 
ইরশাদ হয়েছে

الزَّانِيَةُ وَالزَّانِي فَاجْلِدُوا كُلَّ وَاحِدٍ مِنْهُمَا مِائَةَ جَلْدَةٍ وَلَا تَأْخُذْكُمْ بِهِمَا رَأْفَةٌ فِي دِينِ اللَّهِ إِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَالْيَوْمِ الْآخِرِ وَلْيَشْهَدْ عَذَابَهُمَا طَائِفَةٌ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ 

যিনাকার পুরুষ ও মহিলা তাদের প্রত্যেককে একশত দুররা মার। আল্লাহর বিধান কার্যকর করার ক্ষেত্রে তাদের প্রতি কোনরূপ অনুকম্পা যেন তোমাদেরকে স্পর্শ না করে। যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী হও। (সূরা নূর:৩)

যেনা মারাত্মক গুনাহ, তাই শরীয়ত বিবাহ পূর্বক অবৈধ প্রেম ভালোবাসাকে হারামা ঘোষণা করেছেন,যাতে যেনার নিকটতমও যেনো কেউ না যায়।
,
আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেন-
وَلَا تَقْرَبُوا الزِّنَا إِنَّهُ كَانَ فَاحِشَةً وَسَاءَ سَبِيلًا (৩২)

আর তোমরা ব্যাভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।  (সূরা ইসরা -৩২)

আল্লাহ তাআলা সফলকাম মুমিনের পরিচয়ে  সূরা মুমিনের (৫-৬) নং আয়াতে বলেন-
وَالَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَافِظُونَ (৫) إِلَّا عَلَى أَزْوَاجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ (৬)
 
(তরজামা) এবং যারা নিজেদেও যৌনাঙ্গকে সংযত রাখে। তবে তাদের স্ত্রী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে সংযত না রাখলে তারা তিরস্কৃত হবে না।

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
(০১)
হ্যাঁ, তখনও তাদের মধ্যে বিবাহ জায়েজ।

(০২)
তারা যিনা করার পরও এখন পারিবারিকভাবে বিয়ে করতে পারবে।

(০৩)
ছেলে বিয়েতে রাজী না হলে সেটি তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার।
কেননা এক্ষেত্রে সেই মেয়েকেই বিবাহ করতে হবে,এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

তবে যেহেতু সেই নারীকে বিবাহ না করলে সেই নারীর হক নষ্ট করা হবে,তাই তাকেই বিবাহ করাই উচিত। 

(০৪)
হ্যাঁ, ছেলে তওবা করে অন্য কোথাও বিয়ে করতে পারবে।

আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে ইরশাদ করেন-
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا (১৭)

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভুলবশত মন্দ কাজ করে অত:পর অনতিবিলম্বে তওবা করে এরাই সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী রহস্যবিদ।  (সূরা নিসা-১৭)

হযরত আনাস রা. বর্ণনা করেছেন যে,

سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول قال الله يا ابن آدم إنك ما دعوتني ورجوتني غفرت لك على ما كان فيك ولا أبالي يا ابن آدم لو بلغت ذنوبك عنان السماء ثم استغفرتني غفرت لك ولا أبالي يا ابن آدم إنك لو أتيتني بقراب الأرض خطايا ثم لقيتني لا تشرك بي شيئا لأتيك بقرابها مغفرة

আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়ামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেন- হে আদম-সন্তান, যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি আমার নিকট দোআ করতে থাকবে এবং আমার নিকট আশা করতে থাকবে তোমার যত গুণাহই হোক না কেন, আমি তা মাফ করে দিব এবং আমি কারো পরোয়া করি না। হে আদম-সন্তান, তোমার গুণাহ যদি আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত পৌছে যায়, অতঃপর         তুমি আমার নিকট ক্ষমা চাও , তবে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিব। এবং আমি কারো পরোয়া করি না। হে আদম-সন্তান, তুমি যদি আমার নিকট এই পরিমাণ গুণাহ নিয়ে হাযির হও যা দ্বারা  সমস্ত পৃথিবী ভরে যায়, কিন্তু তুমি আমার নিকট এই অবস্থায় আস যে, কউকেই আমার সাথে শরীক করো নাই, তবে আমি তোমাকে এই পরিমাণ ক্ষমা দান করব যা দ্বারা  সমস্ত পৃথিবী ভরে যায়।  (তিরমিযী শরীফ- হাদীস নং ৩৫৪০)

হযরত আয়শা রা. থেকে বর্ণিত এক হাদীসে রাসূল সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন –
إن العبد إذا اعترف ثم تاب تاب الله عليه

বান্দা নিজ কৃত গুনাহের কথা স্বীকার করে যদি তওবা করে তাহলে আল্লাহও তার তওবা কবুল করেন।  (বুখারী ও মুসলিম)

তওবার শর্ত সমূহ জানুনঃ- 

(০৫)
এক্ষেত্রে ছেলের জন্য উচিত হবে সেই মেয়েকেই বিবাহ করা। 
কেননা তার হক নষ্ট হয়েছে।
তাই বিবাহ করলে হক আদায় হবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...